যোদ্ধা: দেশকে পদক দিতে চান বিকাশ যাদব (ডান দিকে)। ফাইল চিত্র
বলিউড অভিনেতা রাজকুমার রাওয়ের ভক্ত। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ব্যস্ত থাকেন না। পার্টি, হৈ-হল্লা থেকে থাকেন শত যোজন দূরে। আর অবসর পেলেই বসে যান দাবা খেলতে। তিনি বলেন, ‘‘দাবা মনঃসংযোগ ঠিক রাখে। বক্সিং না করলে হয়তো দাবাড়ু হওয়ারই চেষ্টা করতাম।’’ আরও বলেন, ‘‘গত মাসেই তো কলকাতায় বিশ্বনাথন আনন্দ ও ম্যাগনাস কার্লসেন ঘুরে গেলেন। তখন শিবির চলছিল কর্নাটকে। যদি ভাগ্যক্রমে শিবিরটা তখন কলকাতায় হত, তা হলে গিয়ে ঠিক দেখা করে আসতাম। বিশ্বনাথন আনন্দ আমার প্রিয় একজন ক্রীড়াবিদ।’’ বুধবার দুপুরে কর্নাটক থেকে ফোনে যিনি এ কথা বলছিলেন তিনি কোনও দাবাড়ু নন। তিনি— ভারতীয় বক্সার বিকাশ কিষাণ যাদব।
এশিয়ান গেমস, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, কমনওয়েলথ গেমস থেকে ভারতকে পদক এনে দিয়েছেন তিনি। মার্কিন মুলুকে পেশাদার বক্সিংয়ে নেমেও জয় পেয়েছেন। কিন্তু স্বপ্নের অলিম্পিক্স পদকটাই তো পাওয়া হয়নি এখনও। তাই চলতি বছরের শুরুতে অপেশাদার বক্সিংয়ে প্রত্যাবর্তন ঘটিয়ে এখন টোকিয়ো অলিম্পিক্স থেকে পদক আনার জন্য ঘাম ঝরাচ্ছেন ‘ইন্সপায়ার ইনস্টিটিউট অব স্পোর্টস’-এ।
নিজেই সে কথা জানিয়ে ভারতের এই প্রথম সারির বক্সার বলে দেন, ‘‘অলিম্পিক্সের জন্য গত সাত-আট মাস ধরে চব্বিশ ঘণ্টাই পড়ে আছি বক্সিং নিয়ে। এর আগে দু’টো অলিম্পিক্সে নেমেছি। তাই এখানে নামার অভিজ্ঞতা আমার কাছে নতুন নয়। কঠোর পরিশ্রমে নিজেকে ডুবিয়ে রেখেছি। সকাল-বিকেল চার ঘণ্টা করে দিনে মোট আট ঘণ্টা অনুশীলন করি। পরিবার থেকে দূরে রয়েছি। সবই অলিম্পিক্স পদকের জন্য। কেরিয়ার শেষ করার আগে ওই পদকটা আমার চাই।’’
তা হলে কি পেশাদার বক্সিংয়ে ইতি টেনে দিলেন? বিকাশ এ বার তাঁর গোপন ইচ্ছার কথা শুনিয়ে বলেন, ‘‘অলিম্পিক্স থেকে পদক নিয়ে দেশে ফিরতে চাই। যা দেশের সেনাবাহিনীকে উৎসর্গ করার স্বপ্ন রয়েছে। তবে টোকিয়ো অলিম্পিক্স শেষ হয়ে গেলেই ফের পেশাদার বক্সিংয়ে ফিরে যাব।’’ লুকোছাপা না করেই বলেন, ‘‘গত বছর এশিয়ান গেমসের পরে পেশাদার বক্সিংয়ে যোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে লড়তে গিয়ে দেখেছি, বাউটগুলো বেশ কঠিন। রিংয়ে ক্রমাগত ‘পাঞ্চ’ করে যেতে হয়। না হলেই বিপক্ষ আপনার ঘাড়ে চেপে বসবে। ক্রমাগত এই ‘পাঞ্চিং’-এর জন্য প্রচুর শক্তি লাগে। তাই নিজের দমটা আরও বাড়াতে হবে। তা নিয়ে মাথা ঘামাব অলিম্পিক্সের পরেই।’’
গত বছর কমনওয়েলথ গেমসে ৭৫ কেজি বিভাগে নেমে সোনা জিতেছিলেন। কিন্তু টোকিয়োতে সেই বিভাগে নামছেন না বিকাশ। অলিম্পিক্সের জন্য তিনি প্রস্তুতি নিচ্ছেন ৬৯ কেজি বিভাগে। কেন? জানতে চাইলে বলেন, ‘‘আরে পেশাদার বক্সিংয়ে ওই বিভাগেই লড়ি। তাই অলিম্পিক্সেও ওই বিভাগে লড়তে চাই। কোচেদের জানাতে তাঁরাও সম্মতি দিয়েছেন।’’
১ ডিসেম্বর থেকে নেপালের কাঠমান্ডু ও পোখরায় ছিল সাউথ এশিয়ান গেমস। সেখান থেকেও সোনা নিয়ে ফিরেছেন বিকাশ। সেখানে সেরা হওয়ার পথে ভারতের এই বক্সার হারিয়েছেন পাকিস্তানের গুল জ়াইবকেও। প্রতিবেশী দেশের বক্সারকে হারিয়ে অবশ্য উচ্ছ্বসিত নন বিকাশ। বলছেন, ‘‘আসল লড়াই তো অলিম্পিক্সে। তার আগে বাছাই পর্বে নামতে হবে। ফেব্রুয়ারি মাসে যা অনুষ্ঠিত হবে চিনে। সেখানেও নিজের সেরাটা দিয়ে আগে টোকিয়োর টিকিট নিশ্চিত করতে হবে। আশা করছি, তা পেয়ে যাব। তার পরেই শুরু হবে জীবনের সব চেয়ে মূল্যবান পদকের জন্য চূড়ান্ত পর্বের প্রস্তুতি ও লড়াই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy