‘কোয়ান্টাম সুপ্রিমেসি’। — প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
‘কোয়ান্টাম সুপ্রিমেসি’। পাঁচ-ছয় বছর আগে প্রযুক্তি সংস্থা গুগলের মুখে প্রথম শোনা গিয়েছিল শব্দ দু’টি। শোনা গিয়েছিল কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের অকল্পনীয় গতি ও ক্ষমতার কথা। এ হেন কোয়ান্টাম অভিযানে পা রেখেছে ভারতও। দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কোয়ান্টাম হাব কলকাতা শহরে ‘এস এন বোস ন্যাশনাল সেন্টার ফর বেসিক সায়েন্সেস’ (এসএনবিএনসিবিএস) আয়োজিত অনুষ্ঠানে উঠে এল সেই কথা। ‘বোস-আইনস্টাইন কনডেনসেশন, সুপারকন্ডাকটিভিটি, সুপারফ্লুইডিটি অ্যান্ড কোয়ান্টাম ম্যাগনেটিজ়ম’ বিষয়ক আলোচনাসভায় ‘জাতীয় কোয়ান্টাম মিশন’-এর চেয়ারম্যান অজয় চৌধরি বললেন, ‘‘অনেকেই মনে করছেন, ভারত কিছুটা পিছিয়ে (কোয়ান্টাম অভিযানে)। তা কিন্তু নয়।’’ আর কোয়ান্টাম অভিযানে ভারতের অগ্রগতির অন্যতম চাবিকাঠি ‘জোট বেঁধে কাজ’।
১৯২৪ সালে সত্যেন্দ্রনাথ বসু চিঠি লিখেছিলেন আলবার্ট আইনস্টাইনকে। যে যোগসূত্র পরবর্তী কালে জন্ম দেয় বোস-আইনস্টাইন স্ট্যাটিসটিক্সের। সেই সূচনার একশো বছর উদ্যাপন করছে এসএনবিএনসিবিএস। এ দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ। অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে ছিলেন জাতীয় কোয়ান্টাম মিশনের চেয়ারম্যান অজয় চৌধরি, আইআইটি মাদ্রাজ়ের অধ্যাপক গণপতি ভাস্করণ, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বার্টান্ড হ্যালপেরিন এবং ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই আর এক অধ্যাপক সুবীর সচদেব। ভারতের কোয়ান্টাম অভিযান সম্পর্কে প্রত্যেকেরই অভিমত, সাফল্যের আসল মন্ত্রই ‘কোলাবোরেশন’। একশো বছর আগে এ ভাবে জোট বেঁধেই তৈরি হয়েছিল বোস-আইনস্টাইন স্ট্যাটিসটিক্স। এ দিনের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জিতেন্দ্র সিংহের (ভার্চুয়াল) বক্তৃতায় বার বারই উঠে এসেছিল সে কথা।
গত জানুয়ারি থেকে জোরকদমে শুরু হয়েছে কোয়ান্টাম অভিযান। কোয়ান্টাম অভিযানের নেতৃত্বে রয়েছেন যিনি, সেই অজয় চৌধরি জানান, সরকারের তরফে বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে চারটি হাব। প্রতিটি হাবের মধ্যে সমন্বয়কারী ব্যবস্থা রয়েছে কানপুর আইআইটি-তে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের অন্তত ৬০০ বিজ্ঞানী এই অভিযানে যুক্ত রয়েছেন।
অজয় জানিয়েছেন, কোয়ান্টাম মিশন ছাড়াও ভারত সরকার প্রতিরক্ষা গবেষণা, অ্যাটমিক এনার্জি বিভাগ ও মহাকাশ গবেষণায় জোর দিচ্ছে। এই প্রতিটি ক্ষেত্র আবার একত্রে কাজ করছে। যেমন, যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নতির বিষয়ে কাজ করছে মহাকাশ গবেষণা ক্ষেত্র। কোয়ান্টাম স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
অজয় জানিয়েছেন, আপাতত ৮ বছরের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এই ৮ বছরে কোয়ান্টাম মিশনের লক্ষ্য, ৫০ থেকে ১০০০ ফিজ়িক্যাল কিউবিট কোয়ান্টাম কম্পিউটার উৎপাদন। ২০৩১ সালের মধ্যে যা বাস্তবায়িত করা হবে। এ ছাড়া, এই অভিযানের লক্ষ্য দেশে স্যাটেলাইট-নিরাপত্তা বেষ্টিত কোয়ান্টাম যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন। এ বছর ইতিমধ্যেই ৬ কিউবিট কোয়ান্টাম কম্পিউটার একত্রিত ভাবে তৈরি করেছে টিসিএস, টিআইএফআর এবং ডিআরডিও। অজয় জানান, নেদারল্যান্ডস ও ফিনল্যান্ডের দু’টি স্টার্ট আপ ভারতে এসে কাজ শুরু করেছে। তারা দাবি করেছে, এ বছরের মধ্যে তারা ২০ কিউবিট কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি করবে।
এসএনবিএনসিবিএস-এর ডিরেক্টর তনুশ্রী সাহা দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘বোস স্ট্যাটিসটিক্সের ১০০ বছর উদ্যাপন করছে আমাদের প্রতিষ্ঠান। আজকের আয়োজন তারই অংশ। আশা করি এই উদ্যোগ নতুন প্রজন্মের মনে কোয়ান্টাম সায়েন্স ও প্রযুক্তির প্রতি ভালবাসা জাগাবে। ভারতকে বিশ্বমঞ্চে স্থাপন করবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy