-ফাইল ছবি।
'কালো যদি মন্দ তবে, কেশ পাকিলে কান্দো কেনে?'
সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কবি' উপন্যাসে উল্লিখিত এই গানের পঙক্তি বাঙালির জীবনে প্রবাদ হয়ে রয়েছে। কেশ পাকলে কান্নাকাটির পিছনে যে অন্য কারণ কাজ করছে, তা জানা গেল সাম্প্রতিক গবেষণায়। শুধু তা-ই নয়, জানা গেল পক্ককেশের পুনরায় কালো হয়ে ওঠার সম্ভাবনার কথাও।
মানসিক চাপ, অবসাদ দূর হয়ে গেলে ধূসর চুল রং ফিরে পায়। হয়ে ওঠে কালো। ফেরে তার স্বাভাবিক রঙে, ছন্দে। যে বয়সে চুল পাকার কথা বা ধূসর হয়ে যাওয়ার কথা নয়, সেই বয়সেই।
একটি নজরকাড়া গবেষণা এই মন ভাল করা খবর দিয়েছে। যা চুল নিয়ে এত দিনের ‘যা যায় তা আর ফেরে না’-গোছের ধারণার মর্মমূলে সজোরে ধাক্কা দিল বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ।
গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা 'ইলাইফ'-এ। মঙ্গলবার। ইতিমধ্যেই সেটি সকলের নজর কাড়ার কারণ, সম্প্রতি ইঁদুরের উপর পরীক্ষা চালিয়ে অন্য একটি গবেষকদল দেখেছিল, মানসিক চাপ কমালে তাদের চুল আর আগের রং ফিরে পায় না। ইঁদুরের ক্ষেত্রে আমাদের ‘যা যায় তা আর ফেরে না’ ধারণাটিরই প্রমাণ মেলায় হতাশ হতে হয়েছিল। কিন্তু এই গবেষণা ফের আশার আলো দেখাল।
মূল গবেষক আমেরিকার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাগেলোস কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন্স-এর সাইকিয়াট্রি ও নিউরোলজি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর মার্টিন পিকার্ড বলেছেন, “গভীর মানসিক চাপে, অবসাদে ‘বুড়োটে হয়ে পড়া’ ধূসর রঙের চুল চাপ, অবসাদমুক্ত হওয়ার পর কী ভাবে আবার ‘তরুণ’ হয়ে ওঠে, ফেরে তার পুরনো কালো রঙে, সেটা বুঝতে পারলে হয়তো আগামী দিনে সঠিক ভাবে বোঝা যাবে অকাল বার্ধক্যের জন্য কেন ও কতটা দায়ী মানসিক চাপ, অবসাদ।” ঠিক কী পরিমাণে মানসিক চাপ চুলের রং বদলে দেয়, এই প্রথম তার পরিমাণগত বিশ্লেষণ করা হয়েছে এই গবেষণায়।
গবেষকরা দেখেছেন, মানুষের মাথায় চুলের উৎপত্তি ও গজিয়ে ওঠার জন্য মূল ভূমিকা থাকে মানবদেহের কয়েকটি প্রোটিন আর কোষে থাকা মাইটোকনড্রিয়ার। প্রতিটি চুলের দৈর্ঘ্যের কমা-বাড়া আর চুলের রং বদলে বড় ভূমিকা থাকে প্রোটিনগুলির মাত্রার বৃদ্ধি-হ্রাসে। মানসিক চাপ, অবসাদ বাড়লে সেই প্রোটিনগুলির মাত্রায় অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়। তখনই চুলের রং হয়ে যায় ধূসর। তাই মানসিক চাপ কমলে যখন প্রোটিনগুলির মাত্রা ফের স্বাভাবিকতায় পৌঁছয়, গবেষকরা দেখেছেন, তখন মাথার চুলও ফেরে তার আগের কালো রঙে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy