মেদিনীপুর সদর ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করল হাতির দল। দলমার এই দলটিতে প্রায় ৫০টি হাতি রয়েছে বলে বন দফতর সূত্রে খবর। দলটি এখন খড়্গপুরের কলাইকুণ্ডা রেঞ্জ এলাকায় রয়েছে। সোমবার সকালে মেদিনীপুর সদর ব্লকের শুখনাখালির জঙ্গলে ছিল দলটি। বিকেলে সেখান থেকে বেরিয়ে একের পর এলাকায় দাপিয়ে বেড়াতে শুরু করে। এলাকার দাপিয়ে বেড়ানোর ফলে মূলত প্রচুর ফসলেরই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সদর ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় হাতির হানায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে জানান মণিদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অঞ্জন বেরা। তিনি বলেন, “সন্ধ্যার পর থেকে একের পর এক এলাকায় ঢুকে পড়ে হাতির দলটি। তাণ্ডব শুরু করে। মণিদহ, বেড়াপাল, রেড়াপাল, পিডরাশোল প্রভৃতি এলাকায় ফসলের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।”
মঙ্গলবার সকালে দলটি কাঁসাই নদী পেরিয়ে কলাইকুণ্ডায় ঢুকে পড়ে। হাতির হানায় সদর ব্লকে যে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা মানছে বন দফতরও। দফতরের এক কর্তার কথায়, “দলটিতে প্রায় ৫০টি হাতি রয়েছে। এতগুলো হাতি যদি জমির উপর দিয়ে যায়, তাহলে তো ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হবেই।” আপাতত, দলটি নয়াগ্রাম হয়ে ওড়িশার দিকে যাবে। এটাই রুট। পরে ফের এই রুটেই ফিরবে। বন দফতরের এক সূত্রে খবর, আশির দশক থেকে হাতি আসা শুরু হয়েছিল এ রাজ্যে। তখন শুধুমাত্র ঝাড়খণ্ডের সীমান্তবর্তী এলাকা কাঁকড়াঝোর ও ময়ূরঝর্ণা পর্যন্ত হাতি আসত। ধীরে ধীরে কংসাবতী, সুবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে হাতি জেলার অন্যত্রও ঢুকতে শুরু করে। এক সময়ে দাবি উঠেছিল, দলমা থেকে আসা হাতির দলকে সীমান্তেই আটকে দিতে হবে। এই দাবি সামনে রেখে আন্দোলনও হয়। তখন সরকার ময়ূরঝর্নায় একটি প্রকল্প তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যেখানে হাতির খাবার উপযোগী গাছ লাগানো হবে, পানীয় জলের ব্যবস্থা থাকবে। কিন্তু, প্রকল্প সে ভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে, ফি বছর দলমা থেকে হাতির দল আসে। সঙ্গে প্রতি বছর যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হাতির সংখ্যা। ক্ষয়ক্ষতিও।
অবশ্য, এখন রেসিডেন্সিয়াল হাতির সংখ্যাও বেড়েছে। মাঝেমধ্যে রেসিডেন্সিয়াল হাতি বিভিন্ন এলাকায় দাপিয়ে বেড়ায়। ২০০৯ সালে হাতি- গণনা হয়েছিল। গণনা অনুযায়ী, পশ্চিম মেদিনীপুর- বাঁকুড়া- পুরুলিয়া, দক্ষিণবঙ্গের এই তিন জেলায় রেসিডেন্সিয়াল হাতির সংখ্যা ৩৭। তবে, এখন এই সংখ্যাটা ৫৫ পেরিয়ে গিয়েছে বলেই মনে করছেন বন দফতরের কর্তারা। এখন হাতির দলটি কলাইকুণ্ডা রেঞ্জের জোঠিয়ার জঙ্গলে রয়েছে। বন দফতরের কর্তারা চাইছেন, লোকালয়ে না ঢুকে হাতির দল যেন জঙ্গলপথ ধরেই নয়াগ্রামের দিকে এগিয়ে যায়। এগোয় তাদের নির্দিষ্ট রুট ধরে। কারণ, লোকালয়ের দিকে এলেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমান আরও বাড়বে। খড়্গপুরের ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, “হাতির দলের গতিবিধির উপর নজর রাখা হয়েছে। দলটি এ বার নয়াগ্রামের দিকে যাবে। নির্দিষ্ট রুট ধরেই যাতে দলটি এগোয় তা দেখা হচ্ছে। এ জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপই করা হচ্ছে। শষ্যহানি এড়ানোর সব রকম চেষ্টা চলছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy