গৌতম গম্ভীর। —ফাইল চিত্র।
বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির পর ভারতীয় দলের ক্রিকেটারদের একাধিক নিয়মে বাঁধতে চাইছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। বিদেশ সফরে এখন থেকে ব্যক্তিগত কর্মী বা সহকারীদের নিয়ে যেতে পারবেন না বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মারা। অস্ট্রেলিয়া সফরে কয়েক জন ক্রিকেটারের আচরণে বিরক্ত গৌতম গম্ভীর কড়া রিপোর্ট দিয়েছেন বোর্ডকে। তার পরই ১০ দফা নির্দেশিকা বা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বিসিসিআই।
ভারতীয় দলের শৃঙ্খলা এবং একতা বজায় রাখতে ক্রিকেটারদের একাধিক নির্দেশ দিয়েছে বিসিসিআই। বিদেশ সফরে স্ত্রী, সন্তানদের উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত ম্যানেজার, নিরাপত্তারক্ষী, রাঁধুনি বা সহকারীদের নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কেন এমন কড়া সিদ্ধান্ত? একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্রিকেটারদের আচরণ নিয়ে বোর্ডকে কড়া রিপোর্ট দিয়েছেন কোচ গম্ভীর। তাঁর বক্তব্য, কিছু ক্রিকেটারের জন্য দলের শৃঙ্খলা এবং একতা নষ্ট হচ্ছে। কী আছে গম্ভীরের রিপোর্টে? বিসিসিআই সূত্রে খবর, দলের এক উইকেটরক্ষক-ব্যাটার অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিলেন ব্যক্তিগত রাঁধুনিকে নিয়ে। এক তারকা ব্যাটার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী এবং সন্তানদের জন্য আয়া নিয়ে গিয়েছিলেন। একাধিক ক্রিকেটার অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিলেন ব্যক্তিগত সহকারীকে নিয়ে। এ সব দেখে অসন্তুষ্ট গম্ভীর। ভারতীয় দলের মধ্যে তৈরি হওয়া এই তারকা সংস্কৃতি বন্ধ করতে চান কোচ। বোর্ডকে দেওয়া রিপোর্টে গম্ভীর বলেছেন, কিছু ক্রিকেটারের আচরণ দলে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করছে। তাঁরা বাকিদের সঙ্গে একটা দূরত্ব তৈরি করে রাখছেন। কোনও ক্রিকেটারকে বাড়তি সুবিধা দিতে নারাজ তিনি। বোর্ডকে অবিলম্বে এ সব বন্ধ করতে অনুরোধ করেন ভারতীয় দলের কোচ।
গম্ভীরের তির মূলত ঋষভ পন্থ এবং বিরাট কোহলির দিকে। গাড়ি দুর্ঘটনার পর থেকে ব্যক্তিগত রাঁধুনি সঙ্গে রাখেন পন্থ। একাধিক সাক্ষাৎকারে এ কথা পন্থ জানিয়েছেনও। ব্যক্তিগত রাঁধুনি নিয়ে যান হার্দিক পাণ্ড্যও। তবে তিনি অস্ট্রেলিয়া সফরের দলে ছিলেন না। তাই সহজেই অনুমান করা যায় পন্থের রাঁধুনিকে দলের কাছাকাছি দেখে বিরক্ত হন গম্ভীর। অস্ট্রেলিয়া পরিবার নিয়ে গিয়েছিলেন তিন জন ক্রিকেটার। বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুল এবং জসপ্রীত বুমরাহ। এই তিন জনের মধ্যে ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী রয়েছে কোহলির। কারণ তাঁর স্ত্রী বলিউড অভিনেত্রী অনুষ্কা শর্মা। তাঁদের দুই সন্তানের দেখভালের জন্য সঙ্গে আয়া থকেন। এ থেকেই বোঝা যায় কোহলির নিরাপত্তারক্ষী, আয়াদের উপস্থিতি ভাল ভাবে নেননি ভারতীয় দলের কোচ।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারই ক্রিকেটারদের জন্য ১০টি নির্দেশিকা বা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বোর্ড। তার দ্বিতীয় পয়েন্টে বলা হয়েছে, সমস্ত ক্রিকেটারকে দলের সঙ্গে থাকতে হবে। ম্যাচ এবং অনুশীলন সব ক্ষেত্রেই তাঁকে দলের সঙ্গে যেতে হবে। পরিবারের সঙ্গে আলাদা ভাবে যাতায়াত করা যাবে না। পরিবারের সঙ্গে যাতায়াত করতে হলে কোচ অথবা নির্বাচক কমিটির প্রধানের অনুমতি নিতে হবে। চতুর্থ পয়েন্টে বলা হয়েছে, এখন থেকে ক্রিকেটারেরা আর নিজেদের ম্যানেজার, সহকারী, নিরাপত্তারক্ষী, রাঁধুনি নিয়ে যেতে পারবেন না। বোর্ডের অনুমতি নিতে হবে এমন কাউকে নিয়ে যেতে হলে। ক্রিকেটারেরা যাতে শুধু খেলার দিকেই মন দেন, সেই কারণে এমন সিদ্ধান্ত।
নির্দেশিকার সপ্তম পয়েন্টে বলা হয়েছে, ক্রিকেট সফরের মাঝে বিজ্ঞাপনের কাজ করা যাবে না। কোনও শুট বা বিজ্ঞাপনের কোনও কাজ আর সফরের মাঝে করতে পারবেন না ক্রিকেটারেরা। খেলা থেকে মনঃসংযোগ যাতে সরে না যায়, সেই কারণে এমন সিদ্ধান্ত।
অষ্টম পয়েন্টে বলা হয়েছে, ৪৫ দিনের বিদেশ সফরে ক্রিকেটারদের সঙ্গে দু’সপ্তাহের বেশি সময় থাকতে পারবেন না তাঁদের স্ত্রীরা। ক্রিকেটারদের সঙ্গী এবং সন্তানদের (১৮ বছরের নীচে) এক বারের জন্যই আসতে দেওয়া হবে। এলেও দু’সপ্তাহের বেশি থাকতে পারবেন না। এই সময়ের সব খরচ বোর্ড দেবে। যদি কোনও কারণে কেউ বেশি দিন থাকেন, তা হলে সেই খরচ ক্রিকেটারকে দিতে হবে। কোচ, অধিনায়ক এবং ম্যানেজারদের ঠিক করে দেওয়া দিনেই শুধুমাত্র পরিবারের লোকজন আসতে পারবেন। ব্যতিক্রম হলে আগে থেকে জানাতে হবে। ক্রিকেটারদের পরিবার বাদ দিয়ে অন্য কাউকে তাঁদের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেবে না বোর্ড।
শেষে দশম পয়েন্টে বলা হয়েছে, ম্যাচ আগে শেষ হয়ে গেলেও ক্রিকেটারদের থাকতে হবে। যত দিন না সফর শেষ হচ্ছে, তত দিন ক্রিকেটারদের থাকতে হবে। আগে চলে আসা যাবে না। দল কাউকে বাড়তি সুবিধা দিতে রাজি নয়। সেই কারণেই এমন সিদ্ধান্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy