মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে যে চারটে নেট ভারতীয়দের প্র্যাকটিসের জন্য শনিবার বরাদ্দ ছিল, তার একটায় নাকি ব্যাটসম্যানদের ‘প্রবেশাধিকার’ ছিল না।
মানে, ওই নেটে ব্যাটসম্যানদের কেউ ঢোকেননি। মহম্মদ শামি, উমেশ যাদবরা শুধু ছিলেন। নেটের পাশে ছিলেন দুই জাতীয় নির্বাচক বিক্রম রাঠৌর এবং রজার বিনি, আর বোলিং কোচ ভরত অরুণ-সহ কোচ ডানকান ফ্লেচার।
কারণ বোলারদের নিয়ে ওখানে স্পেশ্যাল ক্লাস চলছিল। আর সেটা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, নেটে বিরাট কোহলিরা শনিবার আর পাননি শামিদের। নেট বোলার দিয়েই কাজ চালাতে হয়েছে।
ব্যাপারটা কী?
মেলবোর্নে ফোন করে জানা গেল, টেস্ট সিরিজে যে বোলিং-রোগ ধরা পড়েছে ভারতীয় টিমের সংসারে, সেটাকে সারানোর বাড়তি উদ্যম এটা। এটাও শোনা গেল, ভারতীয় বোলিং লাইনের কোনও প্রধান অস্ত্র শেষ পর্যন্ত সুস্থ না হতে পারলে মোহিত শর্মার মতো কাউকে বিশ্বকাপে ঢুকিয়ে ফেলা হতে পারে। মোহিত এমনিতেই ত্রিদেশীয় সিরিজে আছেন, কিন্তু সে রকম পরিস্থিতি হলে তাঁকে আরও বড় প্রেক্ষাপটের জন্য ভাবা হতে পারে।
রবিবার থেকে যে ওয়ান ডে সিরিজে ভারত নামছে, সেটা আদতে নামে ত্রিদেশীয় সিরিজ। আদতে চার থেকে পাঁচটা ম্যাচ (ফাইনালে উঠলে পাঁচ নম্বরটা সম্ভব) যা বিশ্বকাপে নামার আগে পাওয়া যাবে। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ টুর্নামেন্টে নামার আগে মহড়া নেওয়া যাবে সেই টিমের যাদের দেশের মাটিতে এ বার বিশ্বকাপের আসর, যাদের বিশ্বকাপ জয়ের দৌড়ে প্রথম কয়েকটা টিমের মধ্যে ধরা হচ্ছে। রিকি পন্টিংয়ের না হলেও অস্ট্রেলিয়া তো!
মহেন্দ্র সিংহ ধোনিও সেটাকেই বারবার তুলে ধরার চেষ্টা করলেন প্রাক্-ম্যাচ সাংবাদিক সম্মেলনে। টেস্ট থেকে তাঁর আচমকা অবসর নিয়ে প্রশ্ন করেছিল মিডিয়া। ধোনি পত্রপাঠ বলে দেন, “আপনারা প্রশ্ন করতে পারেন। উত্তর দেওয়া না দেওয়া আমার ব্যাপার। বোর্ডের প্রেস রিলিজেই যা বলার বলা আছে।”
বলা বাহুল্য, এর পর প্রশ্ন উড়ে গেলেও উত্তর কোনও আসেনি। ভারত অধিনায়ক বরং বলে দেন, “আমরা এই টুর্নামেন্টে বেশ কয়েকটা জিনিস করার কথা ভাবছি। চারটে ম্যাচ তো আমরা পাবই। ফাইনালে গেলে পাঁচটা। ঠিকঠাক টিম কম্বিনেশনটা বার করতে হবে। তবে এটাও ঠিক যে, যাদের চোট আছে তাদের চাপ দেওয়া হবে না। সামান্য চোটকে গুরুতর করার কোনও মানে নেই। তাদের সময় দেওয়া হবে। বাকিদের চাপটা ম্যানেজ করতে হবে। ধবল (কুলকার্নি) আর মোহিত (শর্মা) যেমন বিশ্বকাপের প্ল্যানিংয়েও আসতে পারে। যদি কোনও পেসার চোট পেয়ে বসে।”
যার অর্থ, ফিটনেস টেস্টের পর রবীন্দ্র জাডেজার রবিবার অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে নামার সম্ভাবনা কম। এ দিন একপ্রস্থ ফিটনেস টেস্ট হয়েছে জাডেজার। শোনা গেল, নেটে তিনি ব্যাট করেছেন। বলও করেছেন কিছুক্ষণ। রবিবার সকালে তাঁর আরও একদফা ফিটনেস টেস্ট বাকি আছে। যদি একদম ফিট থাকেন, তা হলে অন্য ব্যাপার। নইলে যা খবর, তাতে সিরিজে ভারতের তৃতীয় ম্যাচ থেকে নামার সম্ভাবনা। কারণ, দুই আর তিন নম্বর ম্যাচের মাঝে বেশ কয়েকটা দিন পাওয়া যাবে।
জাডেজা শেষ পর্যন্ত নামুন বা না নামুন, অস্ট্রেলিয়া কড়া প্রতিপক্ষই ধরছে ভারতকে। জেমস ফকনার যেমন শনিবার বলে দিলেন, “টেস্ট সিরিজটা খুব ভাল জমেছে। ভারতীয় ব্যাটসম্যানরাও খুব ভাল খেলেছে। বিশেষ করে বিরাট কোহলি।” এখানেই না থেমে ফকনার আরও যোগ করেন, “রবিবার ওদের বিরুদ্ধে ম্যাচটা খুব কঠিন হবে। ওরা খুব ভাল ওয়ান ডে টিম। আমরাও তাই। লড়াইটা ভাল হবে।”
অর্থাত্, সুর বদল। টেস্ট সিরিজে দুই টিমে কম খটাখটি লাগেনি। বিরাট কোহলির সঙ্গে মিচেল জনসনের যা চলেছিল, যে ভাবে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে অস্ট্রেলীয়দের নিশানা করে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন বিরাট সব এখনও টাটকা। শুধু তাই? ব্রিসবেনে খাবার নিয়েও লেগেছিল। গাব্বার বাইরে খেয়ে ইশান্ত শর্মাকে মাঠে ফিরে বল করতে হয়।
অস্ট্রেলিয়া সৌহার্দ্যের হাত বাড়িয়ে দিলেও ভারত কতটা দেবে, কে জানে। মেলবোর্ন থেকেই তো ব্রিসেবেনে (পরের ম্যাচ) নাকি আগাম বার্তা পাঠানো হয়েছে যে, খাবার-টাবারগুলো যেন এ বার ঠিক থাকে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy