Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

কোচ-স্ট্রাইকার হারিয়েও আশা হারাচ্ছে না কলকাতা

কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাস নির্বাসনে। নেই তারকা স্ট্রাইকার ফিকরু তেফেরা। গোলকিপার কোচ প্রদীপকুমার সাসপেন্ডেড। লুই গার্সিয়া? তাঁর কী খবর? না, হ্যামস্ট্রিং এখনও সারেনি। রাইটব্যাক ডেঞ্জিল ফ্র্যাঙ্কোরও আবার হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট। চার ম্যাচে ১০ পয়েন্ট পেয়ে আটলেটিকো দে কলকাতা লিগ শীর্ষে ঠিকই। কিন্তু বাস্তবের পরিপ্রেক্ষিতে ঘরের মাঠে যুদ্ধের আগে কি কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে? উত্তর না। কোচ নেই তো কী। প্রথম এগারোর তারকারা নেই তো কী, জয়ের আশা ভাল মতোই আছে টিম আটলেটিকোয়।

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৪ ০২:১৬
Share: Save:

কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাস নির্বাসনে। নেই তারকা স্ট্রাইকার ফিকরু তেফেরা। গোলকিপার কোচ প্রদীপকুমার সাসপেন্ডেড। লুই গার্সিয়া? তাঁর কী খবর? না, হ্যামস্ট্রিং এখনও সারেনি। রাইটব্যাক ডেঞ্জিল ফ্র্যাঙ্কোরও আবার হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট।

চার ম্যাচে ১০ পয়েন্ট পেয়ে আটলেটিকো দে কলকাতা লিগ শীর্ষে ঠিকই। কিন্তু বাস্তবের পরিপ্রেক্ষিতে ঘরের মাঠে যুদ্ধের আগে কি কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে?

উত্তর না। কোচ নেই তো কী। প্রথম এগারোর তারকারা নেই তো কী, জয়ের আশা ভাল মতোই আছে টিম আটলেটিকোয়।

নমুনা, টিম ম্যানেজার রজত ঘোষ দস্তিদারের দাবি, “আমাদের দলে ইউটিলিটি ফুটবলার অনেক। আর সবাই তৈরি।” নমুনা, রক্ষণ-স্তম্ভ হোসেমির আত্মবিশ্বাস, “আমরা তিন পয়েন্ট তুলতে একদম তৈরি। মাঠে তো কোচ খেলবে না। খেলব আমরা।” নমুনা, সঞ্জু প্রধানের জোশ, “কীসের চাপ? মার্কি ফুটবলার ছাড়াই অ্যাওয়ে ম্যাচে জিতে এলাম। কোচ তো শুধু ম্যাচের সময় বেঞ্চে থাকবেন না। বাকি সময়টা আমাদের সঙ্গেই থাকবেন। আর ফিকরুদের জায়গায় যারাই খেলুক, নিজেদের নিংড়ে দেবে।”

কিন্তু যে ব্যাক ফোর চার ম্যাচে দুরন্ত পারফর্ম করেছে, সেখানে বদল হলে সমস্যা হবে না? বিশেষ করে বিপক্ষ কোচের নাম যখন ট্রেভর জেমস মর্গ্যান। লাল-হলুদ জার্সি গায়ে মর্গ্যানের কোচিংয়ে খেলেছেন সঞ্জু। কিন্তু এক সময়কার গুরুকে বাড়তি সমীহ করার রাস্তাতেই যাচ্ছেন না তিনি। বলে দিচ্ছেন, “মর্গ্যান ফ্যাক্টর তো আমরা সবাই জানি। আপাতত ও সব মাথা থেকে সরিয়ে নিজেদের নিয়েই ভাবছি।”

তবে টিমের জন্য সুখবর, গোয়ায় হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পাওয়া লেফট ব্যাক বিশ্বজিত্‌ সাহাকে পাওয়া যাবে। যদিও এ দিন অনুশীলনের সময় খবর ছড়িয়ে গিয়েছিল, তাঁকেও পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু পরে জানা যায় টিম ম্যানেজমেন্ট যুদ্ধকালীন তত্‌পরতায় তাঁকে সুস্থ করে তুলছে। রবিবার তিনি থাকছেন প্রথম একাদশেই। গোলে শুভাশিসের ফেরার সম্ভাবনাও প্রবল। কোচ হাবাস এ দিন সন্ধের যুবভারতীতে ফিকরু-ডেঞ্জিলদের বিকল্প খুঁজতে গোটা দলকে এক বার জরিপ করে নিলেন। যা খবর, ডেঞ্জিলের জায়গায় বলজিত্‌ আর ফিকরুর জায়গায় আর্নালকে ধরেই কেরল জয়ের প্রাথমিক ব্লু প্রিন্ট তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দলের আশা-ভরসার অন্যতম মুখ সেই কেভিন লোবো। গোয়ায় বিতর্কের অন্ধকারেও যাঁর জোড়া গোল আটলেটিকোকে এনে দিয়েছে আলো-ঝলমলে তিন পয়েন্ট। এ দিন লোবোকে নিয়ে বাড়তি ক্লাসও করলেন হাবাস এবং সহকারী কোচ ব্যারেটো। কিন্তু এত কিছুর পরেও যদি গোয়া-কাণ্ড ও তার পরবর্তী ঘটনা টিমের ফোকাস নড়িয়ে দেয়? সঞ্জু, হোসেমি দু’জনেই বলছেন, গোয়া-কাণ্ড তাঁদের কাছে অতীত। ফুটবলে শারীরিক সংঘর্ষ নতুন নয়। আপাতত তাঁদের ফোকাস টিম কেরল।

শুনলে মনে পড়ে যেতে পারে ৬০ বছর আগের একটা ঘটনা। ১৯৫৪ বিশ্বকাপে ব্রাজিল-হাঙ্গেরির সেই কুখ্যাত ‘ব্যাটল অব বার্ন’। ডিডিদের সঙ্গে হাতাহাতির পর মুখে গোটা চার সেলাই নিয়ে পুসকাসদের কোচ গুস্তাভ সেবেস বলেছিলেন, “ওটা ফুটবল ছিল না। আগ্রাসন আর হিংস্রতার প্রদর্শনী হচ্ছিল।” পেলের দেশের কোচ জেজে মোরেইরা দেশে ফিরে বলেছিলেন, “ফুটবলে তো একটু সংঘর্ষ হবেই। বার্নের ঘটনা অতীত। সামনের দিকে তাকাতে হবে আমাদের।”

পরের বিশ্বকাপটা ওঠে পেলে-গ্যারিঞ্চাদের হাতেই। সেখানে গোয়া-বিতর্ক ফিকে করতে অর্ণব-আর্নালদের চাই আপাতত একটা দুরন্ত জয়। তিন পয়েন্ট।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE