কলকাতায় সাংবাদিক সম্মেলনে নতুন আইপিএল মালিক সঞ্জীব গোয়েন্কা। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
বক্তা কলকাতাবাসী প্রথম আইপিএল মালিক। সাত বছর আগে কলকাতা টিম কিনতে চেয়ে বিডিংয়ে হেরে যান। এ বার এত টাকা খরচ করে মাত্র দু’বছরের জন্য পুণে টিম কেনায় ক্রিকেট-বাণিজ্য মহলে তীব্র বিস্ময় সৃষ্টি হয়েছে, কী করে টাকা ফেরত আসবে? সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কি সত্যি প্রভাবিত করেছেন আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত? ফোনে রাতের দিকে ধরা গেল এটিকে এবং পুণে মালিক সঞ্জীব গোয়েন্কা-কে...।
প্রশ্ন: ধোনি না অশ্বিন? কাকে নেবেন?
সঞ্জীব: ওরে বাবা কিছু ঠিক করিনি এখনও।
প্র: প্রথম বাছাইয়ের অধিকার আপনার। তাই এই সম্ভাব্য নির্বাচন নিয়ে ক্রিকেটমহলে অলরেডি জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। এক দিকে ধোনি তাঁর যাবতীয় ক্যারিশমা আর এনডোর্সমেন্টের ভারী বাজার সমেত। ও দিকে অশ্বিন, যিনি উদিত সূর্য। প্রশ্ন হল, এটা কে ঠিক করবে? আপনি না টিম কোচ?
সঞ্জীব: খুব সত্যি কথা বলছি। টিম পাব এটা নিয়ে আমি একেবারে নিশ্চিত ছিলাম না। তাই আগে যতটা ভাবা উচিত ছিল, হয়নি। যদি কোচ আগে ঠিক করি তা হলে কোচের সঙ্গে বসেই সিলেকশনটা হবে।
প্র: আপনার আইডিয়াল কোচ হতে পারতেন রাহুল দ্রাবিড়। যিনি আপনার বন্ধুও। কিন্তু দ্রাবিড় যেহেতু যুব ভারতীয় দলের কোচ, তিনি বোর্ডের অনুমতি পাবেন না।
সঞ্জীব: জানি দ্রাবিড় সম্ভব নয়। অন্য কাউকে ভাবতে হবে।
প্র: স্টিভন ফ্লেমিং?
সঞ্জীব: বললাম তো কিছুই ভাবা হয়নি। দ্রুতই টিমের নাম ঠিক করতে হবে। তার পর কোচ, প্লেয়ার, সিস্টেম এই সব। আমার এখন চব্বিশ ঘণ্টা দরকার এক্সক্লুসিভলি এই ব্যাপারটায় মাথা দেওয়ার জন্য।
প্র: অনেকের ধারণা যে, সাত বছর আগে কলকাতা টিম না পাওয়ার ঘা আপনি বয়ে বেড়াচ্ছিলেন আর তাই যথেষ্ট ব্যবসায়িক কারণ না থেকেও দু’বছরে ৩২ কোটি টাকা খরচা করে টিম কিনে ফেললেন। এটা তো শুধু বোর্ডকে। এর পর প্লেয়ারদের টাকা। ম্যাচ আয়োজনের খরচ। কোথা থেকে উঠবে এত টাকা?
সঞ্জীব: কলকাতা টিম না পাওয়ার কথাটা আর বলবেন না। ওটা আমার সিস্টেম থেকে বের করে দিয়েছি।
প্র: অনেকের আজও বিশ্বাস যে, তখনকার আইপিএল প্রধান ললিত মোদী আপনার টিম না পাওয়ার নেপথ্যে ছিলেন।
সঞ্জীব: ছেড়ে দিন। ওই চ্যাপ্টারটা থাক। আমি ভুলে গেছি সব। তবে এটা ঠিক যে, সে বার খুব আশা করে বসেছিলাম। কনফিডেন্টও ছিলাম যে কলকাতা পাব।
প্র: আপনার কথা থেকে আরও বোঝা যাচ্ছে এই বারের টিম কেনাটা আবেগের সিদ্ধান্ত। যুক্তির নয়।
সঞ্জীব: শুনুন, ক্রিকেট আমি খুব ভালবাসি। কিন্তু তা বলে এমন নয় যে স্রেফ আবেগের বশে বা কবে কোন টিম পাইনি বলে এত টাকা খরচ করে বসব। এটা সম্পূর্ণ ঠান্ডা মাথার ধুরন্ধর এক ব্যবসায়ীর সিদ্ধান্ত যে ঘটনাচক্রে ক্রিকেট ভালবাসে।
প্র: কিন্তু এটিকে নিয়েই তো আপনার আর্থিক ক্ষতি হয়ে চলেছে। তার পর আইপিএল পুণে কেন? এটাই তো কেউ বুঝতে পারছে না।
সঞ্জীব: এটিকে তো জানাই রয়েছে যে তিন-চার বছর পর্যন্ত ব্রেক ইভেন হবে না। ওটা নিয়ে আদৌ আমার কোনও হতাশা নেই। আর পুণে কিন্তু খুব সম্পন্ন শহর। অনেক ব্যবসায়িক সুযোগ রয়েছে। অলরেডি সম্ভাব্য স্পনসরদের ফোন আসছে। পুণেতে বড় কর্পোরেটস রয়েছে। আবার ইয়ংস্টাররাও সংখ্যায় খুব বেশি। আমাদের টিম ক্যালকুলেট করে দেখেছে স্টেডিয়ামটায় এত ভাল ব্যবস্থা, কার পার্কিংয়ে প্রায় দশ হাজার গাড়ি থাকার ব্যবস্থা। টিকিট বিক্রির হার সব কিছু পজিটিভ। আপনার আগের প্রশ্নের রেশ ধরে আবার বলি, ব্যবসায়িক অ্যাঙ্গল না থাকলে এক পা-ও বাড়াতাম না। আর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আমাদের টিম পূর্ণাঙ্গ স্টাডি করার পর তবেই নেওয়া হয়েছে।
আইপিএল জল্পনার মধ্যে ধোনির ব্যস্ততা বিজয় হাজারেতে।
মঙ্গলবার শামির সঙ্গে বেঙ্গালুরুর এনসিএতে। ছবি: পিটিআই
প্র: কিন্তু দু’বছরেই তো কাহিনি শেষ।
সঞ্জীব: হ্যাঁ সেটা আর কী করা যাবে। এটা তো আর আমাদের হাতে নেই।
প্র: সৌরভের মিটিংয়ে থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যে এটা স্বার্থের সংঘাত।
সঞ্জীব: কী স্টুপিড অভিযোগ।
প্র: এ বার তো ওয়াক-ইন বিড হয়েছে। শুনলাম আপনার টিম নিজেরাই জানত না খামের ভেতর কী আছে? যা হয়েছে, সবার সামনে। খামও নাকি বোর্ড কর্তারা নিজেরা খোলেননি।
সঞ্জীব: অ্যাবসলিউটলি। সৌরভ কোথায় এর মধ্যে! বরঞ্চ আমি সে দিন সল্টলেক স্টেডিয়ামে খেলার মধ্যে ওকে জিজ্ঞেস করে ফেলেছিলাম পুণে কেমন হবে? ও তো পুণের ক্যাপ্টেন ছিল। কেমন পুণের পরিস্থিতি? সৌরভ দ্রুত মুখটা ঘুরিয়ে নিল। তখনই হঠাৎ খেয়াল হল, আরে এই প্রশ্নটা তো ওকে আমি করতে পারি না। করে বেচারিকে লজ্জাতেই ফেললাম। কাজেই আজকের সমালোচনাটা হাস্যকর।
প্র: শোনা যাচ্ছে আইপিটিএলও আপনি কলকাতায় আনছেন। ফুটবল, ক্রিকেট, টেনিস তিনটেতেই তা হলে আপনি ঢুকে যাচ্ছেন?
সঞ্জীব: আইপিএল নিয়েই আজ থেকে জেরবার হয়ে যাচ্ছি। আবার টেনিস কোত্থেকে ঢোকাচ্ছেন?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy