ব্রাজিলকে ফাইনালে তোলার পরে নেইমার। বুধবার। ছবি: এএফপি।
ব্রাজিল-৬ (নেইমার পেনাল্টি-সহ ২, জেসুস-২, মারকুইনোস, লুয়ান)
হন্ডুরাস-০
এখনও মনে আছে সোল অলিম্পিক্সের ফুটবল ফাইনালে ব্রাজিল-রাশিয়া ম্যাচটা। রোমারিওর গোলে এগিয়ে গিয়েও ফাইনালে হেরে গিয়েছিল ব্রাজিল। অলিম্পিক্স সোনা জিততে না পেরে কাঁদতে কাঁদতে ফিরেছিল ছয় বছর পরে চুরানব্বই বিশ্বকাপ ফুটবলের নায়ক।
রোমারিওর পরেও ব্রাজিলে কম সুপারস্টার ফুটবলার আসেনি। রোনাল্ডো, রোনাল্ডিনহো, রিভাল্ডো, কাকা। আর এখন নেইমার। এর মাঝে বিশ্বকাপ, কোপা-সহ অনেক ট্রফি জিতেছে ব্রাজিল। কিন্তু অলিম্পিক্স সোনা আজও আসেনি পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের দেশে।
দেশের মাটিতে এ বার সেই সোনাটা জিততে কতটা মরিয়া ব্রাজিল তা বুধবার সেমিফাইনালে বুঝিয়ে দিল নেইমার। জোড়া গোল করল। তাও আবার অলিম্পিক্স রেকর্ড (১৫ সেকেন্ডে) করে। দ্রুততম গোল করে শুরু করল। পেনাল্টি থেকে গোল করে শেষ করল। মাঝে যে চার গোল জেসুস (২), মারকুইনোস আর লুয়ানদের—তার মধ্যে তিনটে নেইমারের পা থেকে তৈরি হওয়া। গোটা ম্যাচে এমন পারফরম্যান্স করল নেইমার যেন হন্ডুরাস মাঝমাঠটা ওর কাছে ব্রেকফাস্ট টেবিলের মাখন। আর ও তাতে ছুরি চালাচ্ছে।
মোহনবাগানে ব্যারেটো, ডু-র সঙ্গে আড্ডা মারতে গিয়ে বুঝতে পারতাম, ব্রাজিলিয়ানরা একটা অহঙ্কার সব সময় নিয়ে ঘোরে— এই গ্রহে তারা যখন ফুটবল খেলে তখন তাদের চেয়ে ভাল কেউ খেলতে পারে না। আর সেই অহঙ্কারে যদি পা পড়ে যায় তা হলে ওরা জবাব দেয় ফুটবলেই।
অলিম্পিক্সে যেমনটা দিচ্ছে নেইমার। রিও অলিম্পিক্সের আগে ওর রাত-পার্টি নিয়ে সমালোচনা। তার পর অলিম্পিক্সের শুরুতে জোড়া ড্রয়ের পর ওকে নিয়ে কম বিদ্রুপ করেনি ব্রাজিলের মিডিয়া ও জনতা। তার উপর সব ব্রাজিলিয়ানকে তো অবচেতন মনে গত দু’বছর ধরে অবিরাম তাড়া করে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে সাত গোল হজম। মোদ্দা কথা, অলিম্পিক্সের শুরুতেই নেইমারদের অহঙ্কারের লেজে পা পড়ে গিয়েছিল।
আসলে বড় প্লেয়াররা চাপে বেশি করে জ্বলে ওঠে। যেটা বুধবার হতে দেখলাম নেইমারের মধ্যে। কখনও ২০-২৫ গজের ফাইনাল পাস বাড়াচ্ছে জেসুস বা গাবিগোলকে। কখনও খেলাটাকে স্লো করছে ইচ্ছে মতো। কখনও বা ড্রিবলে বোকা বানাচ্ছে বিপক্ষ ডিফেন্সকে। আবার কখনও সেই পুরনো ব্রাজিলের মতো একটা প্রান্তে চার-পাঁচটা পাস খেলে বলটাকে অন্য প্রান্তে সুইচওভার করে দেওয়া। আর একটা ব্যাপার, নেইমার টিমটাকে খুব সুন্দর গাইড করছে। এ দিন মাঝেমাঝে যা করছিল জেসুসের সঙ্গে, গ্যাব্রিয়েলের সঙ্গে। নেইমারের মতো সিনিয়রকে এই ভূমিকায় পেয়ে ব্রাজিল অলিম্পিক্স টিম উজ্জীবিত ফুটবল খেলল শেষ তিনটে ম্যাচে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে ফাইনালে কী হবে? এই লেখা পর্যন্ত জানা নেই, ফাইনালে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ কে? জার্মানি না নাইজিরিয়া? যে দেশই সামনে আসুক না কেন এই ব্রাজিলকে রোখা হয়তো মুশকিল হবে। আর জার্মানিকে হারিয়ে সোনা জিতলে তো দু’বছর আগের ক্ষত খানিকটা হলেও সারবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy