দিব্যেন্দু বড়ুয়া। —ফাইল চিত্র।
সংঘাত ছিল। সেই সংঘাত আরও বাড়ল। তার ফলে বিতর্ক বাড়ল বাংলার দাবায়। ভারতীয় দাবা সংস্থার সহ-সভাপতি দিব্যেন্দু বড়ুয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগ করেছে বেঙ্গল চেস অ্যাসোসিয়েশন। হাঙ্গেরিতে আয়োজিত চেস অলিম্পিয়াডে ভারতীয় দলের প্রধান হিসাবে গিয়েছিলেন দিব্যেন্দু। সেখানে নাকি নিজের পদের সুবিধা নিয়েছেন বাংলার প্রথম গ্র্যান্ড মাস্টার। আনন্দবাজার অনলাইনে পাল্টা মুখ খুলেছেন দিব্যেন্দুও।
বেঙ্গল চেস অ্যাসোসিয়েশন দিব্যেন্দুর বিরুদ্ধে মূল তিনটি অভিযোগ এনেছে। ১) ভারতের দাবা সংস্থার সহ-সভাপতি দিব্যেন্দু নিজেই নিজেকে দলের প্রধান নিযুক্ত করেছেন। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগ উঠছে। ২) ভারতের চ্যাম্পিয়ন দল দেশে ফিরে যে আর্থিক পুরস্কার পেয়েছে সেখানে দিব্যেন্দুরও নাম রয়েছে। তিনি নিজেই নিজেকে ১০ লক্ষ টাকা পুরস্কার দিয়েছেন। ৩) ভারতীয় দল বুদাপেস্টে যাওয়ার চার দিন পর দিব্যেন্দু সেখানে গিয়েছিলেন। ভারতীয় দল দেশে ফেরার আট দিন পর তিনি ফিরেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতের জয়ী দলকে সংবর্ধনা দিয়েছেন। সেই অনুষ্ঠানেও ছিলেন না দিব্যেন্দু।
সংস্থার সচিব অন্তরীপ রায়ের আরও অভিযোগ, তাঁরা এই বিষয়গুলি ভারতীয় দাবা সংস্থাকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু সংস্থা দিব্যেন্দুর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন দিব্যেন্দু। তিনি কি সত্যিই নিজেকে নিজেই দলের প্রধান নিযুক্ত করেছিলেন। জবাবে আনন্দবাজার অনলাইনকে বাঙালি দাবাড়ু বললেন, “আমি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি। আমি না হয়ে অন্য যে কেউ দলের প্রধান হয়ে যেতে পারত। ফেডারেশনের এগজিকিউটিভ কমিটি ও সাধারণ সদস্যদের বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে আমার নাম চূড়ান্ত হয়েছে। তাই আমি গিয়েছি। আমি নিজে আমার নাম প্রস্তাবও করিনি আর নিজেকে নিজে নিযুক্তও করিনি।”
উল্টে বেঙ্গল চেস অ্যাসোসিয়েশন-এর অস্তিত্ব নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন দিব্যেন্দু। তাই তাঁদের করা অভিযোগকেও পাত্তা দিচ্ছেন না তিনি। দিব্যেন্দু বললেন, “বেঙ্গল চেস-এর কোনও অস্তিত্ব এখন নেই। ওটা একটা ক্লাবের মতো। ফেডারেশনের প্রাক্তন যুগ্মসচিব ও বেঙ্গল চেসের প্রাক্তন সচিব অতনু লাহিড়িকে দুর্নীতি ও অনৈতিক কাজের জন্য তিন বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছিল। বেঙ্গল চেস-এর কার্যক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। তাই ওদের অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই।” ফেডারেশনের টাকা নয়ছয় নিয়ে যে অভিযোগ করেছে তা কি সত্যি? দিব্যেন্দুর স্পষ্ট জবাব, “ভারতের চ্যাম্পিয়ন দল, কোচ ও বাকিদের মধ্যে যে ৩ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে তা এসেছে তিন জন স্পনসরের কাছ থেকে। ওটা ফেডারেশনের টাকা নয়। সেখান থেকে প্রত্যেক খেলোয়াড়কে ২৫ লক্ষ টাকা, পুরুষ ও মহিলা বিভাগের দুই অধিনায়ককে ১৫ লক্ষ টাকা, চার জন সহকারী কোচকে সাড়ে ৭ লক্ষ ও ডেলিগেশনের প্রধান হিসাবে আমাকে ১০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। ফেডারেশনের সভাপতি, সচিব ও বাকি কর্তারা মিলে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।”
দিব্যেন্দুর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তিনি দলের সঙ্গে বুদাপেস্টে যাননি ও ফেরেননি। তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন যে পরে বুদাপেস্টে গিয়েছিলেন। ফিরেছেনও পরে। কিন্তু তারও কারণ রয়েছে। দিব্যেন্দু বললেন, “আমাদের টিকিট দলের সঙ্গেই ছিল। কিন্তু ফেডারেশনের জরুরি বৈঠকে আমাকে থাকতে বলা হয়েছিল। সেই বিষয়ে সাই-এর অনুমতিও নিয়েছিল ফেডারেশন। তাই আমি দু’দিন পর গিয়েছি। চার দিন পরে নয়। তৃতীয় রাউন্ড থেকেই দলের সঙ্গে ছিলাম।” পরে ফেরার কথা তিনি আগেই ফেডারেশনকে জানিয়ে দিয়েছিলেন। পুত্রের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্যই এই সিদ্ধান্ত। দিব্যেন্দু বললেন, “আমি যাওয়ার আগেই বলে দিয়েছিলাম দলের সঙ্গে ফিরব না। তখন জানতাম না যে দুটো দলই সোনা পাবে। এটাও জানতাম না যে প্রধানমন্ত্রী ওদের সংবর্ধনা দেবেন। এত বড় সুযোগ কি কেউ হাতছাড়া করে! কিন্তু আমার আগে থেকেই পরিকল্পনা ঠিক ছিল। আমার ছেলে আমস্টারডামে থাকে। তাই আমি বুদাপেস্ট থেকে আমস্টারডামে গিয়েছিলাম। সেটা নিজের পয়সায় গিয়েছি। আগে থেকেই সকলে সব জানত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy