সতর্ক: বেঙ্গালুরুতে মরণ-বাঁচন টেস্ট। আইপিএল হোমে ভারত অধিনায়ক কোহালি মহড়ায় মগ্ন। ছবি: পিটিআই।
মিচেল স্টার্ক এবং অস্ট্রেলিয়ার রিভার্স সুইং মন্ত্রকে উড়িয়ে দিচ্ছেন বেঙ্গালুরুর ঘরের তারকা বেঙ্কটেশ প্রসাদ। তাঁর মতে, বেঙ্গালুরুতে সুইং হবে। তবে সেটা নতুন বলে সুইং। রাহুল দ্রাবিড়, গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথদের শহরে ভাল কিছু করতে গেলে শুরুর দিকেই ভয়ঙ্কর হতে হবে পেসারদের, মনে করছেন প্রসাদ।
ভারতীয় দলের প্রাক্তন মিডিয়াম পেসার ক’দিন ধরে বেঙ্গালুরুতে ছিলেন না। বৃহস্পতিবারই নিজের শহরে ফিরছিলেন গাড়ি করে। তখনই মোবাইল ফোনে আসন্ন টেস্ট নিয়ে তাঁর বিশ্লেষণ জানতে চাওয়ায় বললেন, ‘‘আমি জানি না স্টার্ক বা অস্ট্রেলিয়ার কী দেখে মনে হল যে, এখানে রিভার্স সুইং পাবে। বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা হিসেবে বলতে পারি, এখানে উইকেট খুব শুকনো না থাকলে রিভার্স সুইং পাওয়া কঠিন।’’
নিজে অনেক ম্যাচ খেলেছেন ঘরের মাঠে। কিন্তু কখনও টেস্ট খেলা হয়নি। যে আক্ষেপ আজও রয়ে গিয়েছে প্রসাদের। বৃহস্পতিবারও বললেন, ‘‘আমার ক্রিকেট জীবনের সবচেয়ে বড় আফসোস এটাই থেকে গেল। ঘরের মাঠে টেস্টই খেলা হল না।’’ তার পরেই চলে গেলেন বেঙ্গালুরুর উইকেট প্রসঙ্গে। ‘‘পেসাররা বেঙ্গালুরুতে সাহায্য পেয়ে থাকে। যদি কেউ কোমর বেঁকিয়ে গতি তোলার চেষ্টা করে, তা হলে চিন্নাস্বামীতে গতি পাবে। স্টার্ক সেই সুবিধে পেতে পারে। কিন্তু রিভার্স সুইং পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।’’ কেন? প্রসাদের ব্যাখ্য, ‘‘চিন্নাস্বামীতে পিচ খুব শুকনো থাকে না। আউটফিল্ড একদম সবুজ গালিচার মতো। এখানে বলের পালিশ তাড়াতাড়ি ওঠে না।’’
কিন্তু প্রসাদের মনে কোনও সন্দেহ নেই যে, চিরাচরিত চিন্নাস্বামী উইকেট থাকলে পেসারদের জন্য কিছু সাহায্য থাকবেই। বললেন, ‘‘ছোটবেলা থেকে দেখছি এখানকার পিচ কিছুটা হলেও পেসারদের সাহায্য করে। সেই কারণে কর্নাটক থেকে অনেক পেসার বেরিয়েছে। শ্রীনাথ, আমি, ডোডা গণেশ। পরের দিকে বিনয় কুমার। আর ব্যাটসম্যানরাও রান করতে পারে। স্ট্রোক নেওয়া যায়।’’
কিন্তু পেসারদের কথা ভেবে কি আর পিচ হয় ভারতে? বল ঘুরবে না চিন্নাস্বামীতে? প্রসাদের জবাব, ‘‘বল নিশ্চয়ই ঘোরে। স্পিনাররাও সাহায্য পায়। তবে সেটা সাধারণত ম্যাচের তৃতীয় বা চতুর্থ দিন থেকে পাওয়া যায়।’’ বলেই দ্রুত যোগ করতে চান, ‘‘তবে আমি কিন্তু গত কয়েক দিনের মধ্যে চিন্নাস্বামীর দিকে যাইনি। তাই জানি না কী রকম পিচ হচ্ছে টেস্টের জন্য। এখনও তো দু’দিন বাকি।’’
“চিন্নাস্বামীতে আউটফিল্ড সবুজ গালিচার মতো। বলের পালিশ দ্রুত ওঠে না।” —বেঙ্কটেশ প্রসাদ।
দু’দলের পেসারদের মধ্যে কাদের এগিয়ে রাখবেন? প্রসাদ তুলনায় যেতে চান না। তবে ভারতীয় পেসারদের নিয়ে উচ্ছ্বসিত শোনাল তাঁকে। ‘‘আমাদের পেসাররা খুব ভাল বল করছে। ভারতের এই পরিবেশে জোরে বোলারদের সফল হওয়া খুব কঠিন। কিন্তু আমাদের পেসাররা এখন দেশের মাটিতেও জেতাচ্ছে।’’
ভারতীয় পেস বোলিং দলগত ভাবেই অনেক উন্নতি করেছে বলে মনে করছেন দেশের প্রাক্তন বোলিং কোচ প্রসাদ। তাঁর মতে, ‘‘লক্ষ্যটা রাখতে হয় দল হিসাবে উন্নতি করার। সেটাই এখন হচ্ছে। ব্যাটিং ইউনিট যেমন উন্নতি করবে, তেমনই বোলারদেরও গ্রুপ হিসেবে এগিয়ে চলতে হবে।’’ উমেশ যাদব, ভুবনেশ্বর কুমারদের এই সাফল্যের জন্য অধিনায়ক বিরাট কোহালিকে কৃতিত্ব দিতে চান বর্তমানে ভারতের জুনিয়র নির্বাচকদের প্রধান। তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘‘পেসারদের জন্য খুব আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং সাজায় বিরাট। সারাক্ষণ গিয়ে গিয়ে কথা বলে ওদের সঙ্গে, ওদের চাঙ্গা রাখার চেষ্টা করে। ক্যাপ্টেনের এমন সমর্থন পেলে একজন পেস বোলার জানপ্রাণ দিয়ে দেবে।’
সিরিজ রক্ষা করার জন্য বেঙ্গালুরুতে হয় এসপার-নয় ওসপার টেস্ট অধিনায়ক কোহালির। ভারতীয় শিবির আশা করবে, বেঙ্গালুরুর ঘরের ছেলের মন্তব্যই যেন সঠিক হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy