বিজয়ী: পুরস্কার হাতে দুই বোন। নিজস্ব চিত্র
ঝাড়খণ্ডে অনুষ্ঠিত পাওয়ার লিফটিংয়ে সোনা জিতলেন ‘ঘরের মেয়ে’ দুই বোন। অন্যদিকে, হরিয়ানায় আয়োজিত উসু প্রতিযোগিতায় ব্রোঞ্জ পেয়েছে কোচবিহারেরই একাদশ শ্রেণির এক স্কুলছাত্র। একই সঙ্গে দুই রাজ্যে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় এমন সাফল্যে খুশির হাওয়া কোচবিহারের ক্রীড়ামহলে।
সফল দুই বোনের নাম চন্দনা দাস ও সমাপ্তি দাস। কোচবিহারের দক্ষিণ খাগরাবাড়ি এলাকায় তাদের বাড়ি। অভাব অনটনের সংসারে থেকেও পাওয়ার লিফটিং ছোটবেলা থেকেই তাদের দু’জনের ধ্যানজ্ঞান। তবে কয়েক বছর আগে বিবাহ সূত্রে হালিশহরে বসবাস করছেন চন্দনা। নিজের কাছে রেখে তৈরি করতে পরে বোন সমাপ্তিকেও সেখানে নিয়ে যান। ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরের বিষ্ণুপুরে ১৬-১৯ মার্চ ফেডারেশন কাপ পাওয়ার লিফটিং ন্যাশনাল বেঞ্চপে চ্যাম্পিয়ানশিপ ও ন্যাশনাল ডেডলিভ চ্যাম্পিয়ানশিপ প্রতিযোগিতার আসর বসে। সেখানে রাজ্য দলের হয়ে সুযোগ পেয়েছিল তারা। ফেডারেশন কাপে ৩৭ কেজি বিভাগে ১৭ মার্চ সমাপ্তি সোনা জেতে। ডেডলিভেও একই বিভাগে সোনা জিতেছেন ওই তরুণী। সামগ্রিকভাবে ডেডলিভ ও ফেডারেশন কাপেও মেয়েদের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে দ্বিতীয় পুরস্কার জেতেন তিনি। দিদি চন্দনা ৭২ কেজি বিভাগে ডেডলিভে সোনা জেতেন। ফেডারেশন কাপেও রূপো জেতেন তিনি।
দুই বোনেরই পাখির চোখ পাওয়ার লিফটিংয়ের এশিয়া কাপ খেলায় অংশগ্রহণ। চন্দনা বলেন, “মে মাসে রাজস্থানে এশিয়া কাপ হওয়ার কথা। ফেডারেশন কাপের প্রথম, দ্বিতীয় স্থানাধিকারীরা ওই প্রতিযোগিতায় জাতীয় দলের হয়ে নামার সুযোগ পায়। সেই স্বপ্ন পূরণের দিকে তাকিয়ে আছি। তবে স্পনসর পেলে ভাল হয়।” সমাপ্তি বলেন, “ভাল লাগছে। তবে অনুশীলনের অনেক খরচ। স্পনসর পেলে ভাল হয়।” তারা জানায়, কোচবিহার থেকেই লড়াই শুরু করেছিলেন তাই সাফল্যের দিনে জেলার কথাই তাদের মনে হচ্ছে। দিনহাটা ব্যায়াম বিদ্যালয়ের সচিব বিভুরঞ্জন সাহা বলেন, “দু’জনেই একসময় আমাদের বিদ্যালয়ে অনুশীলন করত। তাদের সাফল্যের খবর পেয়েছি। জেলায় এলে ওই দুজনকে সংবর্ধনাও জানানো হবে।”
মঙ্গলবার ওই দুই বোনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন উদ্যোক্তারা। ঘটনাচক্রে সেদিনই হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রে আয়োজিত জুনিয়র ন্যাশনাল উসু প্রতিযোগিতায় ব্রোঞ্জ জেতেন কোচবিহারের আমির হোসেন। বিবেকানন্দ হাইস্কুলের একাদশের পড়ুয়া আমিরের বাড়ি কোচবিহারের ঘুঘুমারি এলাকায়। আমিরের বাবা ব্যবসায়ী। কোচবিহার জেলা উসু অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সত্যেন বর্মন বলেন, “আমিরের সাফল্যে আমরা দারুণ খুশি।” আমির জানান, ভবিষ্যতে ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আরও বড় প্রতিযোগিতায় পদক জিততে চান তিনি।
দেশের ক্রীড়া মানচিত্রে ঘরের ছেলেমেয়েরা সাফল্য দিয়ে জায়গা করে নেওয়ায় খুশি প্রশাসনের কর্তারাও। কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “দারুণ ব্যাপার। পদকজয়ীদের অভিনন্দন।” তিনি জানিয়েছেন, জেলায় খেলাধূলোর প্রসারে চেষ্টা হচ্ছে। খেলাধূলোর সাফল্যের ওপরেই সামাজিক উন্নয়নের মাপকাঠি নির্ভর করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy