Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
ম্যাচের সেরা যশপ্রীত বুমরা ৫-২৭

‘আক্রম, মালিঙ্গার পর বুমরার ইয়র্কার সেরা’

ধনঞ্জয়কে দুর্দান্ত ‘রিড’ করেছে এই দুই পোড় খাওয়া ব্যাটসম্যান। ধনঞ্জয় যখনই লেগ ব্রেক দিচ্ছিল, তখনই সামনের পায়ে খেলছিল ধোনি। স্পিনটা ভাঙার আগেই তা নির্বিষ করে দিচ্ছিল। আর রোহিত শেষ সেকেন্ড পর্যন্ত দেখে ওকে খেলছিল।

নায়ক: দুই ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ জয় ভারতের। পাঁচ উইকেট নেওয়া বুমরাকে অভিনন্দন কোহালির। ছবি: এএফপি।

নায়ক: দুই ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ জয় ভারতের। পাঁচ উইকেট নেওয়া বুমরাকে অভিনন্দন কোহালির। ছবি: এএফপি।

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৫২
Share: Save:

সেই আকিলা ধনঞ্জয় এসেই ধাক্কাটা দিয়েছিল ভারতীয় ব্যাটিংয়ে। পরপর কে এল রাহুল ও কেদার যাদবকে ফিরিয়ে দিয়ে। দু’জনেই বাজে শটে আউট। কেদার অযথা সুইপ করতে গিয়ে আর রাহুল একটা ভুল শট খেলে মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে। কিন্তু এমএস ধোনি ও রোহিত শর্মা বুঝিয়ে দিল আকিলা ধনঞ্জয় কোনও রকেট সায়েন্সের নাম নয়। একটু মাথা খাটিয়ে খেললে ওকে সামলানো বোধহয় সম্ভব।

ধনঞ্জয়কে দুর্দান্ত ‘রিড’ করেছে এই দুই পোড় খাওয়া ব্যাটসম্যান। ধনঞ্জয় যখনই লেগ ব্রেক দিচ্ছিল, তখনই সামনের পায়ে খেলছিল ধোনি। স্পিনটা ভাঙার আগেই তা নির্বিষ করে দিচ্ছিল। আর রোহিত শেষ সেকেন্ড পর্যন্ত দেখে ওকে খেলছিল। আগের লেখাতেই লিখেছিলাম, অজন্তা মেন্ডিসের মতোই এই রহস্য বোলারের ধাঁধারও সমাধান করে ফেলবে ব্যাটসম্যানেরা। বেশি দিন অপেক্ষা করতে হল না। ছ’উইকেট নেওয়ার পরের ম্যাচেই ধনঞ্জয়কে বুঝে নিল ধোনি, রোহিতরা।

মাত্র ২১৭ রান তাড়া করতে নেমে ভারত ৬১-৪ হয়ে যাওয়ার পরেও দলকে ছয় উইকেটে জয়ের দিকে টেনে নিয়ে যায় এই দুই জাত ব্যাটসম্যান। ধোনি তো ক্রিকেটবৃদ্ধ। ওর অভিজ্ঞতা আর নির্ভরশীলতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। কিন্তু রোহিত যে ক্ল্যাসিক ব্যাটসম্যান, ওর ব্যাটিং অনেকটা শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের মতো, তা রবিবার পাল্লেকেলেতে ফের একবার বুঝিয়ে দিল এই মুম্বইকর।

সেরা ব্যাটসম্যানদের যেটা বড় গুণ, যথাসম্ভব লেট খেলা, সেই গুণটা ওর মধ্যে রয়েছে। ওকে কেন টেস্টে খেলানো হয় না, জানি না। রোহিত যদি ওর ফিটনেসকে আর একটু নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে, তা হলে ও টেস্টে ওপেন করতেই পারে। কারণ, কথাতেই আছে ক্লাস ফরএভার। রোহিত হল সেই ক্লাস। একটাও কৃত্রিম শট খেলে না। ধবন যেমন মাঝে মাঝে জোর করে শট মারে, রোহিত কিন্তু তা করে না।

আরও পড়ুন: হেরে গেলেও সাইনা দেখালেন তিনি ফুরিয়ে যাননি

ভারতীয় বোলিংয়ে এই সিরিজে সেরা অস্ত্র যশপ্রীত বুমরা। ও আর লসিথ মালিঙ্গা আইপিএলে একই দলে খেলে। অনেকে ওদের গুরু-শিষ্য বলে থাকে। কিন্তু শিষ্য যেমন অনেক সময় গুরুকে টপকে যায়, বুমরা কিন্তু সেটাই করল। যে নিখুঁত লাইনে ও বোলিং করছে, তা বিপক্ষের ব্যাটসম্যানরা ধরতেই পারছে না। ওয়াসিম আক্রম ও মালিঙ্গার পর বোধহয় সেরা ইয়র্কারটা এখন দেয় বুমরাই। গুজরাতি এই পেসার একটা লেংথ বল করে, তো পরেরটাতেই ইয়র্কার দেয়। অফ স্পিন স্লোয়ার, নর্ম্যাল স্লোয়ার ও মাঝে মাঝে বাউন্সার— ওর এই বৈচিত্রই ব্যাটসম্যানদের পক্ষে সামলানো কঠিন হয়ে যায়।

ব্যাটিং-বোলিংয়ে অনেক অলঙ্কারই আমরা পেলাম এই সিরিজে। রোহিত, বুমরার কথা তো লিখলামই। অক্ষর পটেলের কথাও বলতেই হবে। ৩০ ওভার বল করেও ১০০ রানও দেয়নি ও। পাঁচটা উইকেট নিয়েছে। তবে সবচেয়ে বড় অস্ত্র আমরা পেয়েছি হার্দিক পাণ্ড্যর মধ্যে। এদের নিয়ে আর পিছনে তাকাতে হবে না ভারতকে। দলের ব্যাটিংয়ে গভীরতা কতটা, তাও বুঝে নেওয়া গেল দ্বিতীয় ম্যাচে ভুবনেশ্বর কুমারের ইনিংসে। আমাদের দলের ন’নম্বর ব্যাটসম্যানও ম্যাচ জেতাতে পারে, তা বুঝে নিয়েছে ক্রিকেট বিশ্ব।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE