চার জনই বিশ্বকাপ খেলেছেন। এক জন ফাইনালও। ভারতের কাপ অভিযান শুরুর আগে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির টিমকে পরামর্শ দেশের চার প্রাক্তনের— জাভাগাল শ্রীনাথ, বেঙ্কটেশ প্রসাদ, বিষেণ সিংহ বেদী এবং শ্রীনিবাস বেঙ্কটরাঘবন।
জেতাতে হবে বোলারদের: শ্রীনাথ
সংবাদ সংস্থা • হায়দরাবাদ
ধোনির বিশ্বকাপ ধরে রাখতে হলে তাঁর বোলারদের ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্স করতে হবে। প্রাক্তন ভারতীয় পেসার জাভাগল শ্রীনাথের এমনই মত। বলেছেন, “আমি নিশ্চিত ভারত এ বারও বিশ্বকাপে নিজেদের ছাপ রাখবে। ওরা একটা জবরদস্ত টিম। কেবল দরকার সম্মিলীত ভাবে পারফর্ম করাটা। যদি আমাদের বোলাররা ভাল করে, তা হলে আমি নিশ্চিত টিমের ব্যাটসম্যানরাও জ্বলে উঠবে। ক্রিকেটটা যদিও দিনের শেষে ব্যাটসম্যানদের খেলা কিন্তু ভারতকে কাপ ধরে রাখতে হলে বোলারদের খুব ভাল করতে হবে। যে জন্য এই টুর্নামেন্টে বোলিংটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের উইকেটে আমাদের অন্তত তিন জন ফাস্ট বোলারকে সত্যিই খুব ভাল করতে হবে। ওয়ান ডে-তেও বোলাররা অনেক সময়ই ম্যাচ জেতায়। আশা করি স্টুয়ার্ট বিনি, ভুবনেশ্বর কুমার, ইশান্ত শর্মা, মহম্মদ শামির মধ্যে অন্তত তিন জন বিশ্বকাপের প্রতিটা ম্যাচে নিজেদের ছাপ রাখবে। কোনও সন্দেহ নেই, আমাদের বোলিংও শক্তিশালী। সব মিলিয়ে বোলিং বিভাগ যথেষ্ট অভিজ্ঞ আর ওরা অস্ট্রেলিয়াতে বেশ কিছু সময় ধরে রয়েছেও। আশা করি, আমাদের বোলাররা এত দিনে বুঝে গিয়েছে, ওখানকার পিচ-পরিবেশে ঠিক কোন লেংথ-লাইনে বল করতে হয়!”
ধারাবাহিকতার অভাব: বেঙ্কটরাঘবন
সংবাদ সংস্থা • চেন্নাই
প্রথম দু’টো বিশ্বকাপে ভারতের অধিনায়ক শ্রীনিবাস বেঙ্কটরাঘবনের মনে হচ্ছে, আসন্ন বিশ্বকাপে ধোনির ভারতের প্রধান সমস্যা দু’টো ধারাবাহিকতার অভাব এবং অস্ট্রেলীয় উইকেটের বিচারে নড়বড়ে ওপেনিং জুটি। বলেছেন, “আমাদের বর্তমান দলটা ধারাবাহিকতার অভাবে ভুগছে। যেটা শুধু ক্রিকেট নয়, সব খেলার ক্ষেত্রেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক ফ্যাক্টর। অন্য গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টরটা হল, ব্যাটিং লাইন আপের টপ অর্ডারের খুব শক্তপোক্ত থাকা। সেই জায়গাটাতেও আমাদের বর্তমান দলে খামতি আছে। সদ্য অস্ট্রেলিয়া সফরে ভারতীয় দলের ওপেনিং জুটিকে নড়বড়ে দেখিয়েছে। ওয়ান ডে ক্রিকেটে তো ওপেনিং জুটির আরওই বেশি শক্তিশালী থাকা দরকার। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার, আমাদের ওপেনিং জুটিকে অস্ট্রেলিয়ায় তেমনটা দেখায়নি সম্প্রতি। অস্ট্রেলিয়ার উইকেটে আমাদের ওপেনারদের যেমন প্রয়োগের ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা দেখাচ্ছে, তেমনি মানসিকতাতেও। মোটিভেশন হয়তো আছে। বিশ্বকাপ খেলার আকাঙ্খা এবং উদ্দীপনাও নিশ্চয়ই থাকবে। কিন্তু এ সবের থেকে অনেক বেশি গুরুত্বের ওপেনারদের ব্যাটিং স্কিল এবং ও দেশের পিচে তার সঠিক প্রয়োগ করার ক্ষমতা।”
ভারত প্রথম এগারো বাছতে পারেনি: বেদী
সংবাদ সংস্থা • নয়াদিল্লি
বিশ্বকাপ মেরেকেটে এক সপ্তাহের সামান্য বেশি দূরে। কিন্তু বিষেণ সিংহ বেদী মনে করছেন, ভারত এখনও তাদের প্রথম এগারো বেছে নিতে তো পারেইনি, উল্টে দলের চোট সমস্যার দিকে গুরুত্ব দিয়ে অনেক দেরিতে তাকিয়েছে। বলেছেন, “অস্ট্রেলিয়াতে গত আড়াই মাস কাটিয়ে ফেললেও ভারতীয় দল ওদের নিউক্লিয়াসটা নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবেইনি। বিশ্বকাপে পাঁচ কী ছয় জন ক্রিকেটার প্রতিটা দলের নিউক্লিয়াস গঠন করে থাকে। যারা প্রতিটা ম্যাচে প্রথম দলে থাকবেই। কিন্তু ভারত এখনও প্রথম এগারোই ঠিক করে উঠতে পারেনি। যার কারণ, প্লেয়ারদের লাগাতার চোট-আঘাত। যার দিকেও আবার আমাদের টিম ম্যানেজমেন্ট অনেক দেরিতে গুরুত্ব দিয়ে তাকিয়েছে। শুনছি অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বিশ্বকাপের ওয়ার্ম আপ ম্যাচের একদিন মাত্র আগে রোহিত শর্মা, ভুবনেশ্বর কুমার, রবীন্দ্র জাডেজা, ইশান্ত শর্মাদের চূড়ান্ত ফিটনেস পরীক্ষা নেওয়া হবে। কিন্তু সেটা এত দেরিতে কেন? যদি শারীরিক কারণে এদের কাউকে বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়তে হয়, তা হলে তার বিকল্প প্লেয়ার আর কবে দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের পিচ-পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেবে? সেই সময় কোথায় পাবে? এতে টিম হিসেবেই ভারত তৈরি হতে পারবে না। যে ক্ষতি হয়তো কয়েক জনের ব্যক্তিগত দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সামাল দেওয়া কঠিন।”
বলটা শুধু স্টাম্পে রাখো: বেঙ্কটেশ
সংবাদ সংস্থা • নয়াদিল্লি
প্রাক্তন বিশ্বকাপার পেসার তথা টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তন বোলি কোচ বেঙ্কটেশ প্রসাদের পরামর্শ শামি-ভুবনেশ্বর-উমেশ যাদবদের জন্য— বিশ্বকাপে বোলিংয়ে বেশি ভ্যারিয়েশনের চিন্তা ছেড়ে শুধু স্টাম্প-টু-স্টাম্প করার চেষ্টা চালিয়ে যাও। প্রসাদের মতে ১৫ ফেব্রুয়ারি চিরশত্রু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এ বারের বিশ্বকাপে ভারতের উদ্বোধনী ম্যাচে ধোনির দলের বোলিং যে রকম হওয়া উচিত, “বলটা স্রেফ স্টাম্পে রাখুক আমাদের বোলাররা। কোনও বাড়তি চেষ্টা করার দরকার নেই। সীমিত ওভারের ম্যাচে বোলিংয়ের আসল কথাই হল, টাইট লেংথ আর ব্যাটসম্যানকে কোনও মতেই উইকেটের আড়াআড়ি বেশি জায়গা না দেওয়া। সোজা কথা, স্টাম্পে বলটা রেখে যেতে হবে। ভারতীয় দলের টাটকা ফর্মে আমি সত্যিই একটু চিন্তায় আছি। যদিও অস্ট্রেলিয়া সিরিজের পর ভারতীয় দল দু’সপ্তাহ সময় পাচ্ছে ওদের খেলার ফাঁকফোকরগুলো মেরামতের। আশা করি, অভিজ্ঞ দলটা সেটা পারবেও। অস্ট্রেলিয়া সফরে ভাল করতে না পারুক, বিশ্বকাপ সম্পূর্ণ অন্য টুর্নামেন্ট। অন্য আবেগ। সেখানে ভারতকে নিশ্চয়ই অন্য চেহারায় দেখা যাবে। পাকিস্তানের মতো মারমার কাটকাট ম্যাচে একটা জয় কিন্তু আমাদের দলের মানসিকতা সম্পূর্ণ পাল্টে দিতে পারে। আমার মনে হয়, বিশ্বকাপে ভারতের ভাল পারফরম্যান্সের জন্য দরকার খুব ভাল একটা শুরু। আর সেটা পাকিস্তানকে হারিয়ে শুরুর চেয়ে আর ভাল কী হতে পারে আমাদের দলের কাছে!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy