—প্রতীকী ছবি।
ভেস্তে গেল ইউরোপের প্রথম মঙ্গল লাফ!
সৌরজগতে ৫০ কোটি কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে নির্ভুল ভাবে নিজের প্যারাসুটও খুলে ফেলেছিল। মঙ্গলের কক্ষপথে বেশ কয়েক বার চড়কি পাকও দেয়। মঙ্গলের মাটি থেকে তখন তার অবস্থান মাত্র এক মিনিটের উচ্চতায়। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ)-তে তখন সিগন্যাল দেওয়া স্ক্রিনের দিকে নিষ্পলক চোখে চেয়ে রয়েছে কতগুলো চোখ। আর কিছু ক্ষণের অপেক্ষা মাত্র। ঠিক এক মিনিট পরেই মঙ্গলের মাটি স্পর্শ করবে স্কিয়াপারেল্লি মার্স ল্যান্ডার। ঠিক তখনই দুর্ঘটনা ঘটে গেল। লাল গ্রহের মাটি ছোঁয়ার প্রাক-মুহূর্তেই ধ্বংস হয়ে গেল স্কিয়াপারেল্লি মার্স ল্যান্ডার।
বৃহস্পতিবার এই দুর্ঘটনার পর, প্রেস বিবৃতিতে ইএসএ-র স্পেসক্র্যাফ্ট অপারেশন ম্যানেজার অ্যান্ড্রি অ্যাকোমাজো জানান, মঙ্গলের মাটি থেকে ঠিক এক কিলোমিটার উপরেও সিগন্যাল ছিল। তখনও স্পেস ল্যান্ডার ঠিকঠাক কাজ করছিল। মাটি স্পর্শ করা থেকে মাত্র ১ মিনিট দূরে আচমকাই সিগন্যাল চলে যায়। তার পর থেকে আর ‘ট্র্যাক’ করা যাচ্ছে না স্পেস ল্যান্ডারটিকে। বিজ্ঞানীদের অনুমান, সেটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সিগন্যাল না পাওয়ায় কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল আর ঠিক কোন জায়গাতে ঘটেছে তা বোঝা যাচ্ছে না। তবে এমনটা যে হতে পারে তা মঙ্গলের কক্ষপথে স্পেস ল্যান্ডারের পা দেওয়ার পরেই আন্দাজ করতে পেরেছিলেন ইএসএ-র বিজ্ঞানীরা। কারণ, মঙ্গলের আবহাওয়ায় যেমনটা কাজ করার কথা ছিল ল্যান্ডারটির, প্রথম থেকেই তাতে নাকি খানিকটা খামতি ছিল।
এই সেই স্কিয়াপারেল্লি মার্স ল্যান্ডার
মঙ্গলে প্রাণের সন্ধানে দীর্ঘ দিন ধরেই সেখানে মহাকাশযান পাঠাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। মিথেন গ্যাসের অস্তিত্ব সন্ধানে লাল মাটি খুঁড়ে নিয়ে আসা হচ্ছে পৃথিবীতে। স্কিয়াপারেল্লি মার্স ল্যান্ডারের উদ্দেশ্য অবশ্য একটু ভিন্ন ছিল। এক নতুন প্রযুক্তিকে মঙ্গলে প্রবেশাধিকার দেওয়ার চেষ্টা ছিল এই অভিযানে। স্কিয়াপারেল্লি মার্স ল্যান্ডার বয়ে নিয়ে গিয়েছিল ২ মিটার লম্বা ড্রিল মেশিন। প্রাণের সন্ধানে সেখানে মাটি খুঁড়তে সাহায্য করত এই ড্রিল। বিজ্ঞানীদের আশা ছিল, অভিযান সফল হলে আরও সহজ হত এই গবেষণা। কিন্তু তার আগেই ধ্বংস হয়ে যায় যানটি। ইতালির মহাকাশচারী জিওভ্যান্নি স্কিয়াপারেল্লি নামে এই যানটির নাম রাখা হয়েছিল। গত রবিবারই তার উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল।
স্কিয়াপারেল্লি মার্স ল্যান্ডারের পাঠানো সেই শেষ সিগন্যালটা ধরা পড়ে পুণেতে ভারতের মেগা টেলিস্কোপে। পুণের ৮০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত এই টেলিস্কোপটি হল দ্য জায়েন্ট মিটার ওয়েভ রেডিও টেলিস্কোপ (জিএমআরটি)। ন্যাশনাল সেন্টার ফর রেডিও অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের ডিরেক্টর স্বর্ণ ঘোষ বলেন, ‘‘অনেক সময়ই কোনও কিছুর সঙ্গে সংঘর্ষে আগুন লেগে গেলে সিগন্যাল চলে যায়। এমনও হতে পারে ল্যান্ডার সুরক্ষিত ভাবেই মাটি স্পর্শ করেছিল। তার পর কোনও যান্ত্রিক কারণে সিগন্যাল হারিয়ে ফেলেছে। এ ক্ষেত্রে কী ঘটেছে এখনই বলতে পারব না।’’
আরও পড়ুন: কৃত্রিম ধমনীও বানিয়ে ফেললেন বিজ্ঞানীরা, বাড়বে শরীরের সঙ্গেই!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy