Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

গতিতেই শেষ করেছি, বলে দিচ্ছেন ব্রিটিশ কোচ

ব্রাজিলকে ৩-১ হারিয়ে এসে ইংল্যান্ড কোচ স্টিভ কুপারও উচ্ছ্বসিত তাঁর টিমের নয় নম্বর জার্সির মালিককে নিয়ে। এ দিনের হ্যাটট্রিককারী সম্পর্কে।

উৎসব: ব্রাজিলকে ধ্বংস করে রিয়ান ব্রিউস্টার।

উৎসব: ব্রাজিলকে ধ্বংস করে রিয়ান ব্রিউস্টার।

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:১১
Share: Save:

পনেরো বছর আগে বড়দের বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে রোনাল্ডোদের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের ১-২ হেরে বিদায়ের ম্যাচে তিনি খেলেছিলেন ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে।

সেই সোল ক্যাম্পবেল বুধবার ফিফার টেকনিক্যাল স্টাডি গ্রুপের তরফে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল দেখলেন যুবভারতীতে বসে। রিয়ান ব্রিউস্টারের হ্যাটট্রিকের সময় টেবিলে সপাটে একটা চাপড় মারলেন ক্যাম্পবেল। স্টেডিয়াম ছাড়ার মুখে বলে গেলেন, ‘‘২০০২ এর বদলা হল কলকাতায়। স্মরণীয় হয়ে থাকবে ব্রিউস্টারও। সে দিন মাইকেল আওয়েন এগিয়ে দিলেও হেরেছিলাম। আজ অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে জিতে ফিরছি।’’

ব্রাজিলকে ৩-১ হারিয়ে এসে ইংল্যান্ড কোচ স্টিভ কুপারও উচ্ছ্বসিত তাঁর টিমের নয় নম্বর জার্সির মালিককে নিয়ে। এ দিনের হ্যাটট্রিককারী সম্পর্কে। ইংল্যান্ড কোচ বলছিলেন, ‘‘কোনও বিশেষ ফুটবলার সম্পর্কে আমি কখনও মন্তব্য করি না। কিন্তু যে ফুটবলার কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে হ্যাটট্রিক করে তাঁকে নিয়ে তো আলাদা করে বলতেই হয়। অসাধারণ কৃতিত্ব। আমাদের ছেলেরা আজ ওদের বয়সের চেয়েও এগিয়ে গিয়ে পারফর্ম করল।’’

আরও পড়ুন: গতিই নেই, ব্রাজিল জিতবে কি!

অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে এই প্রথম ফাইনালে উঠল ইংল্যান্ড। তাও আবার ব্রাজিলকে হারিয়ে।

কী ভাবে এই অসাধ্য সাধন? ইংল্যান্ড কোচ বলেন, ‘‘ব্রাজিলের মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে নামলে নির্দিষ্ট কিছু পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হয়। সব ম্যাচেই প্রথমার্ধে বলের দখল রাখার চেষ্টা করি আমরা। এ দিনও তাই হয়েছে। তবে ম্যাচটা বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল আর বিপক্ষ টিমের নাম ব্রাজিল। তাই কাজটা খুব সহজে হয়নি।’’ একটু থেমে কুপার ফের বলে চলেন, ‘‘প্রথম ২৫-৩০ মিনিট বল দখলের জন্য ওদের মাঝমাঠের সঙ্গে আমাদের মাঝমাঠের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছিল। কিন্তু তার পরে আমরা যা চেয়েছি তাই হয়েছে। ছেলেরাও সুযোগগুলো কাজে লাগাতে ভুল করেনি।’’

অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠে ইংল্যান্ড দল। বুধবার যুবভারতীতে।

পাওলিনহোদের ছত্রভঙ্গ করতে এ দিন ইংল্যান্ড কোচ জোড়া স্ট্র্যাটেজি নিয়েছিলেন। তা জানতে চাইলে কুপার বলছেন, ‘‘দ্রুতগতিতে প্রতি-আক্রমণে ব্রাজিল রক্ষণে ফাঁকা জায়গা তৈরি করা। আর তা না হলে ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করা ফাঁকা জায়গার জন্য। তিনটে গোলই সেই পরিকল্পনার ফসল। আমরা জানতাম, ব্রাজিল রক্ষণে কোথায় ফাঁকা জায়গা তৈরি হতে পারে। বা বিপক্ষ ক্লান্ত হয়ে পড়লে কোথায় ঝটকা দিতে হবে। সেই অনুযায়ী, এমিল স্মিথ-রোয়ে-কে নামিয়েছিলাম। ব্রিউস্টার-কে তৃতীয় গোল করানোর সময় ও ঠিক ব্রাজিল রক্ষণে ফাঁকা জায়গাটা খুঁজে পেয়েছিল।’’

কিন্তু ৩-১ ব্যবধান? ইংল্যান্ড কোচ বলেন, ‘‘ছেলেদের প্রতি আস্থা ছিল সব সময়েই। নিজেদের দিনে, নিজেদের পরিকল্পনা খেটে গেলে যে কোনও টিমকেই হারাতে পারি আমরা।’’

ছেষট্টি সালের পর বড়দের বিশ্বকাপ আসেনি ইংল্যান্ডে। তার জন্য তিন বছর আগে এফএ নতুন পরিকল্পনা নিয়েছে। তার পরেই অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন। ইউরো অনুর্ধ্ব-১৭ টুর্নামেন্টে রানার্স। আর কলকাতায় অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে ফাইনালে। এ দিন জয়ের পর ইংল্যান্ড কোচ বলছিলেন, ‘‘বিশ্বকাপ ও ইউরোপ সেরা হওয়ার ধাপগুলো পেরোচ্ছি। এ বার অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলব আমরা। এটা অবশ্যই একটা গর্বের মুহূর্ত। তবে নিজেদের সেরা ম্যাচটা এখনও খেলেনি ছেলেরা।’’

বিশ্বকাপ খেলতে আসার আগে ভারতের পরিবেশ, আবহাওয়া আরও কিছু বিষয় নিয়ে ভারতীয় দলের ইংরেজ কোচ স্টিভন কনস্ট্যান্টাইনের থেকে পরামর্শ নিয়েছিলেন স্টিভ কুপার। জয়ের পর সুনীল ছেত্রীদের কোচকেও ধন্যবাদ দেন তিনি।

এ দিন স্টেডিয়ামে ৬৩, ৬৮১ জন দর্শকের সিংহভাগটাই ছিল ব্রাজিল সমর্থক। ম্যাচ শেষে ফিল ফডেনের পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন করলে ইংল্যান্ড কোচ ঠেস মেরে বলে যান, ‘‘ষাট হাজার ব্রাজিল সমর্থকের অভিবাদন নিয়ে মাঠ ছাড়ল ফিল ফডেন। এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে!’’

ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE