শনিবার অনুশীলনের পরে ইস্টবেঙ্গলের ত্রয়ী কোলাদো, মার্তি এবং মার্কোস। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
তিকিতাকা বনাম তিকিতাকা।
কলকাতা প্রিমিয়ার লিগের ডার্বির আবহে যেন এল ক্লাসিকোর স্পর্শ!
এক জন রিয়াল মাদ্রিদের রিজার্ভ ও ‘বি’ দলে কোচিংয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্ব নিয়েছেন। দানি কার্ভাহাল, আলভারো মোরাতা, নাচোর মতো স্প্যানিশ তারকা উঠে এসেছেন তাঁর কোচিংয়েই। কলকাতা ময়দানে ইতিমধ্যেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়া। গত মরসুমে তাঁর কোচিংয়ে দু’বার মোহনবাগানকে হারিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। রবিবাসরীয় যুবভারতীতে ডার্বি জয়ের হ্যাটট্রিক তিনি করতে পারবেন কি না তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে।
আর এক জন এই মরসুমেই অভিষেক ঘটিয়েছেন মোহনবাগানের কোচ হিসেবে। আলেসান্দ্রোর মতো আকর্ষণীয় বায়োডেটা না থাকলেও কিবু ভিকুনা ডুরান্ড কাপের ফাইনালে তুলেছিলেন দলকে। কলকাতা লিগের ডার্বি শুধু তাঁর কাছে নিজেকে প্রমাণ করার মঞ্চ নয়, ইস্টবেঙ্গল কোচের ডার্বি জয়ের হ্যাটট্রিক আটকানোর অগ্নিপরীক্ষাও।
দুই স্প্যানিশ কোচেরই দর্শন পাসিং ফুটবলে বিপক্ষকে নাজেহাল করে জয় তুলে নেওয়া। অথচ মহারণের আগে সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে দুই চাণক্য। তিনটি ম্যাচের দু’টিতে জিতে ছয় পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের চার নম্বরে ইস্টবেঙ্গল। তারা হেরেছে একটি ম্যাচ। খাইমে সান্তোস কোলাদোরা গোল করেছেন পাঁচটি। খেয়েছে দু’টি। সমসংখ্যক ম্যাচ খেলে মোহনবাগানের পয়েন্ট চার। জিতেছে মাত্র একটি ম্যাচে। হার ও ড্র একটি করে ম্যাচে। সালভা চামোরোরা গোল করেছেন তিনটি। খেয়েছে পাঁচটি। তা সত্ত্বেও কিবু হাসিখুশি ও খোলামেলা। আলেসান্দ্রো সাবধানী।
শনিবার সকালে সল্টলেকের সাইয়ের মাঠে অনুশীলন করতে যাওয়ার আগে প্রায় ঘণ্টাখানেকের ভিডিয়ো সেশন করলেন লাল-হলুদ কোচ। তাঁর অস্বস্তির প্রধান কারণ, মাঝমাঠের ছন্দ হারিয়ে যাওয়া। অথচ মোহনবাগানের আসল শক্তি মাঝমাঠেই। জোসেবা বেইতিয়ার নেতৃত্বে ঝড় তুলছেন চামোরো-রা। ডার্বির আগে ঝুঁকি না নিয়ে গোপনে বিশেষ অনুশীলন করালেন ইস্টবেঙ্গল কোচ।
প্রস্তুতি শেষ করেই পরে আলেসান্দ্রো দ্রুত বেরিয়ে গেলেন সহকারী কোচ জোসেপ ফেরে (কোকো) ও ফিজিক্যাল ট্রেনার কার্লোস নোদারকে নিয়ে। সম্ভবত হোটেলে ফিরে আরও এক বার ভিডিয়ো বিশ্লেষণে বসবেন। ফুটবলারেরা বেরোলেন অনেক পরে সমর্থকের জয়ধ্বনির মধ্যে দিয়ে। কিবুও এ দিন সকালে মোহনবাগান মাঠে গোপনে প্রস্তুতি সারলেন।
মরসুমের প্রথম ডার্বিতে শুধু তিকিতাকা নয়, ফুটবলারদের মধ্যেও স্পেনীয় দ্বৈরথের হাওয়া। এই প্রথম ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের ডার্বি-ভাগ্য অনেকটাই নির্ভর করছে স্পেনীয় ফুটবলারদের উপরে। ইস্টবেঙ্গলের পাঁচ জন স্প্যানিশ তারকা হলেন— বোরখা গোমেস পেরেস, খাইমে সান্তোস কোলাদো, মার্কোস দে লা এসপাদা, মার্তি ক্রেসপি ও খুয়ান গন্সালেস। যদিও রবিবার বোরখা ও খুয়ানের খেলার সম্ভাবনা নেই। কলকাতা লিগে রক্ষণের প্রধান ভরসা বোরখার নাম নথিভুক্ত করা হয়নি। খুয়ান শনিবার সকালেই কলকাতায় পৌঁছেছেন।
মোহনবাগানে এই মুহূর্তে চার জন স্পেনীয় রয়েছেন। এঁরা হলেন— সালভা চামোরা, জোসেবা বেইতিয়া, ফ্রান মোরান্তে ও ফ্রান গন্সালেস।
একটা সময় ছিল, যখন কলকাতা মাতাতেন নাইজিরিয়ার ফুটবলারেরা। এখন ময়দানে স্পেনীয় হাওয়া।
কলকাতা লিগে অবশ্য তিন জনের বেশি বিদেশি খেলাতে পারবেন না দুই কোচ। ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলের প্রথম একাদশে কোলাদো ও ক্রেসপি থাকবেনই। বোরখা না থাকায় রক্ষণে ভরসা ক্রেসপি-ই। মাঝমাঠ শক্তিশালী করতে সেনেগালের কাশিম আইদারা শুরু করতে পারেন। পরিবর্ত হিসেবে নামতে পারেন মার্কোস। তাই শুরু থেকেই লাল-হলুদ জার্সিতে স্প্যানিশ ত্রয়ীকে দেখা যাবে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।
মোহনবাগানের প্রথম একাদশে তিন বিদেশিই স্পেনের— মোরান্তে, বেইতিয়া ও সালভা। যা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে লাল-হলুদ শিবিরে। যদিও কলকাতা ডার্বিতে অভিষেকের চব্বিশ ঘণ্টা আগে লাল-হলুদের স্প্যানিশ ডিফেন্ডার ক্রেসপি বলে দিলেন, ‘‘অবশ্যই সালভা-বেইতিয়া দারুণ ফুটবলার। তবে আমাদের দলেও একাধিক ভাল ফুটবলার রয়েছে। মোহনবাগানও শক্তিশালী দল।’’ এর পরেই তিনি যোগ করেছেন, ‘‘ডার্বি সব সময়ই আলাদা।’’ আর মোহনবাগানের বেইতিয়ার কথায়, ‘‘চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য এই ম্যাচটা জেতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’
ডার্বির আবেগে ভাসছেন স্পেনীয় তারকারাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy