যুদ্ধে-সামিল: করোনা বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এ বার ঢুকে পড়ল ঐতিহ্যের ইডেনও। গ্যালারির নীচে কয়েকটি অংশে হবে নিভৃতবাসের শিবির। ফাইল চিত্র
ঐতিহ্যের ইডেনের গ্যালারি এ বার পরিণত হচ্ছে কোয়রান্টিন সেন্টারে। ইডেনের হাই কোর্ট প্রান্তের চারটি গ্যালারির নীচে নিভৃতবাসের ব্যবস্থা করা হল পুলিশকর্মীদের জন্য। শুক্রবারই তড়িঘড়ি এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় রাতে। লালবাজারে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন সিএবি প্রেসিডেন্ট অভিষেক ডালমিয়া। সেখানেই অভিষেককে অনুরোধ করা হয়, ইডেনের গ্যালারির কিছুটা অংশে যেন পুলিশকর্মীদের নিভৃতবাসের ব্যবস্থা করা হয়।
প্রথম ভারতীয় স্টেডিয়াম হিসেবে মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়েকে পরিণত করার কথা ছিল কোয়রান্টিন সেন্টার হিসেবে। কিন্তু মহারাষ্ট্র সরকার সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে। বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় আগেই বলে দিয়েছিলেন, প্রয়োজনে ইডেনও দেওয়া হবে নিভৃতবাসের জন্য। শুক্রবার সিএবি জানিয়ে দেয়, ‘ই, এফ, জি ও এইচ’ ব্লকের নীচে নিভৃতবাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে ‘জে’ ব্লকও নিভৃতবাসের জন্য দিয়ে দেওয়া হবে। সিএবি সূত্রে জানানো হয়েছে, যাঁদের কোনও উপসর্গ নেই, অথচ ফল এসেছে পজিটিভ, তাঁদেরই রাখা হবে ইডেনের নিভৃতবাসে। এমনকি তাঁদের পরিবারের সদস্যেরাও হয়তো এই নিভৃতবাসেই থাকবেন।
এ দিন বৈঠকের পরেই কলকাতা পুলিশের প্রতিনিধিরা ইডেন পরিদর্শন করতে আসেন। উপস্থিত ছিলেন সিএবি প্রেসিডেন্ট অভিষেক ডালমিয়া ও সচিব স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ও।
সিএবি-র অফিস ও সংলগ্ন গ্যালারির সঙ্গে কোয়রান্টিন সেন্টারের কোনও যোগাযোগ থাকবে না। একেবারে বিচ্ছিন্ন রাখা হবে ‘বি, সি, ডি, কে ও এল’ ব্লক। কারণ, অফিসের আশেপাশে নিভৃতবাসের ব্যবস্থা করা হলে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা বাড়তে পারে। বন্ধ রাখা হবে সদ্য গড়ে তোলা ইন্ডোর অনুশীলন কেন্দ্রও। প্রেসিডেন্ট অভিষেক ডালমিয়া বলেছেন, ‘‘এই সঙ্কটের সময় সরকার ও পুলিশের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের কর্তব্য। শুধুমাত্র পুলিশ প্রতিনিধি যাঁরা করোনায় আক্রান্ত, তাঁদের জন্যই নিভৃতবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ যোগ করেন, ‘‘ইডেনের চারটি গ্যালারির নীচে কোয়রান্টিন সেন্টারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ই, এফ, জি, এইচ আপাতত খুলে দেওয়া হবে নিভৃতবাসের জন্য। জে ব্লকও দেওয়া হবে কলকাতা পুলিশের প্রয়োজনে। কিন্তু এই কয়েকটি ব্লকের সঙ্গে আমাদের প্রশাসনিক ভবনের কোনও যোগাযোগ থাকবে না। কলকাতা পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, অফিস ও সংলগ্ন গ্যালারির সঙ্গে যেন কোনও রকম যোগাযোগ না থাকে।’’
প্রশ্ন হচ্ছে, তা হলে মাঠকর্মীরা কোথায় যাবেন? ইডেনের গ্যালারির নীচেই তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট অভিষেক ডালমিয়া শুরুতে বলেওছিলেন, ইডেনকে নিভৃতবাস হিসেবে দেওয়া হলে মাঠকর্মীদের থাকার সমস্যা হতে পারে। কিন্তু সে সব নিয়ে আর কোনও সমস্যা হচ্ছে না। মাঠকর্মীদের সরিয়ে আনা হচ্ছে সিএবি-র ডর্মিটরিতে। যেখানে এত দিন রাখা হত ক্রিকেটারদের। সেখানেও যদি পর্যাপ্ত জায়গা না পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে ব্লল ‘বি, কে, সি ও এল’-এর নীচে মাঠকর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করা হবে। অভিষেক বলেন, ‘‘মাঠকর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করতেই হবে। এই নিভৃতবাসের জন্য তাঁদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা দেখা আমাদের কর্তব্য। আপাতত ডর্মিটরি তাঁদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। ক্রিকেটারদের ডাইনিং রুমেও তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। প্রয়োজনে ক্লাব হাউস সংলগ্ন গ্যালারির নীচেও তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করছে সিএবি।’’
আগামী সপ্তাহের মধ্যে কোয়রান্টিন সেন্টার হিসেবে খুলে যাবে ইডেনের হাই কোর্ট প্রান্তের কিছু ব্লক। তবে আক্রান্তদের আলাদা গেট দিয়ে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে। বিশেষত গেট নম্বর ১০ ও ১২ নম্বর দিয়ে প্রবেশ করবেন আক্রান্ত পুলিশকর্মী ও তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। তবে মাঠের সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগাযোগ থাকবে না। বিশেষ সুরক্ষার জন্য নিয়মিত স্যানিটাইজ় করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে সিএবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy