যাঁদের বাড়ি থেকে ৩০০ মিটার দূর পর্যন্ত রয়েছে সবুজের সমারোহ, তাঁদের স্ট্রোকের আশঙ্কা ১৬ শতাংশ কমেছে।-প্রতীকী ছবি।
বাড়ি থেকে বেরিয়েই একফালি সবুজ শুধুই যে মনের আনন্দে হাঁটার শক্তি জোগায়, তা-ই নয়। কমিয়ে দিতে পারে স্ট্রোকের আশঙ্কাও। অন্তত ১৬ শতাংশ।
সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এই খবর দিয়েছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক পরিবেশবিজ্ঞান সংক্রান্ত গবেষণা পত্রিকা ‘এনভায়রনমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল’-এ। বৃহস্পতিবার।
বাড়ি থেকে বাইরে পা ফেলার পর সেই সবুজ জমি কতটা পর্যন্ত থাকলে স্ট্রোকের আশঙ্কা কমতে পারে সেখানকার বাসিন্দাদের সেটাও মেপে দেখেছেন স্পেনের বার্সিলোনায় আইএমআইএম হাসপাতালের গবেষকরা। তাঁরা দেখেছেন, যাঁদের বাড়ি থেকে ৩০০ মিটার বা এক মাইলের পঞ্চমাংশ দূর পর্যন্ত রয়েছে সবুজের সমারোহ, তাঁদের স্ট্রোকের আশঙ্কা ১৬ শতাংশ কমেছে। গবেষণাটি চালানো হয়েছে ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে, স্পেনের ক্যাটালোনিয়া এলাকায় যেখানে থাকেন অন্তত ৩৫ লক্ষ মানুষ। গবেষকরা ওই এলাকা জুড়ে থাকা সব মানুষের শরীর-স্বাস্থ্যের হাল-হকিকৎ জেনেছেন সেখানকার জনস্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান থেকে।
স্নায়ুবিজ্ঞানী কার্লা অ্যাভেলানেদা বলেছেন, ‘‘স্ট্রোকের আশঙ্কার সঙ্গে যে পরিবেশেরও সম্পর্ক রয়েছে এই গবেষণায় সেই ছবিই বেরিয়ে এল।’’
স্ট্রোকের ঘটনা, মৃত্যু, বা স্ট্রোকে বিভিন্ন অঙ্গ অচল হয়ে পড়ার ঘটনা উত্তরোত্তর উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে গোটা বিশ্বেই। এই পরিস্থিতিতে কী কী কারণে স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়তে পারে তা খতিয়ে দেখাও গবেষকদের প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সবুজ, প্রচুর গাছপালা নানা ভাবে প্রভাব ফেলে মানুষের শরীরে। শারীরিক ও মানসিক অবসাদ কমায়। মানুষকে নিয়মিত ব্যায়াম করার জায়গা করে দেয়। উন্নতি ঘটায় মানসিক স্বাস্থ্যেরও।
বর্তমানে সেই প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে মানবমস্তিষ্ক, স্নায়ু ও হৃদ্যন্ত্রেরও সম্পর্ক খুঁজতে শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা।
গবেষকরা তাই শুধুই সবুজের সমারোহ খুঁজে তাঁদের কাজ শেষ করেননি। খতিয়ে দেখেছেন কোন এলাকায় কী পরিমাণে কোন কোন দূষণ কণা থাকছে বাতাসে, সেই সবও। দেখেছেন বাতাসে নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড গ্যাস, আড়াই মাইক্রন ব্যাসের দূষণ কণা ও বাতাসে ভেসে থাকা কার্বনের গুঁড়োর পরিমাণও।
গবেষকরা দেখেছেন, প্রতি বর্গমিটার বাতাসে যদি নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে ১০ মাইক্রোগ্রাম হয়ে যায় তা হলেই সেই এলাকার বাসিন্দাদের স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়ে অন্তত চার শতাংশ।
বাতাসে এই নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ বাড়ে মূলত গাড়িঘোড়ার জন্য। ফলে, গাড়িঘোড়ার ব্যবহার যত কমানো যায় বা সেগুলির থেকে যত দূরে থাকা সম্ভব স্ট্রোকের আশঙ্কা ততই কমতে পারে।
গবেষকরা এও দেখেছেন, নানা ধরনের আর্থ-সামাজিক কারণ, বয়স ও ধূমপানের অভ্যাস বাদ দিলেও স্ট্রোকের আশঙ্কা কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে সবুজ পরিবেশ।
সেই একফালি সবুজই কি হারিয়ে যাচ্ছে না শহর থেকে উত্তরোত্তর? তা হলে শেষমেশ বলতেই হবে— ‘চল গভীরে যাই, শিকড়ে, শহর ছেড়ে গ্রামে?’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy