ওয়াংখেড়েতে ক্যাপ্টেন কোহালি।–পিটিআই
বিশ্বকাপ জয়ের মঞ্চে প্রস্তুতি চলছিল টেস্ট সিরিজ জেতার।
এমন সময়ে ধাক্কা।
অজিঙ্ক রাহানের ডান হাতের তর্জনির হাড়ে চিড়।
মহম্মদ শামির হাঁটু ফুলে গিয়েছে।
এ ভাবে যুদ্ধ চালানো যায়?
আহতদের তালিকা ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে দেখে বুধবার তড়িঘড়ি রাহানের জায়গায় মণীশ পাণ্ডে ও শামির কভার হিসেবে শার্দূল ঠাকুরকে দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেয় বোর্ড। রাহানে যে শেষ দুটো টেস্টে নেই, তা জানিয়েই দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শামি খেলতে পারবেন কি না, সেই সিদ্ধান্ত সন্ধ্যা পর্যন্ত নিতে পারেনি ভারতীয় শিবির।
যে হাঁটুতে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের পরে অস্ত্রোপচার হয়েছিল, সমস্যা সেই হাঁটুতেই। ক্যাপ্টেন বিরাট কোহালি বলছেন, ‘‘মোহালি টেস্টের পর থেকেই ওর হাঁটুতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। যেহেতু ওর হাঁটুতে একবার অপারেশন হয়ে গিয়েছে, তাই ওকে জোর করে খেলানোর কোনও প্রশ্নই ওঠে না। দেখা যাক শামির হাঁটুর অবস্থা কেমন থাকে। তার উপরই নির্ভর করছে ওর এই টেস্টে খেলা বা না খেলা।’’
চলতি সিরিজে ছ’ইনিংসে ১০৩ ওভার বল করেছেন শামি। মোহালিতেই দু’ইনিংস মিলিয়ে ৩৬ ওভার বল করতে হয়েছে তাঁকে। নিয়েছেন দশটা উইকেটও। এর পর তাঁর হাঁটু বিদ্রোহ করতেই পারে। এই সময় আবার ইশান্ত শর্মাকেও ছেড়ে দিতে হয়েছে তাঁর বিয়ের জন্য। শামি শেষ পর্যন্ত না খেলতে পারলে তাই উমেশ যাদব, ভুবনেশ্বর কুমারের উপরই নির্ভর করতে হবে বিরাটদের।
চোট পাওয়া দুই টিমমেট
এক দিকে যেমন দলের প্রধান স্ট্রাইক বোলারকে না পাওয়ার আশঙ্কা, তেমনই মিডল অর্ডারের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানের না থাকার সমস্যা। সব মিলিয়ে ভারতীয় শিবির কিছুটা হলেও চাপে। তবে তা স্বীকার করতে রাজি নন কোহালি। সাংবাদিক বৈঠকে এ দিন তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দলটা এখন এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে যে, কেউ খারাপ খেললে বা না খেলতে পারলে সেটা মেক-আপ দেওয়ার মতো কেউ না কেউ থাকছেই। যখন নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজে আমি রান পাচ্ছিলাম না, তখন অজিঙ্ক সেই অভাব পূরণ করে দিচ্ছিল। এ বারও আশা করি সে রকমই কিছু হবে। এটাই তো টিম স্পোর্ট।’’ রাহানে যে খুব একটা ভাল ফর্মে রয়েছেন এই সিরিজে, তা নয়। পাঁচ ইনিংসে মাত্র ৬৩ রান পেয়েছেন তিনি। বরং লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা টিম ইন্ডিয়াকে অনেক বেশি ভরসা জোগাচ্ছে। সেই প্রসঙ্গ তুলতে কোহালির মুখে জয়ন্ত যাদবের কথাই বেশি, ‘‘মাত্র দুটো টেস্ট খেলেছে ছেলেটা। অথচ এখনই ওকে অলরাউন্ডার বলতে পারা যায়। ওকে কিছু বলতে হয় না। নিজেই নিজের ফিল্ড সেট করে। ও জানে ওকে ঠিক কোথায় বল করতে হবে। মাঝে মাঝে ওকে মিড-অন একটু পিছিয়ে রাখতে বললে বলে, তার দরকার নেই। কী আত্মবিশ্বাস! আগামী কয়েক বছরে ওর কাছ থেকে প্রচুর ম্যাচ উইনিং পারফরম্যান্স দেখবেন। ’’
তবে কেএল রাহুলই যে মুরলী বিজয়ের সঙ্গে ওয়াংখেড়েতে ওপেন করতে নামবেন, তা পরিষ্কার জানিয়েই দিলেন ভারত অধিনায়ক। রাহানে না থাকায় করুণ নায়ারের জায়গাটাও সম্ভবত রয়ে গেল।
বিরাটের সংসারে যখন কিছুটা হলেও অভাব-অনটনের হতাশা, অ্যালিস্টার কুকের ঘরে তখন পাল্টা যুদ্ধের প্রস্তুতি। ওয়াংখেড়েতে যে যুদ্ধ নিয়ে এ দিন সুপ্রিম কোর্টের ছাড়পত্র পেয়ে গেল বিসিসিআই। বোর্ডের তরফ থেকে শীর্ষ আদালতে আবেদন করা হয়, ম্যাচ সংগঠনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ মঞ্জুর করতে। এ দিন সুপ্রিম কোর্ট শেষ দুই টেস্ট ম্যাচ এবং ওয়ান ডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য মোট ২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করে।
ওয়াংখেড়ে ইংল্যান্ডের পয়া মাঠ। এখানে সাতটা টেস্টের তিনটেতে জিতেছে ইংল্যান্ড। একটাতে ড্র করেছে। তার উপর সদ্য কয়েকটা ক্রিকেটহীন দিন কাটিয়ে তাজা হয়ে এলেন ইংরেজরা। এ সবের পর এ বার রাজকোট টেস্টকে ঘুরে দাঁড়ানোর মডেল হিসেবে সামনে রাখছে ইংল্যান্ড শিবির। কয়েক দিন আগে কোচ ট্রেভর বেলিস যে সে দেশের মিডিয়ায় বলেছেন, ‘‘দলের ছেলেরা সেই লড়াকু মানসিকতা আর সদিচ্ছা নিয়ে খেলছে না,’’ সেটা বেশ গায়ে লেগেছে কুকদের। বুধবার তা জানিয়ে দিয়েই ইংল্যান্ড ক্যাপ্টেন বলেন, ‘‘কোচ বলেছেন বলে নয়। আমাদের নিজেদেরও উপলব্ধি এটা। যে মানসিকতা নিয়ে আমরা রাজকোটে প্রথম টেস্ট খেলেছি, যে সদিচ্ছা নিয়ে বিশাখাপত্তনমে আমরা দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করেছি, মোহালিতে কোথাও না কোথাও তার মধ্যে একটা খামতি ছিল হয়তো। মোহালিতে হারের পর আমরা ঠিক করেছি, রাজকোটের দিনগুলোতে ফিরে যাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy