Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Cricket

টেল এন্ডারদের সঙ্গে ব্যাট করাও একটা শিল্প, বলছেন ম্যাচের সেরা অনুষ্টুপ

চাপের মুখে তাঁকে রুখে দাঁড়াতে দেখে অনেকেই বলছেন, অনুষ্টুপ মজুমদার তো বাংলার ‘ভিভিএস লক্ষ্ণণ’। আর প্রবল চাপে শান্ত থাকা বাংলার তারকা ক্রিকেটার কী বলছেন?

চাপের মুখে কথা বলল অনুষ্টুপের ব্যাট। ছবি— পিটিআই।

চাপের মুখে কথা বলল অনুষ্টুপের ব্যাট। ছবি— পিটিআই।

সৌরাংশু দেবনাথ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২০ ১৪:৫১
Share: Save:

পর পর দুটো নক আউট ম্যাচে গর্জে উঠল তাঁর ব্যাট। চাপের মুখে তাঁকে রুখে দাঁড়াতে দেখে অনেকেই বলছেন, অনুষ্টুপ মজুমদার তো বাংলার ‘ভিভিএস লক্ষ্ণণ’। ঠান্ডা মাথায় টেল এন্ডারদের সঙ্গে নিয়ে দলকে পৌঁছে দেন নিরাপদ আশ্রয়ে। প্রবল চাপের মুখেও কীভাবে শান্ত থাকেন তিনি? বাংলাকে ফাইনালে তোলার পরে অনুষ্টুপ যা বললেন …

বাংলার পেস বোলিং আক্রমণই কি এই ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিল?

পেস আক্রমণ আগেও ভালই ছিল। তবে এত ভাল কম্বিনেশন আগে ছিল না। আজ যেমন ঈশান (পোড়েল) ছন্দ পাচ্ছিল না। মুকেশ কিন্তু ঠিক জ্বলে উঠল। মুকেশ যে স্পেলটা করেছে, তা এক কথায় ফ্যানটাস্টিক। ওই ডেলিভারি ব্যাখ্যা করার মতো ভাষা আমার নেই। আমরা সবাই জানতাম, সকালের দিকে বল নড়ে। তাই আমার বিশ্বাস ছিল, কর্নাটক বেশিক্ষণ উইকেটে টিকতে পারবে না। মুকেশ আজ দুরন্ত স্পেল করে জ্বলে উঠেছে। ও যদি ব্যর্থ হত, তা হলে আকাশ জ্বলে উঠত। এটাই তো একটা চ্যাম্পিয়ন দলের লক্ষণ। প্রয়োজনের সময়ে কেউ না কেউ ঠিক জ্বলে ওঠে।

প্রথম ইনিংসে দলের প্ল্যানিং কী ছিল?

আমাদের লক্ষ্য ছিল তিনশো থেকে সাড়ে তিনশো রান তোলা। আমাদের যা দল, তাতে রঞ্জি ট্রফিতে আমাদের বিরুদ্ধে কোনও দলই ২৫০ তুলতে পারেনি। আমাদের বিশ্বাস ছিল যে বিপক্ষকে অল আউট করতে পারব। এরকম সিম বোলিং সহায়ক পিচে ২০০-২২০ রানে যে কোনও দলকে আউট করার ক্ষমতা রাখি। টার্নিং পিচ হোক বা যে কোনও পিচে জ্বলে উঠছে আমাদের বোলাররা।

চাপের মুখেও এত শান্ত থাকেন কী করে?

দীর্ঘিদন ধরে আমি খেলছি। অনেক চাপ নিয়ে খেলতে হয়েছে আমাকে। দশ বছর আগে যখন খেলতাম, তার থেকেও এখন মানসিক জোর বেশি। এখন আমি আগের থেকেও বেশি পরিণত। কোনও পরিস্থিতিতেই ঘাবড়ে যাই না। যে কোনও পরিস্থিতিতে নিজের স্বাভাবিক খেলা খেলে যাই।

আরও পড়ুন: বিধ্বংসী মুকেশ, ১৭৪ রানে জিতে ১৩ বছর পর রঞ্জির ফাইনালে বাংলা

ব্যাট করতে নামার আগে নিজেকে কীভাবে প্রস্তুত করেন?

আমি ছ’ নম্বরে ব্যাট করতে নামি। তার আগে ভাল করে ম্যাচটা ফলো করি। বিপক্ষের বোলাররা কে কেমন বল করছে, কাকে কোন পজিশনে দাঁড় করানো হচ্ছে, সেই মতো নিজেই একটা পরিকল্পনা করে নিই। মাঠে নেমে সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলে যাই।

আপনি তো ছ’ নম্বরে ব্যাট করতে নামেন। কিন্তু, সেই নতুন বলই তো আপনাকে ফেস করতে হচ্ছে?

নতুন বা পুরনো বলে খেলার টেকনিকই আলাদা। কয়েকটা ম্যাচে আমরা চাপে পড়ে গিয়েছি। আশা করছি, ফাইনালে সে রকম কিছু হবে না। টপ অর্ডার যদি ফাইনালে রান পায়, তা হলে আমরা ভাল জায়গাতেই থাকব বলে আমার বিশ্বাস। ব্যাটিং আমার কাছে চাপের নয়। মুকেশ যেমন বল করার সময়ে চাপ অনুভব করে না, আমারও তেমনই ব্যাট করার সময়ে চাপ হয় না। আমি শুধু নিজের প্রস্তুতিতে জোর দিই।

টেল এন্ডারদের নিয়ে এত শান্তভাবে কী ভাবে ব্যাট করেন?

ছয় বা সাত নম্বরে যে ব্যাট করতে নামে, তাকে তো টেল এন্ডারদের সঙ্গে ব্যাট করতেই হবে। টেল এন্ডারদের সঙ্গে ব্যাট করাও একটা শিল্প। কোন বোলারকে খেলতে দেবো, কোন বোলারকে খেলতে দেবো না, এগুলো ভাবনাচিন্তা করেই খেলতে হয়।

প্রথম ইনিংসে ১৪৯ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসের ৪১ রানও তো দারুণ গুরুত্বপূর্ণ?

দ্বিতীয় ইনিংসে একটা সময়ে সুদীপের সঙ্গে জুটি বেঁধেছিলাম। তার পরে শ্রীবৎস ও সুদীপ পর পর আউট হয়ে গেল। পরে শাহবাজের সঙ্গে পঞ্চাশের বেশি রানের পার্টনারশিপ হল। শাহবাজ একটা খারাপ শটে আউট হয়ে গেল। সেই সময়ে আমি নিজেকে বলেছিলাম, শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে যেতে হবে। সেই সময়ে কর্নাটকও বেশ ভাল বল করছিল। মুভমেন্ট করাচ্ছিল। আমি নিজের লক্ষ্যে অবিচল ছিলাম।

আরও পড়ুন: খাদের ধার থেকে ফিরে দুরন্ত জয়, কী ভাবে ম্যাচের মোড় ঘোরালো বাংলা?

কোচ অরুণ লালের অবদান?

অনেক অবদান। ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না তা। আমরা প্রথম থেকেই একটা স্বপ্ন নিয়ে এগিয়েছি। একটা স্বপ্নের পিছনে দৌড়চ্ছিলাম। কোচ আমাদের ফিট রাখার জন্য প্রচুর দৌড় করিয়েছেন। আজ তার ফল পাচ্ছি।

অন্য বিষয়গুলি:

Bengal Ranji Trophy Final Anustup Majumdar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy