সেরে ওঠার পরেও কেন মৃদু কোভিড রোগী ভোগেন শ্বাসকষ্ট, প্রদাহে? -ফাইল ছবি।
ঘরশত্রু বিভীষণ হয়ে ওঠে মানবদেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থার কয়েকটি কোষই। যাঁরা মৃদু কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের সেরে ওঠার কয়েক মাস পরেও। ওই বিভীষণ কোষগুলির জন্যই সেরে ওঠার কয়েক মাস পরেও নানা ধরনের প্রদাহের সমস্যায় ভুগতে হয় মৃদু কোভিড রোগীদেরও।
সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এই খবর দিয়েছে। গবেষণাটি যৌথ ভাবে চালিয়েছে সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট এবং জার্মানির হেল্মহোৎজ সেন্টার মিউনিখ ও মিউনিখের টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক চিকিৎসাবিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘মিউকোসাল ইমিউনোলজি’-তে। মঙ্গলবার।
দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থার জন্য অনেক ধরনের কোষ রয়েছে। তাদের অন্যতম— ‘মাইক্রোফাজেস’। গবেষকরা দেখেছেন, মৃদু বা উপসর্গহীন কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে এরা ঘরশত্রু বিভীষণের মতো আচরণ করে। নানা ধরনের প্রদাহে ইন্ধন জোগায়। কোষের স্বাভাবিক বিপাক ক্রিয়াগুলিকে আর স্বাভাবিক থাকতে দেয় না। মৃদু কোভিড রোগী সেরে ওঠার পরের তিন থেকে পাঁচ মাস পর্যন্ত অন্তত। কোনও কোনও ক্ষেত্রে তারও বেশি সময়। ফলে, কোভিড থেকে সেরে ওঠার পরেও ওই সময় রোগীরা নানা ধরনের প্রদাহের সমস্যায় ভোগেন। যে প্রদাহ শ্বাসকষ্টেরও কারণ হয়ে ওঠে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য এ কথা জানা ছিল যে, কোভিড যাঁদের ভয়াবহ হয়ে উঠেছিল সেরে ওঠার পরেও তাঁদের দীর্ঘ দিন প্রদাহ-সহ নানা ধরনের উপসর্গ থাকে। কিন্তু কেন মৃদু বা উপসর্গহীন কোভিড রোগীদের সেরে ওঠার কয়েক মাস পরেও নানা ধরনের প্রদাহ হয়, ভুগতে হয় শ্বাসকষ্টে, এই গবেষণাই প্রথম তার উপর আলোকপাত করল।
গবেষণার এই ফলাফলে পৌঁছতে যাঁরা মৃদু কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন এমন ৬৮ জনের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। তার পাশাপাশি, যাঁদের কখনও কোভিড হয়নি এমন ৩৬ জনেরও রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল।
গবেষকরা মাইক্রোফাজেস কোষগুলিকে গবেষণাগারে করোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন, নানা ধরনের স্টেরয়েড ও লাইপোপলিস্যাকারাইড (যা প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে জাগিয়ে তুলতে ভূমিকা নেয়) দিয়ে উদ্দীপিত করেছিলেন। সেই সময় সংশ্লিষ্ট জিনগুলির ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হয়। ওই সময় মাইক্রোফাজেস কোষগুলিতে কী পরিমাণে আইকোস্যানোয়েড প্রোটিন থাকে তা-ও মেপে দেখেন গবেষকরা। যেহেতু এই আইকোস্যানোয়েড প্রোটিনই নানা ধরনের প্রদাহের প্রধান কারণ।
মূল গবেষক ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী ক্রেগ হুইলক বলেছেন, ‘‘কোভিডে আক্রান্ত হলে প্রতিরোধ ব্যবস্থার মাইক্রোফাজেস কোষগুলিতে আইকোস্যানোয়েড প্রোটিনের মাত্রা অনেক বেড়ে যায়, এটা আগেও জানা ছিল। কিন্তু এমনকি, মৃদু কোভিড রোগীদের সেরে ওঠার পরেও যে তাঁদের মাইক্রোফাজেস কোষগুলিতে সেই প্রোটিনের মাত্রা অস্বাভাবিকই থাকে, তা এই প্রথম জানা গেল। এও দেখা গিয়েছে, রোগীদের সেরে ওঠার বহু দিন পরেও মাইক্রোফাজেস কোষগুলিতে অস্বাভাবিক পরিমাণে থাকে লিউকোট্রায়েনেজ উৎসেচকও। এই উৎসেচকের অস্বাভাবিক মাত্রা-বৃদ্ধিই হাঁপানি-সহ নানা ধরনের জটিল শ্বাসকষ্টজনিত রোগের অন্যতম কারণ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy