আগের দিনই টুইটারে সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। পরের দিন রীতিমতো ঝড় বইয়ে টেস্ট ক্রিকেটের বারো হাজার ক্লাবের সদস্য হয়ে গেলেন কুমার সঙ্গকারা।
শনিবার নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়েলিংটনে চলতি দ্বিতীয় টেস্টে এই মাইলফলক ছুঁলেন শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন অধিনায়ক। এর আগে আরও চারজন বারো হাজারের গণ্ডি পেরোলেও টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে কেউ তাঁর মতো এত কম ইনিংসে এই হার্ডল পেরোতে পারেননি। সচিন তেন্ডুলকর ও রিকি পন্টিং যেখানে ২৪৭ ইনিংসে বারো হাজার পূর্ণ করেছিলেন, সেখানে সঙ্গকারা ২২৪ ইনিংসেই এই ক্লাবের সদস্য হয়ে গেলেন। জাক কালিস ও রাহুল দ্রাবিড়দেরও একই কৃতিত্ব রয়েছে। কিন্তু তাঁরা যথাক্রমে ২৪৯ ও ২৫৫ ইনিংসে বারো হাজার রান পূর্ণ করেছিলেন।
সঙ্গকারার এই সাফল্যের দিনে তাঁর কাছে বোনাস হয়ে উঠতে পারে ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি স্যর ভিভিয়ান রিচার্ডসের প্রশংসা। ভিভ এ দিন নিজের কলামে লিখেছেন, তিনি মাত্র দু’জন ব্যাটসম্যানকে দু’রকম ক্রিকেটেই সমান ভাবে মানিয়ে নিতে দেখেছেন। তাঁর মতে, এই দু’জন হলেন সচিন তেন্ডুলকর ও কুমার সঙ্গকারা। ভিভের কথায়, “এক ধরনের ফর্ম্যাট থেকে আর এক ধরনের ফর্ম্যাটে গিয়ে দ্রুত মানিয়ে নেওয়াটাই বড় ব্যাটসম্যানের আসল লক্ষণ। এখনকার ক্রিকেটে দু’জনের মধ্যে এই ব্যাপারটা আছে। সচিন ও সঙ্গকারা।”
শনিবার বেসিন রিজার্ভে যখন ব্যাট করতে নামেন সঙ্গকারা, তখন তিনি বারো হাজারের মাইলফলক থেকে মাত্র পাঁচ রান দূরে। প্রথম তিন ওভারে তিন রান নেন সঙ্গা। এর মধ্যে ব্রেসওয়েল তাঁর উল্টোদিকে সিলভার স্টাম্প ছিটকে দেন। এর পর যখন বোল্ট ফের তাঁর বিরুদ্ধে বল করতে আসেন, তখন চতুর্থ বলে ব্যাকফুটে এসে লেগে বল ঠেলে রান নিয়ে বারো হাজারের মাইলস্টোন ছঁুয়ে ফেলেন শ্রীলঙ্কার এই ব্যাটিং কিংবদন্তি। এই কৃতিত্ব তাঁর দেশে এই প্রথম কোনও ব্যাটসম্যান অর্জন করলেন। দিনের শেষে তাঁর মোট টেস্ট রান ১২,০২৮। শ্রীলঙ্কা অবশ্য এই টেস্টে যথেষ্ট চাপে। প্রথম দিনেই নিউজিল্যান্ডের ২২১ রানের জবাবে শ্রীলঙ্কা ৭৮-৫।
এ পর্যন্ত ৩৭-এর এই ব্যাটসম্যান ১৩০ টেস্টে ৩৭টি সেঞ্চুরি ও ৫১টি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। টেস্টে ৫৮.৩৮-এর গড় তাঁর। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটি তিনশোর ইনিংস যেমন আছে, তেমনই পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত, বাংলাদেশ ও জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ন’টি ডাবল সেঞ্চুরিও রয়েছে তাঁর। সব মিলিয়ে টেস্টে তাঁর ব্যাটিং গড় ৫৮.৩৮। এ দিক থেকে তিনি আছেন প্রথম দশে।
কৃতিত্বের মাইলফলক ছোঁয়ার পর সঙ্গকারা নিজে কোনও প্রতিক্রিয়া না দিলেও শ্রীলঙ্কার ক্যাপ্টেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথেউজ জানান, ক্রাইস্টচার্চে প্রথম টেস্টে দুই ইনিংসে যথাক্রমে ছয় ও এক রানে আউট হওয়ায় বেসিন রিজার্ভে নামার আগে নেটে প্রচুর পরিশ্রম করেন সঙ্গকারা। তিনি বলেন, “ও ব্যর্থ হওয়া মানে কোচের দুঃস্বপ্ন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ওকে থ্রো ডাউন দিতে হয়। সম্প্রতি নেটে প্রচুর পরিশ্রম করেছে ও। রান পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল।”
গত মাসে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে ওয়ান ডে-তে তেরো হাজার পূর্ণ করেন সঙ্গকারা। সচিন, পন্টিং ও সনত্ জয়সূর্যর পর তিনিই এই কৃতিত্বের অধিকারী। ৩৯০ ওয়ান ডে-তে ২০টি সেঞ্চুরি ও ৯১টি হাফ সেঞ্চুরির মালিক অবশ্য বিশ্বকাপের পরই ওয়ান ডে থেকে অবসর নিচ্ছেন। টেস্টে যদিও খেলবেন। পরিসংখ্যানবিদদের হিসাব বলছে, এই গড় বজায় রাখতে পারলে আর তিন বছরে, ৭০ ইনিংসে সচিন তেন্ডুলকরকে টপকে যেতে পারেন সঙ্গকারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy