তারকা: মুরলী ও ভেত্তোরি। বৃহস্পতিবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
তিনি বেঁচে থাকলে হয়তো ইডেনে লেজেন্ডস লিগের ম্যাচে বল হাতে নামতে দেখা যেত। দুই প্রান্ত থেকে দুই স্পিন কিংবদন্তিকে বল করতে দেখার একটা সুযোগ হয়তো পেতেন ক্রিকেটভক্তেরা। কিন্তু শেন ওয়ার্ন ও মুথাইয়া মুরলীধরনকে একই দলের হয়ে বল করতে দেখার স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল ক্রিকেটভক্তদের। ৪ মার্চ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন শেন ওয়ার্ন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো অমলিন হয়ে রয়ে গিয়েছে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ও সতীর্থদের স্মৃতিতে।
লেজেন্ডস লিগের সূচনার আগের দিন, বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে মুরলীর মুখেও শোনা গেল ওয়ার্ন-বন্দনা। টেস্টে অস্ট্রেলীয় কিংবদন্তির চেয়ে বেশি উইকেট পাওয়া মুরলীধরনের (৮০০) বলতে দ্বিধা নেই, ওয়ার্ন তাঁর চেয়েও বড় স্পিনার ছিলেন। সাংবাদিকদের মুরলী বলছিলেন, ‘‘ওয়ার্নের অভাব প্রচণ্ড অনুভব করি। আজ ও বেঁচে থাকলে নিশ্চয়ই একসঙ্গে খেলার সুযোগ হত।’’ যোগ করেন, ‘‘আমাদের মধ্যে কখনও তুলনা করতে চাই না। আমি মনে করি, ওয়ার্ন আমার চেয়ে ভাল স্পিনার ছিল। ওর কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। যে কোনও পিচে বল ঘোরাতে পারত। ওয়ার্নের মতো ব্যক্তিত্বকে এত দ্রুত হারাতে হবে ভাবতে পারিনি।’’
যখন খেলতেন, তখন মুরলী-ওয়ার্নের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে বড় আকর্ষণ ছিল। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীর অকাল মৃত্যু রীতিমতো ক্ষত তৈরি করে দিয়ে গিয়েছে মুরলীর মনেও। ভারাক্রান্ত মন হাল্কা করার চেষ্টাও চলে বৈঠকে। শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন অফস্পিনারের কাছে জানতে চাওয়া হয় ভারতীয় স্পিন বিভাগের বৈচিত্রের বিষয়ে। অস্ট্রেলিয়ায় আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আর অশ্বিন, অক্ষর পটেল ও যুজ়বেন্দ্র চহালকে নিয়ে যাচ্ছে ভারত। অর্থাৎ, অফস্পিনার, বাঁ-হাতি স্পিনার এবং লেগস্পিনার। অস্ট্রেলিয়ার গতিময় পিচে কি তাঁরা নিজেদের মেলে ধরতে পারবেন? মুরলীর উত্তর, ‘‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বোলারের লেংথটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। যে স্পিনার ভাল জায়গায় বল রাখতে পারবে, সে-ই সফল হবে। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বল সে রকম ঘুরবে না। রান আটকানোর চেষ্টা করতে হবে সকলকে। তবে ভারতের স্পিন বিভাগে যথেষ্ট বৈচিত্র আছে। ঠিক সামলে নেবে।’’
নিউজ়িল্যান্ডের প্রাক্তন তারকা স্পিনার ড্যানিয়েল ভেত্তোরি মনে করছেন, অশ্বিনের বৈচিত্র অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে ভারতের। তিনি বলেছেন, ‘‘টেস্টে অশ্বিনের পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনও জায়গা নেই। এ বার আইপিএলেও ভাল বল করেছে। ওকে রেখে যে বিশ্বকাপ দল গড়া হবে, সেটাই স্বাভাবিক।’’ যোগ করেছেন, ‘‘যে কোনও পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিতে পারে অশ্বিন। এটাই একজন ভাল স্পিনারের গুণ। ওর হাতে প্রচুর বৈচিত্র। যা ভারতের অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে। অশ্বিন অনেক বার অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে খেলেছে। আশা করি, ওর মানিয়ে নিতে অসুবিধে হবে না।’’
ভেত্তোরি ও মুরলী একটি বিষয়ে ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। মুরলী মনে করছেন, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বেশি সাফল্য পাবেন রিস্টস্পিনাররা। কিন্তু ভেত্তোরি মনে করেন ফিঙ্গার স্পিনাররা অস্ট্রেলিয়ার পিচে বেশি বাউন্স আদায় করতে পারবেন। তাতেই আসবে সাফল্য। মুরলীর কথায়, ‘‘চহাল, রবি বিষ্ণোইয়ের (স্ট্যান্ডবাই) মতো বোলারদের সফল হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।’’ কিন্তু ভেত্তোরি বলছিলেন, ‘‘আঙুলের সাহায্যে যাঁরা স্পিন করায়, তারা উইকেট থেকে অনেক বেশি সাহায্য পাবে। অফস্পিনারদের সফল হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।’’
সদ্য এশিয়া সেরা শ্রীলঙ্কাকে নিয়েও স্বপ্ন দেখছেন মুরলী। বলছিলেন, ‘‘তরুণদের নিয়ে দল গড়া হয়েছে। শেষ দু’বছর ধরে আমরা তৈরি হচ্ছি। তারই ফল পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আমাদের যোগ্যতা অর্জন পর্বেও খেলতে হবে। সেটাই ক্রিকেটারদের ক্লান্ত করে দিতে পারে।’’টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের জেতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না প্রাক্তন ভারতীয় পেসার এস শ্রীসন্ত। তিনি বলছিলেন, ‘‘২০০৭ সালে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে আমরা হেরে ফিরেছিলাম। সেই বছরেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছি। এ বার ভারত এশিয়া কাপে বড় ধাক্কা খেয়েছে। যদি মাথা থেকে এই ব্যর্থতা মুছে ফেলতে পারে, তা হলে বিশ্বকাপ জেতা অসম্ভব নয়। ভারত খুবই ভাল দল। চ্যাম্পিয়ন হতেই পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy