এশিয়া কাপে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক শাকিব। —ফাইল চিত্র
ফের বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে মুখ খুললেন কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো। এ বার তাঁর অভিযোগের তির শাকিব আল হাসানদের মতো দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের দিকে। তিন বছর ধরে বাংলাদেশ দলের দায়িত্বে ডোমিঙ্গো। তিনি প্রথম যখন এসেছিলেন, সেই সময়ের সাজঘরের পরিবেশ নিয়ে অভিযোগ করেছেন কোচ।
২০১৯ সালে বাংলাদেশের কোচ হন ডোমিঙ্গো। এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই সময়ের পরিস্থিতি নিয়ে কারওর নাম না নিয়েই বাংলাদেশের কোচ বলেন, “তরুণ ক্রিকেটারদের দাবিয়ে রাখত সিনিয়ররা। আমি যখন এসেছিলাম, তখন দলে ছিল অভিজ্ঞদের দাপট। তরুণদের দমিয়ে রাখা হত। আমার কাছে দলে সকলেই গুরুত্বপূর্ণ। শুধু ক্রিকেটার নয়, সহকারী কোচ, ফিজিয়োও গুরুত্বপূর্ণ। আমি সকলকে গুরুত্ব দিয়েছি। নিজের পারফরম্যান্সের দায় নিতে বলেছি। এখন সকলে দলের বৈঠকে কথা বলতে পারে। নিজেদের মতামত ভাগ করে নেয়।”
ডোমিঙ্গো জানিয়েছেন, তিনি চান না মুশফিকুর রহিম টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলুক। মাঝে কয়েক মাস টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে দূরে ছিলেন মুশফিকুর। এশিয়া কাপের দলে নেওয়া হয়েছে তাঁকে। ডোমিঙ্গো বলেন, “আমি চাইনি মুশফিকুর টি-টোয়েন্টি খেলতে গিয়ে টেস্ট এবং এক দিনের ক্রিকেটের ব্যাটিং নষ্ট করুক। সিনিয়রদের সঙ্গে এমন ঘটতে দেখেছি। হাশিম আমলার হয়েছে। ওর সঙ্গে সাত বছর কাজ করেছি। টি-টোয়েন্টি খেলার জন্য পাগল হয়ে গিয়েছিল ও। সেই কারণে কেরিয়ার শেষে টেস্ট গড় ৫৫ থেকে ৪৫-এ নেমে যায়। মুশফিকুরের সঙ্গে যাতে এমন না হয়, সেই কারণেই সতর্ক ছিলাম। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণ করতে গিয়ে ও যেন টেস্ট এবং এক দিনের ক্রিকেটে নিজের ব্যাটিংটা হারিয়ে না ফেলে।”
বাংলাদেশ দলের একাধিক অধিনায়ককে নিয়েও মুখ খুলেছেন ডোমিঙ্গো। তিনি বলেন, “আমার চোখে মাহমুদুল্লাহ দারুণ অধিনায়ক। কঠিন সময়ে দারুণ কাজ করেছে। ওর ব্যাটিং নিয়ে সমালোচনা হয়। কিন্তু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মাহমুদুল্লাহর ব্যাটিংয়ের উপর আমার বিশ্বাস আছে। ওর থেকে নেতৃত্ব কেড়ে নেওয়ায় আমি অবাক হয়েছি। খারাপ লেগেছে। আমি জানি, ও আরও একটা বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দিতে চেয়েছিল।”
মাহমুদুল্লাহর উপর ডোমিঙ্গো বিশ্বাস দেখালেও মোমিনুল হককে নিয়ে অন্য রকম মত তাঁর। ডোমিঙ্গো বলেন, “আমার মনে হয় না মোমিনুল নেতৃত্ব দেওয়াটা উপভোগ করে। আমি উৎসাহ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ও হয়তো আমার উপর রাগও করত। আবার মজা করে আমাকে বলত, ‘তোমার জন্য আমার জীবনটা কঠিন হয়ে গেল।’ আমি চেয়েছিলাম ও অধিনায়ক হিসাবে নিজেকে তৈরি করুক। ওর দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়াটা আমাকে হতাশ করেছে। মোমিনুলের নেতৃত্বে আমরা অনেক ম্যাচ হেরেছি, কিন্তু জয়ের সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। জয়ের খুব কাছে গিয়েও হেরেছি। টেস্ট দল ওর নেতৃত্বে উন্নতি করেছে। সেটার ফল হয়তো দেখা যায় না, কিন্তু উন্নতি হয়েছে। মোমিনুল চেষ্টা করেছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর থাকতে পারল না।”
এশিয়া কাপে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক শাকিব। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত তাঁকেই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নেতৃত্বের ভার দেওয়া হয়েছে। তাঁর সম্পর্কে ডোমিঙ্গো বলেন, “শাকিবকে টেস্ট দলে ফিরে পাওয়াটা দারুণ ব্যাপার। খুব কম টেস্ট খেলেছে ও। মোমিনুলের সময় শাকিবের না থাকাটাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে গিয়েছিল। এখন শাকিব অধিনায়ক হওয়ায়, ওকে পাওয়া যাবে প্রতিটা টেস্টে। এটা দলের জন্য ভাল। আমি শাকিবকে বলি যে, ওর চ্যালেঞ্জটা মাঠে নয়, মাঠের বাইরে। শাকিব ভাল খেলবে সেটা আমি জানি। কিন্তু এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, ও বেশি টেস্ট খেলবে। শাকিব অসাধারণ ক্রিকেটার।”
মাশরাফি মোর্তাজা সম্পর্কে যদিও বলতে চাননি ডোমিঙ্গো। মোর্তাজাকে মাত্র তিনটি ম্যাচে পেয়েছেন বলে তাঁর সম্পর্কে কথা বলতে চাননি বাংলাদেশ কোচ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy