প্রসিদ্ধ কৃষ্ণকে উপদেশ দিচ্ছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ছবি: পিটিআই।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ়কেই সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিল ভারত। সেখানেই দলের সেরা ক্রিকেটারদের খেলানো হচ্ছে। সিরিজ় শুরুর আগে গিয়ে অনুশীলন ম্যাচ খেলেছে ভারত। তার পরেও প্রথম টেস্টে হারতে হয়েছে রোহিত শর্মাদের। কোন কোন কারণে এই হার?
যশস্বী, শুভমনদের ব্যাটিং
ভারতের দুই তরুণ ক্রিকেটার রান করতে পারেননি। শুরুতেই দু’জন ব্যাটার কম রানে আউট হয়ে যাওয়ায় চাপে পড়ে যায় ভারতীয় ব্যাটিং। চেতেশ্বর পুজারার জায়গায় শুভমন গিলকে খেলানো হচ্ছে। ভারতের তিন নম্বর জায়গাটা সামলানোর দায়িত্ব কি এ বার পাকাপাকি ভাবে তাঁর কাঁধেই? এত দিন রোহিতের সঙ্গে ওপেন করতেন শুভমন। এখন যশস্বী জয়সওয়ালকে ওপেনার হিসাবে এনে শুভমনকে তিন নম্বরে পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু সেই নতুন দায়িত্ব নেওয়ার জন্য কতটা তৈরি তিনি? ভারতের আগামী দিনের ব্যাটিং তারকা মনে করা হচ্ছে শুভমনকে। সেই জায়গা নিতে হলে ধারাবাহিকতা দেখাতে হবে তাঁকে। একটা, দুটো চোখ জুড়িয়ে দেওয়া কভার ড্রাইভ নয়, লম্বা ইনিংস খেলার মানসিকতা দেখাতে হবে তাঁকে। অন্য দিকে, তরুণ যশস্বীর সময় প্রয়োজন। তাঁকে দিয়ে ওপেন করানো হচ্ছে। যদিও ঘরোয়া ক্রিকেটে লাল বলে তাঁর থেকে বেশি ধারাবাহিক অভিমন্যু ঈশ্বরন বসে রয়েছেন সাজঘরে। কিন্তু আইপিএলে ভাল খেলার পর টেস্ট দলে সুযোগ পাওয়া যশস্বী বুঝতে পারছেন ঘরের মাঠে খেলা আর বিদেশের মাটিতে সুইং এবং বাউন্স সামলানোর মধ্যে কতটা তফাত।
শামির অভাব
এ বারের টেস্ট সিরিজ়ে নেই মহম্মদ শামি। তাঁর চোট এখনও সারেনি। বিশ্ব ক্রিকেটে এই মুহূর্তে তাঁর মতো সিমের উপর বল ফেলার ক্ষমতা খুব কম বোলারের রয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার পিচে সুইং রয়েছে। সেটা কাজে লাগিয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারতেন শামি। এক প্রান্ত থেকে যে কাজটা এখন যশপ্রীত বুমরা করছেন, উল্টো দিকে শামি থাকলে আক্রমণটা আরও ধারালো হত। বুমরা নিশ্চয়ই তাঁর সঙ্গীর অভাব অনুভব করছেন। ভারতীয় দলও সেটা বুঝতে পারছে।
প্রসিদ্ধ, শার্দূলের বোলিং
শামির অভাব ঢেকে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ এবং শার্দূল ঠাকুরের উপর। কিন্তু তাঁরা চূড়ান্ত ব্যর্থ। দু’জনে মিলে দক্ষিণ আফ্রিকার ৪০৮ রানের মধ্যে প্রায় অর্ধেক দিয়েছেন। শার্দূল ১৯ ওভারে দিয়েছেন ১০১ রান। প্রসিদ্ধ দিয়েছেন ৯৩ রান। তিনি ২০ ওভার বল করেছেন। এই ১৯৪ রানের ধাক্কা সামলানো কঠিন হয়েছে ভারতের পক্ষে। বুমরার ওভারগুলো সামলে দেওয়ার পরেই শার্দূল বা প্রসিদ্ধকে পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারেরা। একের পর এক ভুল লাইন, লেংথে করা বলে বাউন্ডারি মেরেছেন ডিন এলগারেরা।
স্লিপে শুভমনের ফিল্ডিং
ভারতীয় দলের কোচ রাহুল দ্রাবিড়। বিশ্বের অন্যতম সেরা স্লিপ ফিল্ডার বলা হয় তাঁকে। সেই দ্রাবিড় সাজঘরে বসে দেখেছেন স্লিপে শুভমনের ক্যাচ ফেলা। একাধিক বার ক্যাচ ফেলেছেন তিনি। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে ক্যাচ দিয়েছিলেন এলগার। কিন্তু তা ধরার মতো জায়গায় যেতেই পারেননি শুভমন। তিনি সময় মতো নিচুই হতে পারেননি। স্লিপে এই ক্যাচগুলি ধরলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হয়তো আরও কিছু কম রানে আটকে রাখা যেত।
রোহিত শর্মার নেতৃত্ব
দল নির্বাচন থেকে ব্যাটিং অর্ডার, সেই সঙ্গে ফিল্ডিংয়ে আগ্রাসন দেখাতে না পারা, রোহিতের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। ঘরোয়া ক্রিকেটে মুকেশ কুমার লাল বলে প্রসিদ্ধের থেকে ভাল খেলেছেন, তার পরেও তাঁকে বসিয়ে রাখা হল। রঞ্জিতে বাংলার ধারাবাহিক ভাল ফল করার নেপথ্যে রয়েছেন মুকেশ। কিন্তু শামির অবর্তমানে সুযোগ দেওয়া হল প্রসিদ্ধকে। যিনি আইপিএলে সাদা বলের ক্রিকেটে নজর কেড়েছিলেন। সাদা বলের ক্রিকেটে ভাল খেলা ক্রিকেটারদের দিয়ে লাল বলের দল গড়া কতটা ঠিক হচ্ছে তা নিয়ে তো প্রশ্ন উঠবেই। রোহিত অবাক করলেন প্রথম দিনেই যশস্বীকে সঙ্গী করে ওপেন করতে নেমে। ভারতের ওপেনিং জুটি হিসাবে রোহিত এবং শুভমন পরীক্ষিত এবং প্রতিষ্ঠিত। সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার মতো কঠিন সফরে তরুণ যশস্বীকে শুরুতেই নামিয়ে দেওয়া এবং প্রথম বল খেলতে পাঠিয়ে দেওয়া কতটা ঠিক, তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে অধিনায়ককে। ফিল্ডিংয়ের সময়ও ভারত অধিনায়কের কাছ থেকে কোনও প্ল্যান বি পাওয়া যায়নি। মাঠে আগ্রাসনটাই দেখাতে পারেনি ভারত। সেই দায়ও নিতে হবে রোহিতকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy