বয়সের ভারে ব্যাট হাতে ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা যে কমেছে, আগেই বোঝা গিয়েছে। বুদ্ধির ধারও কি কমেছে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির?
দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ (২০০৭), এক দিনের বিশ্বকাপ (২০১১) এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (২০১৩) জেতা অধিনায়কের একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ৪৩ বছর বয়সি অধিনায়কের অবসর কি সময়ের অপেক্ষা? একটা সময় বলা হত, পিচ দেখে তিনি বলে দিতে পারতেন কত রান উঠবে। যে কারণে দল প্রথমে ব্যাট করলেও একটা রানের লক্ষ্য বেঁধে দিতেন ধোনি। ভারতের অন্যতম সফল অধিনায়কের পিচ বোঝার ক্ষমতা ছিল অসাধারণ। সেই ক্ষমতাই কি এখন হারিয়েছেন তিনি?
শনিবার কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে ৫৯ বল বাকি থাকতে ৮ উইকেটে হেরেছে চেন্নাই সুপার কিংস। শুধু বিনা লড়াইয়ে উড়ে যাওয়া নয়, অধিনায়ক ধোনির তিনটি ভুল তুলে দিচ্ছে অনেক প্রশ্ন।
আরও পড়ুন:
ভুল ১
শুক্রবার চেন্নাই সুপার কিংসের ব্যাটিং বিভাগে ধস নামিয়ে দেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের স্পিনারেরা। সুনীল নারাইন, বরুণ চক্রবর্তী এবং মইন আলি মিলে ছ’টি উইকেট তুলে নেন। কলকাতা থেকে চিপকে খেলতে যাওয়া একটা দল নতুন বল তুলে দিয়েছিল স্পিনার মইনের হাতে। কিন্তু নিজেদের মাঠে খেলতে নেমে চেন্নাই ভরসা রাখল পেসারদের উপর। বাঁহাতি পেসার খলিল আহমেদ ৩ ওভারে ৪০ রান দিয়েছেন। কিন্তু তাঁকে দিয়ে বল করিয়েই গিয়েছেন ধোনি। রান দিয়েই গিয়েছেন খলিল।
ভুল ২
এ বারের আইপিএলে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছেন নুর আহমেদ। আফগানিস্তানের স্পিনার ৬ ম্যাচে ১২টি উইকেট নিয়েছেন। কিন্তু সেই বোলারকে ধোনি নিয়ে এলেন অষ্টম ওভারে। তত ক্ষণে কলকাতা ৮৫ রান তুলে নিয়েছে। জয়ের জন্য তখন আর মাত্র ১৯ রান বাকি। সেই সময় নুর বল করছেন, নাকি ধোনি নিজে বল করছেন, তাতে কী আর এসে যায়। একসময় ধোনির নেতৃত্বে খেলেছেন মনোজ তিওয়ারি। খুব ভাল করে চেনেন তাঁকে। মনোজ বলেন, “বেগনি টুপির অধিকারী নুর আহমেদ দলে রয়েছে। তাকে অষ্টম ওভারে বল করতে আনা হল। প্রথম বলেই নারাইনের উইকেট তুলে নেয় নুর। ক্রিকেট বোধ বলছে, যদি বিপক্ষের স্পিনারেরা ভাল খেলে আর আমার দলে যদি বেগনি টুপির মালিক একজন স্পিনার থাকে, তা হলে আমি তাকে কেন আগে আনব না? ধোনি সাধারণত এমন ভুল করে না। এত বছরে কখনও করতে দেখিনি। শুক্রবার কেন এমন দেখলাম জানার ইচ্ছা রইল।”
ভুল ৩
ধোনি উইকেটের পিছনে থাকলে সুবিধা হয়, এমনটা বার বার জানিয়েছেন স্পিনারেরা। কিন্তু শুক্রবার একের পর এক ভুল করলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। কিন্তু তাঁকে শুধরে দিলেন না ধোনি। সাধারণত বাঁহাতি ব্যাটারদের ‘রাউন্ড দ্য উইকেট’ বল করেন অশ্বিন। সাফল্যও পেয়েছেন। কিন্তু শুক্রবার দুই বাঁহাতি ওপেনার নারাইন এবং কুইন্টন ডি’ককের বিরুদ্ধে দেখা গেল ‘ওভার দ্য উইকেট’ বল করছেন। ধোনি উইকেটের পিছন থেকে দেখলেন, কিন্তু কিছু বললেন না। অধিনায়ক ধোনির কি বুদ্ধিভ্রম হয়েছে?

শেষ বার ধোনিকে নেতৃত্ব দেখা গিয়েছিল আইপিএলেই। ২০২৩ সালের ২৯ মে চেন্নাই সুপার কিংসকে আইপিএল ফাইনালে জিতিয়েছিলেন ধোনি। ৬৮২ দিন পর আবার সেই দলকে শুক্রবার নেতৃত্ব দিলেন তিনি। মাঝে রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের নেতৃত্বে শুধু আইপিএলেই খেলেছেন। এক সময় ধোনিকে দেশের সেরা ফিনিশার বলা হত। কিন্তু যত বয়স বেড়েছে, তত সেই ক্ষমতা কমেছে। সেটাই স্বাভাবিক। তাঁর হাঁটুতে চোট। কোমরে ব্যথা। সেই সব নিয়ে ব্যাট করা খুব সহজ নয়। ধোনি যে পারছেন না সেটা দেখা যাচ্ছে। ব্যাটিং অর্ডারে নীচের দিকে নামছেন। উপর দিকে নামলেও ম্যাচ জিতিয়ে ফিরতে পারছেন না। ফিনিশার ধোনির ব্যর্থতা বার বার দেখা যাচ্ছে। গত আইপিএলেও প্রশ্ন উঠেছিল, এ বারেও উঠেছে। কিন্তু অধিনায়ক ধোনির ধার কমে গেল?
ভারত এবং চেন্নাইয়ের জার্সিতে বহু ম্যাচ অধিনায়ক ধোনি জিতিয়ে দিয়েছেন শুধু বুদ্ধির জোরে। তাঁর একটা বদল ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। উদাহরণ, ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালের শেষ ওভারে। যোগিন্দর শর্মার সেই ওভার ট্রফি জেতায় ভারতকে। সেই শুরু। এর পর তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কেরিয়ারের ১২ বছরে বহু বার কঠিন ম্যাচের রং বদলে দিয়েছেন অধিনায়ক ধোনি। অধিনায়ক বিরাট কোহলি শুরুর দিকে উইকেটরক্ষক ধোনিকে পাশে পেয়েছিলেন। যা তাঁকে বহু বার সাহায্য করেছে। কিন্তু সেই ভরসার কাঁধটা কি এ বার ঝুঁকছে?
ভবিষ্যতের অধিনায়ক হিসাবে রুতুরাজকে ভেবেছে চেন্নাই। তিনি গত বছর দলকে নেতৃত্বও দিয়েছেন। ধোনি উইকেটের পিছনে রয়েছেন, সেটা তাঁর কাছে ছিল সবচেয়ে বড় ভরসার। এমনকি রুতুরাজের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেওয়ার আগে ধোনি বিভিন্ন সময় তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁকে শিখিয়েছেন নেতৃত্ব দেওয়ার সময় কোন কোন জিনিস মাথায় রাখতে হয়। কিন্তু সেই রুতুরাজ চোট পেয়ে পুরো মরসুম থেকে বাদ পড়ায় আবার ধোনির কাছে ফিরে যায় চেন্নাইয়ের নেতৃত্ব। ভুল করলেন চেন্নাই কর্তৃপক্ষ?
- ১৮ বছরের খরা কাটিয়ে ট্রফি জিতেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। প্রথম বার আইপিএল জেতার স্বাদ পেয়েছেন বিরাট কোহলি। ফাইনালে পঞ্জাব কিংসকে ছ’রানে হারিয়েছে বেঙ্গালুরু।
- ট্রফি জেতার পরের দিনই বেঙ্গালুরুতে ফেরেন বিরাট কোহলিরা। প্রিয় দলকে দেখার জন্য প্রচুর সমর্থক জড়ো হয়েছিলেন চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে। সেখানে হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১১ জনের। আহত ৫০-এরও বেশি। ঘটনাকে ঘিরে দায় ঠেলাঠেলি শুরু হয়েছে।
-
১১ মৃত্যুর জের, আইপিএল জয়ের উৎসবে কী কী করা যাবে না, শনিবার ঠিক করবে বোর্ড, আর কী কী নিয়ে আলোচনা?
-
‘লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড় হবে’! বেঙ্গালুরুতে কোহলিদের উৎসবের আগে সতর্ক করেছিল পুলিশই, তবু কেন এড়ানো গেল না দুর্ঘটনা
-
আইপিএলের শেষ পর্বে ছিলেন না, ভারত-পাক সংঘাত, না কি ‘বিশেষ’ কারণে খেলতে আসেননি স্টার্ক?
-
‘ভিড়ের চাপে স্ত্রীয়ের হাত ছুটে যায়’, পদপিষ্টে প্রিয়জন হারিয়ে কথা বলার ভাষা নেই পরিবারের
-
অফিসে খোলা পড়ে ল্যাপটপ, আরসিবি-র অনুষ্ঠান দেখেই ফিরবেন বলেছিলেন, ফিরে এল তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী কামাক্ষীর দেহ