অপেক্ষা: কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের অন্যতম কোচ অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার।
জ়িম্বাবোয়ের হয়ে ৬৩টি টেস্ট ও ২১২টি ওয়ান ডে খেলেছেন অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার। টেস্টে রান ৪৭৯৪, ওয়ান ডে-তে ৬৭৮৬। জনপ্রিয় ছিলেন স্পিনারদের বিরুদ্ধে দাপুটে ব্যাটিংয়ের জন্য। সুইপ ও রিভার্স সুইপের সাহায্যে যে স্পিনারদের বিরুদ্ধে অনায়াসে রান করা যায়, তা দেখিয়ে গিয়েছেন অ্যান্ডি। কোচিং জীবনেও নজর কাড়েন। তাঁর প্রশিক্ষণে টেস্টে এক নম্বর দল হয় ইংল্যান্ড। চ্যাম্পিয়ন হয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও।
বর্তমানে তিনি ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে সেন্ট লুসিয়া জ়ুকসের কোচ। আপাতত রয়েছেন জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে। ম্যাচ ও প্র্যাক্টিস ছাড়া হোটেল থেকে বেরোতে পারছেন না। ক্রিকেটারদের সঙ্গেই সারা দিন বিভিন্ন আলোচনা করে দিন কাটছে অ্যান্ডির। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই জানাচ্ছেন, সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে ক্রিকেটারদের শারীরিক সুরক্ষার সঙ্গেই খেয়াল রাখতে হবে মানসিক স্থিরতার। কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের সহকারী কোচ মনে করেন, দুবাইয়ে কে এল রাহুলদের সুরক্ষা বলয়ে তাঁদের সঙ্গে রাখা হোক একজন মনোবিদও।
শনিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে আনন্দবাজারকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে অ্যান্ডি বলছিলেন, ‘‘ম্যাচে তো সবাই পারফর্ম করে না। যারা কোনও ভাবে ব্যর্থ হয়, তাদের জন্য সেই ইনিংস অথবা ম্যাচটি ভুলে যাওয়ার প্রয়োজন খুব বেশি। সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থেকে ক্রিকেটের বাইরে ভাবনাচিন্তা করা কঠিন। বাইরে ঘুরে মন হাল্কা করার সুযোগ নেই।’’ যোগ করেন, ‘‘ফলে সেই ম্যাচ অথবা ইনিংস ভুলতে সমস্যা হয়। যার প্রভাব পড়ে পরের ম্যাচেও। তাই দলের সঙ্গে এমন একজনের প্রয়োজন যার সঙ্গে খোলা মনে আলোচনা করা যায়। অবসাদ গ্রাস করলে তা জানাতে পারবে সহজেই।’’
জামাইকায় থাকলেও জ়ুম কলের মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন অনিল কুম্বলে এবং কে এল রাহুলের সঙ্গে। দল নিয়ে অনেক পরিকল্পনাই হয়েছে। অ্যান্ডির কথায়, ‘‘কুম্বলে আর আমি বহু দিনের বন্ধু। বোঝাপড়া তৈরি করতে সময় লাগবে না। দলে রাহুলের মতো দুর্দান্ত অধিনায়ক পেয়েছি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যার পরিসংখ্যান নজর কাড়ার মতো। দলের তরুণ ক্রিকেটারেরা ওর থেকে অনেক পরামর্শ পাবে। রাহুলের মাথাও ঠান্ডা। এ রকমই একজন নেতার প্রয়োজন ছিল দলে।’’
জিম্বাবোয়ের হয়ে খেললেও অ্যান্ডি তাঁর কোচিং জীবনে জনপ্রিয়তা পান ইংল্যান্ডে। ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের চুক্তিতে ছিলেন ১২ বছর। টেস্ট দলের কোচিং করিয়েছেন। ২০১০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলের কোচ ছিলেন। ইংল্যান্ড লায়নস দলকেও প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। ইংল্যান্ডে এত বছর কাটানোর সুবাদে কাছ থেকে দেখেছেন জেমস অ্যান্ডারসনের উন্নতি। ব্যাটসম্যানের পায়ের সামনে থেকে বল আউটসুইং করানোর জন্য বদলাতে হয়েছে ডেলিভারি। কব্জির অবস্থানেও পরিবর্তন আনতে হয় জিমিকে। অ্যান্ডির স্মৃতিচারণা, ‘‘দিনে পাঁচ ঘণ্টা বল করত জিমি। কী ভাবে দেরিতে সুইং করানো যায় তা আয়ত্তে আনতে পরিশ্রম করতে হয়েছে। কব্জির অবস্থান অন্য রকম করতে হয়েছে। তাতে বদলেছে বলের ‘সিম’ পজিশন। তবেই না ব্যাটের সামনে থেকে সুইং করে বেরিয়ে যাচ্ছে ডেলিভারি। একজন পেসার টেস্টে ৬০০ উইকেট পাবে, কেউ ভাবতে পেরেছিল? ওর এই সাফল্যে আমি খুব খুশি। নিজের চোখে দেখেছি ওর নিষ্ঠা, পরিশ্রম, সাধনায় কোনও খামতি ছিল না।’’
জ়িম্বাবোয়ের ক্রিকেট থেকে এক সময় উঠে এসেছেন অ্যান্ডি, গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ার, হিথ স্ট্রিক, টাইবু, ব্রেন্ডন টেলরের মতো তারকা। কিন্তু সে দেশে ক্রিকেটের এই পরিণতি কেন? আফগানিস্তান, বাংলাদেশের মতো দল দেরিতে ক্রিকেট শুরু করেও ছাপিয়ে গিয়েছে তাদের। বিমর্ষ অ্যান্ডি বলে ওঠেন, ‘‘আমাদের দেশে ক্রিকেটের পতনের সব চেয়ে বড় কারণ দুর্নীতি। তা শেষ করে দিল জ়িম্বাবোয়ের ক্রিকেট সংস্কৃতি।’’ তিনি নিজে কোনও ভাবে দেশের ক্রিকেটের উন্নতির জন্য সাহায্য করবেন? অ্যান্ডির সাফ উত্তর, ‘‘কেন দেশে ফিরব? এ রকম কারও সঙ্গে কাজ করব না, যারা দুর্নীতির সমর্থক।’’
সিপিএল শেষ হলেই দুবাই উড়ে আসবেন। যোগ দেবেন কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের অধরা আইপিএল জয়ের অভিযানে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy