(বাঁ দিক থেকে) আমেরিকার হবু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ধনকুবের ইলন মাস্ক, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। —ফাইল চিত্র।
ভোট হয়ে গিয়েছে গত ৫ নভেম্বর। ১৯ দিন আগে। কিন্তু এখনও আমেরিকার সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ ক্যালিফর্নিয়ার ভোটের ফলাফল অঘোষিত। আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও ওই প্রদেশের ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি। যদিও সামগ্রিক ভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আমেরিকার ‘রায়’ স্পষ্ট। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে হোয়াইট হাউসের কুর্সিতে ফিরছেন রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতীয় বংশোদ্ভূত ডেমোক্র্যাট প্রার্থী তথা ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে অধিকাংশ প্রদেশেই পরাজিত করেছেন তিনি। কিন্তু ক্যালিফর্নিয়ায় কেন এখনও ভোটগণনা সম্পূর্ণ হল না? সম্প্রতি ভারতের দৃষ্টান্ত টেনে গণনাপ্রক্রিয়া নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ইলন মাস্কও।
ট্রাম্পের নতুন সরকারের দক্ষতা বিভাগের প্রধান হিসাবে মনোনীত হয়েছেন আমেরিকার ধনকুবের মাস্ক। শনিবার ভারতের নির্বাচনী গণনা সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘‘ভারত এক দিনে ৬ কোটি ৪০ লক্ষ ভোট গুনে ফেলেছে। ভোটের ফল ঘোষণা করেছে। কিন্তু ক্যালিফর্নিয়ায় এখনও গণনা চলছে।’’ এর পর হতাশাসূচক একটি ইমোজি দিয়েছেন এক্সের মালিক মাস্ক। জুন মাসে ভারতে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছিল। ভোটগণনা হয়েছিল ৪ জুন। সেই গণনা প্রক্রিয়ার দৃষ্টান্তই মাস্ক টেনেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
কিন্তু কেন ক্যালিফর্নিয়ায় এই বিলম্ব? কী পদ্ধতিতে ভোটগণনা হয় সেখানে? আর কত গণনাই বা বাকি রয়েছে?
আমেরিকার সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ক্যালিফর্নিয়ায় ৯৮ শতাংশ ভোট গণনা করা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও ভোটের ফল ঘোষণা করা হয়নি। যদিও সংবাদ সংস্থা এপি ইতিমধ্যে ওই প্রদেশে হ্যারিসকে জয়ী ঘোষণা করে দিয়েছে। এপির রিপোর্ট অনুযায়ী, ক্যালিফর্নিয়ায় ৫৮.৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন হ্যারিসের দলের প্রার্থী। ট্রাম্পের দলের প্রার্থী পেয়েছেন ৩৮.২ শতাংশ ভোট।
জনবহুল ক্যালিফর্নিয়ায় ৩ কোটি ৯০ লক্ষ মানুষের বাস। তাঁদের মধ্যে দেড় কোটির বেশি মানুষ নভেম্বরের শুরুতে ভোটপ্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন। এই প্রদেশে ভোটগণনায় বিলম্বের অন্যতম কারণ ভোটগ্রহণের পদ্ধতি, যা আমেরিকার অন্যান্য প্রদেশের চেয়ে কিছুটা আলাদা।
ক্যালিফর্নিয়ায় মোট তিন ভাবে ভোট দেওয়া যায়—
ইমেলের মাধ্যমে ভোট: প্রদেশের প্রত্যেক ভোটারকে ভোটের আগে সরকারের তরফে ব্যালট পেপার ইমেলের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তাতে ভোট দিয়ে নির্ধারিত দিনের মধ্যে জমা দিতে হয় ব্যালট। ইমেলের মাধ্যমে কিংবা সংশ্লিষ্ট দফতরে গিয়ে ব্যালট জমা দিতে পারেন ভোটারেরা।
সময়ের আগে দফতরে গিয়ে ভোট: চাইলে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে গিয়ে ভোট দিতে পারেন ক্যালিফর্নিয়ার মানুষ। মূল ভোটের দিনের আগে নিজেদের দফতরে ভোটগ্রহণ করে থাকেন আধিকারিকেরা। কোথায় কোথায় ভোট নেওয়া হচ্ছে, তা আগে থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
নির্বাচনের দিন বুথে গিয়ে ভোট: নির্বাচনের দিন সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বুথ খোলা থাকে। চাইলে সে দিন সশরীরে বুথে গিয়েও ভোট দিতে পারেন ভোটারেরা।
সাধারণ ভাবে, ক্যালিফর্নিয়ার মানুষ ইমেলের মাধ্যমে ভোট দিয়ে থাকেন। অধিকাংশ ভোট পড়ে ইমেলে। সেই ভোট গণনা করতে বাড়তি সময় লেগে যায়। ইমেলে যতগুলি ব্যালট জমা পড়ে, সেগুলি যাচাই করা হয় বিশেষ পদ্ধতিতে। তাতেই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগে। বুথে সশরীরে মানুষ গিয়ে যে ভোট দিচ্ছেন, তা গোনার সময় যাচাই করার প্রয়োজন হয় না। ইমেলের প্রতিটি ব্যালট ধরে ধরে যাচাই করতে হয়।
এখানেই শেষ নয়, ইমেলের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে ভুলত্রুটি সংশোধন করার সময়ও পান ভোটারেরা। ব্যালটে কোনও ভুল হয়ে থাকলে তা সংশোধনের জন্য আগামী ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। তাই তার আগে ক্যালিফর্নিয়ার ভোটের ফলাফল আনুষ্ঠানিক ভাবে জানা যাবে না। আগামী ২০ জানুয়ারি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নেবেন ট্রাম্প।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy