Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
PM Narendra Modi meets Team India

ক্যামেরা-সহ ভারতীয় দলের সাজঘরে কেন মোদী? প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা, কী রয়েছে আইসিসির বিধিতে?

বিশ্বকাপ ফাইনালের পরে ক্যামেরা-সহ ভারতীয় দলের সাজঘরে দেখা গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। তিনি কি নিয়ম ভেঙেছেন? এই ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।

odi world cup

ভারতীয় দলের সাজঘরে রোহিত শর্মা (বাঁ দিকে) ও বিরাট কোহলির (ডান দিকে) সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী। রয়েছেন অমিত শাহও। ছবি: পিটিআই

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৩ ২০:০১
Share: Save:

কিছু ক্ষণ আগেই বিশ্বকাপ ফাইনাল হেরেছে ভারত। টানা ১০ ম্যাচ জিতে দেশের মাটিতে ফাইনালে হেরে বিধ্বস্ত ভারতীয় ক্রিকেটারেরা বসে রয়েছেন সাজঘরে। হঠাৎ সেখানে গেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুধু গেলেনই না, ভারতীয় ক্রিকেটারদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করলেন। তাঁদের জড়িয়ে ধরলেন। দিল্লিতে নিমন্ত্রণও জানালেন বিরাটদের। এ ভাবে ভারতের সাজঘরে ঢুকে কি আইসিসি-র নিয়ম ভেঙেছেন প্রধানমন্ত্রী? অন্তত তেমনটাই অভিযোগ করেছেন কীর্তি আজাদ। ভারতের ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটারের আর একটি পরিচয়ও রয়েছে। তিন বারের সাংসদ কীর্তি বিজেপি, কংগ্রেস হয়ে এখন তৃণমূলে।

নিজের এক্স হ্যান্ডলে কীর্তি লিখেছেন, ‘‘যে কোনও দলের কাছে সাজঘর সব থেকে পবিত্র জায়গা। সেখানে ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফ ছাড়া কাউকে ঢোকার অনুমতি দেয় না আইসিসি। প্রধানমন্ত্রীর উচিত ছিল সাজঘরের বাইরে ক্রিকেটারদের সঙ্গে দেখা করা।’’ কীর্তি জানিয়েছেন, এক জন রাজনৈতিক নেতা হিসাবে নয়, ক্রীড়াবিদ হিসাবে এই প্রশ্ন তুলছেন তিনি। কীর্তি আরও লিখেছেন, ‘‘মোদী কি দলের সমর্থকদের অনুমতি দেবেন তাঁর শোয়ার ঘর, বসার ঘর বা শৌচালয়ে গিয়ে দেখা করার? রাজনীতিবিদদের থেকে ক্রীড়াবিদেরা অনেক বেশি নিয়ম মেনে চলেন।’’ শেষে মোদীকে ‘অপয়া’ বলেও উল্লেখ করেছেন আজাদ। মোদীর নামাঙ্কিত স্টেডিয়ামে তাঁর সামনে বিশ্বকাপ ফাইনাল হারায় সমাজমাধ্যমেও এই ধরনের বিদ্রুপ করা হচ্ছে মোদীকে নিয়ে।

এখন প্রশ্ন, কীর্তি যে অভিযোগ তুলেছেন তা কি যথাযথ? সত্যিই কি ক্যামেরাম্যান-সহ ভারতীয় দলের সাজঘরে গিয়ে নিয়ম ভেঙেছেন মোদী? সাধারণত, দলের ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফ ছাড়া সাজঘরে কেউ ঢোকেন না। বিভিন্ন দলের সাজঘরের অন্দরের যে ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে বার হয় তা সেই ক্রিকেট বোর্ডের নির্দেশে হয়। বাইরের কেউ গিয়ে সেখানে ছবি বা ভিডিয়ো তোলেন না।

তবে আইসিসি-র বিধিতে এই বিষয়ে কোনও সুস্পষ্ট নিয়ম লেখা নেই। দলের বাইরের কেউ সাজঘরে গেলে কোনও পদক্ষেপ করা হবে কি না সে বিষয়েও কিছু লেখা নেই। হতে পারে প্রধানমন্ত্রী বলেই আলাদা করে তাঁকে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। দেশ হেরে যাওয়ার পরে ক্রিকেটারদের উজ্জীবিত করার জন্য সাজঘরে গিয়েছিলেন মোদী। সেই কারণেই হয়তো তাঁকে কেউ নিষেধ করেননি। মোদীর ভিডিয়ো প্রকাশ হওয়ার পরে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বা আইসিসিও কিছু বলেনি। তার থেকে মনে করা হচ্ছে, বিসিসিআই ও আইসিসির এই ঘটনায় কিছু বলার নেই।

ক্রিকেটে গড়াপেটার ছায়া পড়ার পর থেকে সাজঘরের নিরাপত্তা কড়া করেছে আইসিসি। ভারতীয় ক্রিকেটারদের দেখা যায়, কোনও স্টেডিয়ামে পা রাখার পরে প্রথমেই মোবাইল ফোন দিয়ে দিতে হয় ক্রিকেটারদের। খেলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফোন জমা দেওয়া থাকে। প্রধানমন্ত্রী বলেই হয়তো তাঁকে সাজঘরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

চলতি বিশ্বকাপে মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ভারত-নিউ জ়িল্যান্ড ম্যাচ শেষে যুজবেন্দ্র চহালকে দেখা গিয়েছিল ভারতীয় সাজঘরে ঢুকতে। সেখানে গিয়ে ক্রিকেটারদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি। ভারতের আর এক ক্রিকেটার হার্দিক পাণ্ড্যও সে দিন স্টেডিয়ামে ছিলেন। তিনি কিন্তু সাজঘরে ঢোকেননি। চহাল সাজঘরে ঢোকাতেও অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কিন্তু আইসিসির বিধিতে স্পষ্ট করে এই নিয়ে কিছু লেখা না থাকায় হয়তো সে ক্ষেত্রেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি চহালের বিরুদ্ধে।

বিশ্বকাপ ফাইনালে আরও একটি ঘটনা ঘটেছে যা এর আগে কোনও বিশ্বকাপে দেখা যায়নি। যে দল চ্যাম্পিয়ন হয় সেই দলের হাতে সাধারণত ট্রফি তুলে দেন আইসিসির চেয়ারম্যান। কিন্তু রবিবার দেখা গিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী রিচার্ড মার্লেসের সঙ্গে মোদীই ট্রফি তুলে দিচ্ছেন প্যাট কামিন্সের হাতে। এ ক্ষেত্রেও কি নিয়ম ভাঙা হয়েছে? প্রশ্ন উঠছে, ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থার প্রধানের জায়গায় কোনও দেশের প্রধানমন্ত্রী কি এ ভাবে ট্রফি তুলে দিতে পারেন!

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy