এসএসসি দফতরের সামনে বুধবার থেকেই অবস্থানে বসেছেন চাকরিহারা শিক্ষকদের কয়েক জন। এ বার সেখানেই লাগাতার অনশন শুরু করতে চলেছেন তাঁরা। জানানো হয়েছে, বুধবার কসবার জেলা স্কুল পরিদর্শকের (ডিআই) অফিসে বিক্ষোভরত চাকরিহারাদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জের প্রতিবাদেই এমন সিদ্ধান্ত। সেই সঙ্গে যোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে বলেও দাবি তাঁদের।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে ২০১৬-র এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের নামের তালিকা এবং ওএমআরের মিরর ইমেজ প্রকাশের দাবিতে এবং কসবায় পুলিশি লাঠিচার্জের প্রতিবাদে এসএসসি দফতরের সামনে অনশনে বসছেন তাঁরা। আপাতত চার শিক্ষক অনশনে বসতে চলেছেন বলে জানা গিয়েছে।
এ বিষয়ে ‘এসএসসি ২০১৬ প্যানেলের বৈধ চাকরিহারা সমাজ’ মঞ্চের তরফে সুমন বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা আগেও বলেছি, আত্মত্যাগের জন্য আমরা প্রস্তুত। তাই আমরা লাগাতার অনশন শুরু করতে চলেছি। আপনারা আসুন, সহযোগিতা করুন।’’ উল্লেখ্য, বুধবার সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে এসএসসি দফতরে গিয়েছিলেন তিনিও।
আরও পড়ুন:
বুধবার প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিতের সঙ্গে এসএসসি দফতরে গিয়েছিলেন চাকরিহারাদের একাংশ। এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের সঙ্গে দেখা করার পর এসএসসিকে ওএমআরের মিরর ইমেজ প্রকাশের জন্য দু’দিন সময় দেন অভিজিৎ। অন্যথায় শনিবার বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। অন্য দিকে, সেখানেই অবস্থানে বসে পড়েন চাকরিহারাদের কয়েক জন। বুধবার রাতে কসবায় স্কুল পরিদর্শকের দফতরের সামনেও বসে থাকতে দেখা যায় কয়েক জনকে। তাঁদের দাবি, মিরর ইমেজ় প্রকাশ না করা পর্যন্ত তাঁরা তাঁদের বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন। বুধবার সকাল থেকে চাকরি ফেরানোর দাবিতে জেলায় জেলায় স্কুল শিক্ষা পরিদর্শক (ডিআই)-এর দফতর অভিযান করেছিলেন চাকরিহারারা। কিছু জেলায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বা ধস্তাধস্তিও হয়। কলকাতায় কসবার ডিআই অফিসে বিক্ষোভকারী শিক্ষক ও পুলিশের সংঘর্ষে দু’পক্ষেরই কয়েক জন আহত হন। পুলিশের বিরুদ্ধে ‘বিনা প্ররোচনায়’ লাঠিচার্জ ও লাথি মারার অভিযোগ ওঠে। এর পরেই কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, ‘‘আক্রান্ত হওয়ার পরই পুলিশ ‘হালকা বলপ্রয়োগ’ করেছে। তবে, লাথি মারার ঘটনা কাম্য নয়।’’ রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থও শিক্ষকদের শান্ত হতে পরামর্শ দিয়ে জানিয়ে দেন, কোনও নাগরিক হাতে আইন তুলে নিলে পুলিশ নীরব থাকতে পারে না। এই ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাজপথে মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে। শিয়ালদহ থেকে রানি রাসমণি পর্যন্ত হবে মিছিল। এ ছাড়া, শুক্রবার এসএসসি অভিযানেরও ডাক দিয়েছেন চাকরিহারারা।
- ২০১৬ সালের এসএসসিতে নিয়োগের পুরো প্যানেল বাতিল করল সুপ্রিম কোর্ট। বলল, পুরো প্রক্রিয়ায় কারচুপি করা হয়েছে। ওই নিয়োগপ্রক্রিয়ার কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।
- এসএসসি-র শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। কলকাতা হাই কোর্ট এই সংক্রান্ত শুনানির পর ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ নিয়োগপ্রক্রিয়াই বাতিল করে দিয়েছিল।
- রাজ্যের ২৬ হাজার চাকরি (আদতে ২৫,৭৫২) বাতিল করে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ জানিয়েছে, তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
-
চাকরি বাতিল: বেতন ফেরতের বিচার কোথায় হবে, হাই কোর্ট? না সুপ্রিম কোর্টে? শুনানি শেষে রায় স্থগিত রাখল ডিভিশন বেঞ্চ
-
স্কুলশিক্ষকদের বেতন হল সময়েই, পেলেন ‘চাকরিহারা যোগ্য’-রাও, এখন চিন্তা: ডিসেম্বরের পর কী হবে?
-
প্রায় ৩০ ঘণ্টা পরে এসএসসি দফতর থেকে বার হলেন কর্মীরা, ঘেরাও করেছিলেন ‘অযোগ্য’ চাকরিপ্রার্থীরা
-
আন্দোলনের অন্যতম মুখ চিন্ময় মণ্ডলের নামই বাদ! এসএসসির ‘যোগ্য’ তালিকা দেখে কী বলছেন তিনি?
-
যোগ্য কারা? তালিকা প্রকাশ না করেই ১৮০৩ জন শিক্ষকের নাম বাদ দিয়ে শিক্ষাদফতরে তথ্য পাঠাল এসএসসি