সেই প্রাচীনতম অণুজীবের জীবাশ্ম।
আমাদের এই বাসযোগ্য গ্রহে এ বার হদিশ মিলল আদিমতম প্রাণের।
পাওয়া গেল ৩৭৭ কোটি থেকে ৪২৮ কোটি বছর আগেকার অণুজীবের জীবাশ্ম। উত্তর-পূর্ব কানাডার নুভভুয়াগিত্তিক এলাকায়। পাথরের খাঁজেই লুকিয়ে ছিল সেই অণুজীবের জাবাশ্ম। ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র চুলের চেয়েও পাতলা ওই অণুজীবের জীবাশ্মটিকে পাওয়া গিয়েছে আদ্যোপান্ত স্ট্রয়ের মতো একটা টিউবের চেহারায়। খালি চোখে যাদের দেখা সম্ভব নয় কোনও দিনই। বিজ্ঞানীদের দাবি, এটাই এখনও পর্যন্ত হদিশ মেলা পৃথিবীর আদিমতম অণুজীবের জীবাশ্ম। এর আগে যে আদিমতম অণুজীবের জীবাশ্মের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল, সেটি মিলেছিল পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায়। তার বয়স ছিল ৪৪৩ কোটি বছর।
এই সাড়াজাগানো আবিষ্কারের খবরটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘নেচার’-এর সাম্প্রতিক সংখ্যায়। যদিও বিতর্ক রয়েছে। কোনও কোনও বিজ্ঞানীর মতে, যে হিসেবে এই জীবাশ্মটিকে ‘আদিমতম’ অণুজীবের জীবাশ্ম বলা হয়েছে, তা পুরোপুরি নির্ভুল নাও হতে পারে। কানাডায় যে আদিমতম শিলাস্তরের খাঁজে ওই অণুজীবের জীবাশ্মের খোঁজ মিলেছে, ভূমিক্ষয়, মাটির বসে যাওয়া বা তীব্র বায়ুপ্রবাহে নষ্ট হয়ে যাওয়া সেই শিলাস্তর কী ভাবে অটুট থাকল আর কী ভাবেই-বা তার খাঁজে প্রায় অবিকৃতই রয়ে গেল সেই আদিমতম অণুজীবের জীবাশ্মের, তা নিয়ে অবশ্য কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। তাঁদের বক্তব্য, নিয়মিত ভাবে ভূস্তরের পরিবর্তন হয়ে চলেছে। ওপরের ভূস্তর নীচে চলে যাচ্ছে বা নীচের ভূস্তর ওপরে চলে আসছে। এটা হচ্ছে বলেই প্রাণের বিবর্তন বা বিকাশ সম্ভব হয়েছে পৃথিবীতে। পৃথিবী সজীব থাকতে পেরেছে।
কানাডায় যেখানে মিলেছে আদিমতম অণুজীবের জীবাশ্ম।
আবার এটা সত্যি-সত্যিই কোনও অণুজীবের জীবাশ্ম কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। যে শিলাস্তরে ওই আদিমতম অণুজীবের জীবাশ্মের খোঁজ মিলেছে, তার বয়স নিয়েও কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। গবেষকরা অবশ্য জানিয়েছেন, যে শিলাস্তরে ওই আদিমতম অণুজীবের জীবাশ্মের খোঁজ মিলেছে, সেখানে এমন কিছু রাসায়নিক যৌগ পাওয়া গিয়েছে, যা প্রমাণ করে ওই এলাকায় জৈবিক প্রক্রিয়া চলেছিল। যার পরিণতি ওই প্রাণ।
আরও পড়ুন- হাজার হাজার আলোর উজ্জ্বলতম ঝাড়বাতির হদিশ মিলল ব্রহ্মাণ্ডে!
মূল গবেষক ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের বায়োজিওকেমিস্ট ডড ম্যাথু বলেছেন, ‘‘ওই জীবাশ্ম দেখে আমাদের এই বিশ্বাস আরও জোরালো হয়েছে, পৃথিবীতে প্রাণের জন্ম হয়েছিল খুব সরল, সাদাসিধে ভাবেই। আর তার জন্য খুব একটা সময়ও লাগেনি। পৃথিবীর জন্মের (৪৬০ কোটি বছর) অল্প কিছু পরেই অণুজীবের জন্ম হয়েছিল এই বাসযোগ্য গ্রহে। যে জায়গায় ওই জীবাশ্মটি আবিষ্কৃত হয়েছে, সেই এলাকাটি লোহা আর লোহার নানা রকমের অক্সাইড যৌগে ভরা। গোটা হাডসন উপসাগরের পূর্ব উপকূলটাই লোহা আর লোহার নানা রকমের অক্সাইড যৌগে ছিল ভরা। খুব সুদূর অতীতে এই জায়গাটা ছিল সমুদ্রের তলায়। পরে কোনও ছিদ্রপথে নীচের অত্যন্ত গরম জলের স্রোত ওপরে উঠে আসে। আর সেই ‘পথে’ই হয়তো ওপরে উঠে এসে শিলাস্তরের খাঁজে আটকে গিয়েছিল ওই আদিমতম অণুজীবের জীবাশ্ম।’’
অধ্যাপক ডড ম্যাথু বলেছেন, ‘‘এর থেকে মনে হচ্ছে, খুব সুদূর অতীতে হয়তো প্রাণ ছিল মঙ্গলেও। কারণ, একই ভাবে আর কাছাকাছি সময়েই পৃথিবী আর মঙ্গলের জন্ম হয়েছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy