মোহালির স্কোর বোর্ড এবং নেটে ক্রিকইনফো জাতীয় ডিজিটাল মাধ্যম জানাচ্ছে ভারত ১০৮ রানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে উঠল। এই জন্যই স্কোর বোর্ডকে সময় সময় গাধা বলা হয়ে থাকে। বলা হয়ে থাকে তা বিকিনির মতো। যা দেখায় তা নিছকই অর্থপূর্ণ উঁকিঝুঁকি। যা ঢেকে রাখে সেটাই আসল।
মোহালি টেস্ট স্বীকৃত থাকবে প্রত্যাবর্তনের টেস্ট হিসাবে। প্রথম নাম রবি শাস্ত্রী। মোহালি জয় প্রমাণ করেছে দেশের জন্য ডিজাইনার পিচ নিয়ে তাঁর মুম্বই-অসভ্যতা এখন অন্য মাত্রায় বিচার হওয়া উচিত। এ ভাবে দেখা উচিত যে দলের জন্য ন্যায় বিচার চাইতে গিয়ে যদি কিছু মরাঠি খিস্তি করেও থাকেন সেটাকে এখন বৃহত্তর স্বার্থে উপেক্ষা করা হোক। রাতে এমন এসএমএস-ও পেয়েছেন শাস্ত্রী যা তাঁর মনে হয়েছে, তাঁকে উদ্দেশ করেই তো? কারণ তাতে লেখা— সুধীর নায়েক, প্লিজ শাট আপ।
প্রত্যাবর্তনের ম্যাচ এটা রবীন্দ্র জাদেজারও। ভারতীয় দল থেকে বাদ হয়ে শুধু জাননি জাদেজা। এমন ভঙ্গিতে বাদ হয়ে গিয়েছিলেন যে মনে করা হচ্ছিল তাঁর কেরিয়ার শেষ। একটা ধারণা জন্মে গিয়েছিল যে তাঁকে চাপ দিয়ে দলে ঢোকান ধোনি। ইচ্ছাকৃত উপেক্ষা করেন ভাজ্জিকে। জাড্ডু হলেন ধোনির ব্যক্তিগত খিদমতগার। যাঁকে তিনি আদর করে স্যার জাডেদা বলেন। ধোনি-শ্রীনি বিপন্ন হতেই তাই স্যার জাডেজাকে দল থেকে ঘাড়-ধাক্কা দেওয়া হয়েছিল। মাঝে অশ্বিনের চোট লেগে যাওয়া, ভাজ্জির অফ ফর্ম এই সব মিলে তাঁকে আবার দলে ফেরত আনে। আবার ফিরেই কিনা ম্যান অব দ্য ম্যাচ? কাম ব্যাক হো তো অ্যায়সা।
প্রত্যাবর্তন চেতেশ্বর পূজারারও। শ্রীলঙ্কাতে দু’টো টেস্টেই বাদ পড়ে গিয়েছিলেন। মনে হচ্ছিল টিমে যেহেতু রোহিত শর্মার মতো তাঁর কোনও গডফাদার নেই একেবারে বাইরেই না চলে যান। শ্রীলঙ্কার একটি টেস্টে ভাল খেললে কী হবে দলে যার মুরুব্বি নেই, সে একটা দু’টো ব্যর্থতার পরেই আউট অব নেটওয়ার্ক হওয়ার ভয় পায়। মোহালি-উত্তর চেতেশ্বর সেই দুর্ভাবনামুক্ত। অন্তত চলতি সিরিজটায় আর কেউ তাঁকে বাদ দেবে না।
প্রত্যাবর্তন— টার্নিং ট্র্যাকে ভারত খেলতে পারে এই চেতনারও। হালফিল স্পিনার এবং ঘূর্ণি পিচ মানেই টিম ইন্ডিয়ার হৃদ্কম্প হচ্ছিল। কখনও মইন আলি, কখনও রঙ্গনা হেরাথ। কখনও নাথান লিয়ঁ। এরা এমন কুচি কুচি করে ফেলছিলেন ভারতীয় ব্যাটিং যে সেখান থেকে টেস্টে ফেরা যাচ্ছিল না। পূজারা এবং মুরলী বিজয়ের কল্যাণে সেই ভূতটা তাড়ানো গিয়েছে। এটা যদি প্রত্যাবর্তন না হয়, তা হলে প্রত্যাবর্তন কাকে বলে!
শেষ প্রত্যাবর্তন— ভারতীয় সমর্থকদের আশা-ভরসা আর উৎসাহের। দু’বছর আগের নিষ্ঠুর এক ১৫ নভেম্বর ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেট সম্পর্কে সমর্থকদের উৎসাহের বাতি নিভিয়ে দিয়েছিল। সে দিনই অবসরে চলে যান সচিন রমেশ তেন্ডুলকর নামক ক্রিকেট ক্ষত্রিয়। ভারতীয় ক্রিকেট জনতাও যেন টেস্ট ক্রিকেট সম্পর্কে আরও নিরুদ্যম হয়ে পড়ে সেই থেকে। প্রায় দু’বছর বাদে আবার একটা সত্যিকার বলবর্ধক জয় এবং ফের স্বপ্নের উজান শুরু।
বললাম না, স্কোর বোর্ড বিকিনির মতো। স্কোর দেখায়, এতগুলো প্রত্যাবর্তন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy