বাল্যবিবাহ রুখতে গিয়ে ‘নিগৃহীত’ হলেন এক আশাকর্মী। অভিযোগ, গ্রামের এক নাবালিকার পরিবার ওই আশাকর্মীকে বাড়ি থেকে টেনেহিঁচড়ে বার করে মারধর করে। খুনের হুমকিও দেওয়া হয়। অভিযোগ, ওই আশাকর্মীকে বাঁচাতে গেলে তাঁর মেয়েকেও অপহরণের হুমকি দেওয়া হয়। বুধবার জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ ব্লকের সন্নাসীকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের পেলকুগছ গ্রামের ঘটনা। রাজগঞ্জ থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন ওই আশাকর্মী। নিরাপত্তারও দাবি জানিয়েছেন তিনি। দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিরা পলাতক।
বাল্যবিবাহ রুখতে প্রশাসন সব স্তরের সরকারি কর্মীদের সতর্ক থাকতে বলেছে। ওই বার্তা রয়েছে আশাকর্মীদের কাছেও। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই গ্রামের এক নাবালিকার বিয়ের আয়োজন করেছিল পরিবার। সেই খবর পান পেলকুগছ-বালবাড়ির আশাকর্মী মালবিকা রায়। তাঁর বাড়ির কাছেই ওই নাবালিকার বাড়ি। সোমবার সন্ধ্যায় মালবিকা ওই কিশোরীর পরিবারকে বিয়ের আয়োজন বন্ধ করতে বলেন। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরেই মেয়ের বিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। অভিযোগ, নাবালিকার পরিবার সেই সময় ওই আশাকর্মীকে গালিগালাজ ও হুমকি দিয়ে চলে যায়।
অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে নাবালিকার পরিবার দলবল নিয়ে আশাকর্মীর বাড়িতে চড়াও হয়। মালবিকাকে ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বার করে রাস্তায় নিয়ে যায়। আরও অভিযোগ, তাঁকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করা হয়। অভিযুক্তরা তাঁর গলা টিপে ধরে মারধর করেন। মালবিকা বলেন, ‘‘আমার গলার রুপোর হার ছিনতাই করা হয়। পড়শিরা ছুটে আসেন। আমার বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া ও খুনের হুমকি দিয়ে অভিযুক্তেরা চলে যায়।’’
সহকারী সরকারি আইনজীবী মৃন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এ দিন পুলিশ মুল অভিযুক্ত দু’জনকে গ্রেফতার করে মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে পেশ করলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। আইসি অনুপম মজুমদার বলেন, ‘‘পলাতক অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’ সদর মহকুমাশাসক তমোজিৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই ধরণের ঘটনা কাম্য নয়। খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)