ভারতীয় ক্রিকেট দল। ইনসেটে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
ভারত ও বাংলাদেশ যে শেষ বার কোনও ত্রিদেশীয় প্রতিযোগিতার ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল কলম্বোয়, নিদাহাস ট্রফিতে, তা নিশ্চয়ই অনেকের মনে আছে। ম্যাচটা ভুলে যাওয়ার মতোও নয়। শেষ ওভারে দীনেশ কার্তিকের ছয় মেরে ভারতকে জেতানো কি সহজে ভোলা যায়? বাংলাদেশ সে দিন চার উইকেটে হেরেছিল বটে, কিন্তু ওদের ক্রিকেটাররা সে দিন মাথা উঁচু করে মাঠ ছেড়েছিলেন। আজ, শুক্রবার আবার এক ফাইনালে মুখোমুখি সেই দুই দল। এ বার এশিয়া কাপ। আর এ বারও অধিনায়ক সেই রোহিত শর্মা।
এই প্রতিযোগিতায় ভারতকে অপ্রতিরোধ্য মনে হচ্ছে। হংকংয়ের বিরুদ্ধে হোঁচট খেয়ে শুরুর পর থেকে রোহিতরা ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছেন। ফাইনালে ওঁদের হারানো মোটেই সোজা হবে না। রোহিত ও শিখর ধওয়ন দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে বিশ্রাম নেওয়ার পরে শুক্রবার ওঁরা নিশ্চয়ই আরও তরতাজা হয়ে উঠবেন। বাংলাদেশকে লড়াইয়ে থাকতে গেলে আগে এই দু’জনকে বাগে আনতে হবে। না হলেই বিপদ। দুই ওপেনারের সেরা ফর্মে থাকা মানে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের বেশি চাপে ভুগতে হয় না।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে দল নিয়ে খেলেছে ভারত, আশা করি, সেই দলে কোনও বদল করা হবে না। যশপ্রীত বুমরা ও ভুবনেশ্বর কুমারকে সামলানো বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। দু’জনেই অসাধারণ বোলিং করছেন। বিশেষ করে বুমরা, যিনি সব ধরনের ক্রিকেটেই সমান ভাল। এতেই প্রমাণ হয় যে, প্রতিভা থাকলে, যে কোনও ধরনের ক্রিকেটের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কঠিন হয়ে ওঠে না।
আরও পড়ুন: একটা ট্রফিতে বিচার করবেন না: মর্তুজা
বাংলাদেশকে যদি লড়াই করার জায়গায় থাকতে হয়, তা হলে তাদের আগে ব্যাট করে ২৭৫ রান তুলতেই হবে। এর চেয়ে কম রান তুললে কিন্তু ভারতকে হারানো সোজা হবে না। শাকিব-আল-হাসানের চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়াটা মাশরফি মর্তুজাদের পক্ষে মোটেই ভাল খবর নয়। ওর বোলিং বাংলাদেশের আক্রমণে একটা ভারসাম্য এনে দিচ্ছিল। তবে তিন নম্বরে ব্যাট করতে পাঠিয়ে শাকিবকে বোধহয় চাপে ফেলে দিয়েছিল ওদের টিম ম্যানেজমেন্ট। বড় ম্যাচে বাংলাদেশ বরাবরই মুশফিকুর রহিমের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল। কিন্তু সব ম্যাচেই তো আর তিনি বিপদ থেকে দলকে টেনে তুলতে পারবেন না। স্টাম্পের পিছনে দাঁড়িয়ে ওঁকে যে পরিমান চাপ নিতে হয়, তার পরেও মুশফিকুরের কাছ থেকে বাড়তি কিছু আশা করাটা বোধহয় ঠিক না। দলের অন্যদেরও ওঁর পাশে দাঁড়ানো উচিত।
এক দিকে যখন সাময়িক সুপ্ত থাকার পরে এশিয়া কাপে ফের মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ, অন্য দিকে এ মহাদেশের ক্রিকেটে একটা শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে আফগানিস্তান। এগুলো যেমন এশীয় ক্রিকেটের পক্ষে ভাল খবর, তেমন পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার অপ্রত্যাশিত ব্যর্থতা অবশ্যই একটা দুঃসংবাদ। পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দল যদি দীর্ঘদিন ধরে প্রত্যাশার স্তরে থাকতে না পারে, তা হলে সত্যিই তা চিন্তার বিষয়। মনে হচ্ছে অদূর ভবিষ্যতে ওরা কোনও আশার আলো দেখতে পাচ্ছে না।
অতীতে বহু ক্রিকেট কিংবদন্তি উঠে এসেছেন এই সব দেশ থেকে। তাই ওদের সাহায্য করতে ক্রিকেট বিশ্বের বড় মাথাদের একত্র হওয়াটা খুব জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy