After being in few relationships Maria Sharapova’s engagement too was very short lived dgtl
Maria Sharapova
একাধিক স্বল্পস্থায়ী সম্পর্কের পরে এনগেজমেন্টও ভেঙে যায় মারিয়া শারাপোভার
১৯৯৪ সালে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে মারিয়াকে নিয়ে তাঁর বাবা এসে পৌঁছলেন আমেরিকা। হাতে সম্বল মাত্র ৭০০ ডলার। তার উপর, তখন তাঁরা কেউই ইংরেজি বলতে পারেন না। বোঝেনও না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেলেন না মারিয়ার মা ইয়েলেনা। দু’বছর মাকে ছাড়াই থাকতে হয় মারিয়াকে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৫:৩৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
চার বছর বয়সে হাতে র্যাকেট ধরিয়ে দিয়েছিলেন বাবার বন্ধু। কয়েকটা বসন্ত পেরিয়ে সেই শিশু নিজেই টেনিসের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিভার পাশাপাশি যেন গ্ল্যামারের প্রতিশব্দও ‘মারিয়া শারাপোভা’। দেড় দশকের কেরিয়ার শেষে তাঁর অবসরে শেষ হল টেনিস কোর্টে গ্ল্যামার কোশেন্টের রুশ উপকথার এক অধ্যায়।
০২১৯
বিখ্যাত দুই ফ্যাশন পত্রিকা ‘ভোগ’ এবং ‘ভ্যানিটি ফেয়ার’-এ বুধবার শারাপোভা লিখেছেন, ‘‘টেনিস, আমি তোমাকে গুডবাই জানালাম। টেনিস র্যাকেট হাতে ২৮ বছর কাটিয়ে আর পাঁচটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার পরে আমি এখন অন্য শৃঙ্গ জয় করতে তৈরি।’’
০৩১৯
মাত্র বত্রিশ বছর বয়সে তাঁর এই সিদ্ধান্তে ভক্তরা আশাহত হবেন ঠিকই। কিন্তু টেনিস-সুন্দরী তাঁর সিদ্ধান্তে অনড়। ‘‘আমি টেনিসকে নিজের জীবন দিয়েছিলাম, টেনিসও আমাকে নতুন জীবন দেয়,’’ বিদায়বার্তায় লিখেছেন তিনি।
০৪১৯
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ন্যাগান প্রদেশে মারিয়া শারাপোভার জন্ম ১৯৮৭ সালের ১৯ এপ্রিল। তার এক বছর আগে ঘটেছে ভয়ঙ্কর চের্নোবিল বিস্ফোরণ। তার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচতে শিশুকন্যাকে নিয়ে সোচি চলে এসেছিলেন মারিয়ার বাবা-মা।
০৫১৯
সোচিতেই জীবনে প্রথম র্যাকেট ধরেছিলেন মারিয়া। দিয়েছিলেন তাঁর বাবার বন্ধু আলেকজান্ডার কাফেলনিকভ। আলেকজান্ডারের ছেলে ইয়েভজেনিও বিশ্বমানের টেনিস খেলোয়াড় ছিলেন। প্রথমে বাবার সঙ্গে স্থানীয় পার্কে গিয়ে খেলেন মারিয়া। পরে মেয়ের উৎসাহ দেখে তাঁকে প্রশিক্ষক ইউরি ইউৎকিনের কাছে পাঠান মারিয়ার বাবা, ইউরি শারাপোভা। ওই বয়সে মারিয়ার হাত ও চোখের সমন্বয় মুগ্ধ করেছিল কোচ ইউরি-কে।
০৬১৯
মস্কোয় এক টেনিস প্রশিক্ষণ শিবিরে মার্টিনা নাভ্রাতিলোভার চোখে পড়েন মারিয়া। তাঁর বাবাকে মার্টিনা পরামর্শ দেন মেয়েকে নিয়ে আমেরিকায় যেতে। ফ্লোরিডায় আইএমজি অ্যাকাডেমিতে মারিয়াকে পেশাদার প্রশিক্ষণ নিতে বলেন মার্টিনা।
০৭১৯
১৯৯৪ সালে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে মারিয়াকে নিয়ে তাঁর বাবা এসে পৌঁছলেন আমেরিকা। হাতে সম্বর মাত্র ৭০০ ডলার। তার উপর, তখন তাঁরা কেউই ইংরেজি বলতে পারেন না। বোঝেনও না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেলেন না মারিয়ার মা ইয়েলেনা। দু’বছর মাকে ছাড়াই থাকতে হয় মারিয়াকে।
০৮১৯
আমেরিকায় পৌঁছনোর পর মারিয়ার বাবা সামান্য মজুরিতে বিভিন্ন রকমের কাজ করতে শুরু করেন। ১৯৯৫ সালে মারিয়ার বার্ষিক ফি মকুব করে আইএমজি। কয়েক বছর পরে খাতায় কলমে তাদের ছাত্রী হয় ৯ বছরের মারিয়া।
০৯১৯
২০০৪ সালে সদ্য সতেরোয় পা দেওয়া কিশোরীর দ্যুতিতে ঝলসে গেল টেনিস দুনিয়া। উইম্বলডন ফাইনালে সেরিনা উইলিয়ামসকে হারিয়ে শারাপোভা বুঝিয়ে দিলেন, প্রাণোচ্ছ্বল এক তরুণীর রূপান্তর ঘটছে টেনিস-রানিতে। উইম্বলডনের ইতিহাসে শারাপোভা ছিলেন তৃতীয় সর্বকনিষ্ঠ চ্যাম্পিয়ন।
১০১৯
১৮ বছর বয়সে বিশ্বের এক নম্বর মহিলা টেনিস খেলোয়াড়ের শিরোপা পান শারাপোভা। সেই প্রথম কোনও রুশ মহিলা টেনিস খেলোয়াড় বিশ্বে এক নম্বর হওয়ার সম্মান অর্জন করেন। পরের বছরই শারাপোভার নামের পাশে যুক্তরাষ্ট্র ওপেন ট্রফি। ২০১২ সালে ফরাসি ওপেন জেতার সঙ্গে দশম মহিলা হিসেবে কেরিয়ার গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ীদের তালিকায় জায়গা করে নেন এই রুশ-সুন্দরী। অলিম্পিক্স পদকও আসে এর পরে।
১১১৯
২০১৬ সালের মার্চে, এক সাংবাদিক বৈঠকে শারাপোভা জানান, অস্ট্রেলীয় ওপেনের ডোপ পরীক্ষায় ধরা পড়েছে, তিনি মেলডোনিয়াম নিয়েছেন। হৃদরোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই ওষুধটি নেওয়া হয়। ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নিষিদ্ধ ওষুধের তালিকায় চলে গিয়েছিল মেলডোনিয়াম।
১২১৯
শারাপোভা জানিয়েছিলেন, শারীরিক সমস্যার জন্য সেই ২০০৬ সাল থেকে এই ওষুধ খাচ্ছেন তিনি এবং তিনি জানতেন না মেলডোনিয়াম নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে। তাঁর আবেদন অগ্রাহ্য করে তাঁকে প্রথমে দু’বছরের জন্য নির্বাসনে পাঠানো হয়। পরে যা কমে ১৫ মাসে দাঁড়ায়।
১৩১৯
শারাপোভার কেরিয়ার-কফিনে কার্যত মূল পেরেক ছিল এই নির্বাসন। এরপর আর কখনওই আগের ফর্মে ফিরতে পারেননি চোট আঘাতে জর্জরিত শারাপোভা।
১৪১৯
কিন্তু অবসরের সিদ্ধান্ত কেন? গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে সেরিনার কাছে ১-৬, ১-৬ হারের পরেই তিনি বুঝে যান, আর নয়। এ বার সময় হয়েছে টেনিসকে বিদায় জানানোর। জানিয়েছেন, শারাপোভা।
১৫১৯
কোর্টের বাইরে অগণিত অনুরাগীর হৃদয়ে ঝড় তোলা শারাপোভার জীবনেও এসেছেন একাধিক পুরুষ। ২০০৫ সালে গায়ক অ্যাডাম লেভাইনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। নিজের জন্মদিনের পার্টিতে লেভাইনের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল শারাপোভার। কিন্তু সেই প্রেম বেশিদিন স্থায়ী হয়নি।
১৬১৯
তিন বছর পরে টেলিভিশন প্রোডিউসার চার্লি এবেরসোলের অন্তরঙ্গ হন শারাপোভা। কিন্তু সেই সম্পর্কও ছিল স্বল্পস্থায়ী।
১৭১৯
২০০৯ সাল থেকে মারিয়া শারাপোভা ডেট করছিলেন স্লোভেনিয়ান বাস্কেটবল খেলোয়াড় সাশা ভুজাকিকের সঙ্গে। দু’বছর পরে হয় এনগেজমেন্টও। কিন্তু ২০১২ সালে টেনিস সুন্দরী নিজেই জানান, তাঁরা দু’জনে সরে এসেছেন সম্পর্ক থেকে।
১৮১৯
২০১৩ সালে মাদ্রিদ ওপেনের সময় মারিয়া শারাপোভা জানান, বুলগেরিয়ার টেনিস খেলোয়াড় গ্রিগর দিমিত্রভের সঙ্গে তাঁর প্রণয়ের সম্পর্ক আছে। কিন্তু দু’বছর পরে ভেঙে যায় সেই সম্পর্কও।
১৯১৯
অতীতের এক নম্বর মহিলা টেনিস খেলোয়াড় মারিয়া শারাপোভা ফোর্বস পত্রিকার বিচারে টানা এগারো বছর ধরে বিশ্বের ধনীতম মহিলা অ্যাথলিটও ছিলেন। অবসরের পরে কী করবেন? মারিয়া জানিয়েছেন, এ বার সময় কাটবে পরিবার-পরিজন-আলসেমি আর কফির সঙ্গে। (ছবি: আর্কাইভ ও ফেসবুক)