প্রস্তুতি: সেট পিস থেকে গোলের মহড়া চামোরোর। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
স্পেনের বিলবাও শহর থেকে নব্বই কিলোমিটার দূরের ছোট্ট একটি শহরে থাকেন। সবুজ-মেরুন শিবিরের এ বারের ১০ নম্বর ফুটবলার জোসেবা বেইতিয়ার বিশেষ বন্ধু তিনি। ইগর নামের সেই স্পেনীয় নাগরিক ভারতে এসেছেন বন্ধু বেইতিয়ার নয়া ক্লাব ও কলকাতা ঘুরে দেখতে। রবিবার বিশ্ব বন্ধুত্ব দিবসের সকালে সেই ইগর বসেছিলেন মোহনবাগান সদস্য গ্যালারির বাঁ দিকে।
ইডেনের দিকের গোলপোস্টে তখন শিল্টন পালকে রেখে দুই প্রান্ত থেকে সেট পিস অনুশীলন চলছিল কিবু ভিকুনার দলের। দুই প্রান্ত থেকে ঠিকানা লেখা ক্রস বক্সে ভাসিয়ে দিচ্ছিলেন বেইতিয়াই। আর পরক্ষণেই ঘুরে তাকাচ্ছিলেন বন্ধুর দিকে। ইগর এ বার গ্যালারি থেকে ইশারা করেন বাগানের নয়া ‘হেড মাস্টার’ সালভা চামোরোর মাথায় ফেলতে। বেইতিয়া বাঁক খাওয়ানো ফ্রি-কিক নিখুঁত নিশানায় রাখতেই উড়ে এসে হেডে গোল করে যান চামোরো। যা দেখে হাততালি দিয়ে ওঠেন মোহনবাগান কোচ ভিকুনা।
এ বারের কলকাতা লিগ অভিযানে নামার আগের সকালে এটাই ছবি চনমনে সবুজ-মেরুন শিবিরের। সোমবার ঘরের মাঠে লিগে মোহনবাগানের সামনে গত বছরের রানার্স পিয়ারলেস। টানা আট বছর পরে গত বার কলকাতা লিগ ঘরে তোলার বছরেও যে দলকে হারাতে পারেননি আজহারউদ্দিন মল্লিকরা। এগিয়ে গিয়েও শেষে মুহূর্তে ক্রোমার গোলে সেই ম্যাচ শেষ হয়েছিল ১-১।
এ বার পিয়ারলেসে সেই ক্রোমা তো রয়েছেনই। রহিম নবিদের দলে এসেছেন অ্যান্টনি উলফও। সঙ্গে দীপেন্দু দুয়ারি, অভিনব বাগ, তন্ময় ঘোষদের মতো বড় দলের প্রাক্তনরাও রয়েছেন। কোচ জহর দাস। মোহনবাগান ম্যাচের আগে তাঁর শান্ত গলায় প্রচ্ছন্ন হুঙ্কার, ‘‘মোহনবাগানের মতো বড় দলের বিরুদ্ধে অনেক কিছু প্রমাণ করার থাকে। হীনম্মন্যতায় ভোগার কিছুই নেই। আমাদের ক্রোমা, উলফরা কিন্তু একা ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারে।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘মোহনবাগানের চামোরোর হেডে গোল করার প্রবণতা রয়েছে। আমাদের দেখতে হবে ওর মাথায় যেন বল না আসে। তাই দুই প্রান্ত থেকে ওদের ক্রসগুলো বন্ধ করতে হবে।’’
পেপ গুয়ার্দিওলা, মার্সেলো বিয়েলসার ভক্ত ভিকুনা অবশ্য জানেন ছোট মাঠে পিয়ারলেসকে সামলানোর চাপ কতটা। সহকারী কোচ রঞ্জন চৌধুরীর থেকে জেনেছেন, ক্রোমা-উলফ-নবিদের সম্পর্কে। তাই বলে দেন, ‘‘ক্রোমাদের দলটা বেশ ভাল। গত বারের রানার্স। কিন্তু আমরা ওদের গত বছর হারাতে পারিনি। পিয়ারলেস সম্পর্কে অনেক তথ্য পেয়েছি।’’
যদিও মোহনবাগান কোচের কপালে ভাঁজ ফেলেছে দুই ম্যাচে পাঁচ গোল করা পিয়ারলেসের আক্রমণভাগ নয়। তাঁর নিজের ক্লাবের মাঠ। বলে দেন, ‘‘ডুরান্ডের প্রথম ম্যাচটা সল্টলেকে খেললাম। কিন্তু আমাদের মাঠটা সে রকম নয়। মাটি শক্ত। বৃষ্টি হলে ভাল। রয়েছে বড় ঘাসও।’’ মালিদের ঘাস ছাঁটতে বলার পাশাপাশি, নিজেকে সামলে পরক্ষণেই বলে দেন, ‘‘এটা অজুহাত নয়। বিপক্ষকেও এই মাঠেই খেলতে হবে।’’
এ দিনই মোহনবাগান অনুশীলনে যোগ দিলেন গত বছর ইস্টবেঙ্গলে ঝড় তোলা ডিফেন্ডার লালরাম চুলোভা। তবে সই না হওয়ায় লিগের প্রথম ম্যাচে তিনি দলে নেই। কিবু বলে দেন, ‘‘ডুরান্ডের প্রথম ম্যাচে যে দল খেলেছিল, সেই দলে কিছু পরিবর্তন হবে। দেরিতে নথিবদ্ধ হওয়ায় জুনিয়র ফুটবলারদের এই ম্যাচে পাচ্ছি না।’’
মোহনবাগান কোচ এ দিন অনুশীলনে জোর দিলেন সেট পিসেই। সঙ্গে বল দখলে রেখে আক্রমণ শানানোর মহড়াও হল জোরকদমে। অনুশীলন থেকে পরিষ্কার, রক্ষণে বিদেশি নাও থাকতে পারে। তবে মাঝমাঠ ও আক্রমণে তিন বিদেশি ফ্রান গঞ্জালেস , জোসেবা বেইতিয়া ও সালভা চামোরোকে রেখেই লিগের প্রথম ম্যাচে তিন পয়েন্ট ছিনিয়ে আনার অঙ্ক কষছে মোহনবাগান।
সোমবার কলকাতা লিগে: মোহনবাগান বনাম পিয়ারলেস (মোহনবাগান, দুপুর ৩ টে থেকে সরাসরি সাধনা টিভিতে)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy