করোনাভাইরাসকে আক্রমণ করছে অ্যান্টিবডি (বাঁ দিকে)। -প্রতীকী ছবি।
মানুষের দেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা (‘ইমিউন সিস্টেম’) যে অ্যান্টিবডিগুলি তৈরি করে সেগুলিই করোনাভাইরাসের আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠা রুখে দিতে পারে। ওই অ্যান্টিবডিগুলিকে ব্যবহার করে চিকিৎসা চালানো হলে মৃদু বা মাঝারি ভাবে আক্রান্ত কোভিড রোগীরা আর ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছন না। কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যায়। ফলে টিকার পাশাপাশি অ্যান্টিবডি চিকিৎসাও খুব কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে কোভিডের ক্ষেত্রে।
সম্প্রতি আমেরিকায় দু’টি বড় মাপের ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা এ কথা জানিয়েছে। পিয়ার রিভিউ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর গবেষণাপত্রটি এখন আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকায় প্রকাশের অপেক্ষায়।
ক্লিনিক্যাল পরীক্ষাগুলি দেখিয়েছে অ্যান্টিবডি চিকিৎসার একটি ক্ষেত্রে সাফল্যের হার ৮৫ শতাংশ। অন্য ক্ষেত্রে সেই হার ৮৭ শতাংশ। এর অর্থ, ওই অ্যান্টিবডিগুলি ব্যবহার করে চিকিৎসা চালানো হলে মৃদু ও মাঝারি ভাবে আক্রান্ত কোভিড রোগীদের আর বেশি দিন হাসপাতালে রাখার প্রয়োজন হচ্ছে না। কোভিড আর ভয়াবহ হয়ে উঠছে না। কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা কমে যাচ্ছে উল্লেখযোগ্য ভাবে।
বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার’ জানাচ্ছে, এমন দু’টি অ্যান্টিবডি নিয়ে বেশ বড় মাপের ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা চালানো হয়েছে আমেরিকায়। একটির নাম ‘ভিআইআর (ভির)-৭৮৩১’। অন্যটি দু’টি অ্যান্টিবডি ‘বামলানিভিমাভ’ ও ‘এটেসিভিমাভ’-এর ককটেল।
‘নেচার’ জানিয়েছে, একটি ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা চালানো হয়েছে শুধুই ভিআইআর ৭৮৩১ অ্যান্টিবডি দিয়ে। অন্য ক্লিনিক্যাল পরীক্ষাটি চালানো হয়েছে দু’টি অ্যান্টিবডি ‘বামলানিভিমাভ’ ও ‘এটেসিভিমাভ’-এর ককটেল দিয়ে। তিনটি কোভিড রোগীদের রক্তের নমুনা থেকে তিনটি অ্যান্টিবডিই বানিয়েছে সান ফ্রান্সিসকোর ‘ভির বায়োটকনোলজি’ সংস্থা।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অতিমারি শুরুর পরপরই অ্যান্টিবডি চিকিৎসা নিয়ে ভাবনাচিন্তা ও গবেষণার সূত্রপাত হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় এতটা সাফল্য মেলেনি বলে সেই গবেষণায় কিছুটা ভাটা পড়ে যায়। এখন মিলছে তার কারণ, দীর্ঘ সময় ধরে সার্স কভ-২ ভাইরাসের সঙ্গে সঙ্গে লড়াই চালাতে চালাতে মানুযের দেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভাইরাসটিকে আগের চেয়ে বেশি করে জানতে, চিনতে শুরু করেছে। তার ফলে তাদের অকেজো করে দেওয়ার অ্যান্টিবডিগুলিও বানাতে পারছে। যত দিন যাবে ততই সার্স কভ-২ ভাইরাসকে আরও বেশি পরিমাণে অকেজো করে দেওয়ার কায়দা কৌশল শিখে ফেলবে মানুষের দেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা।
গবেষকরা জানিয়েছেন, তিনটি অ্যান্টিবডির মধ্যে একটি (ভিআইআর-৭৮৩১) মানুষের শরীরে তৈরি হয়ে গিয়েছিল ২০০৩ সালেই, প্রথম সার্স কভ ভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পরপরই। এ বারের ক্লিনিক্যাল পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে এই অ্যান্টিবডি সার্স কভ-২ ভাইরাসকে অকেজো করে দেওয়ার ব্যাপারেও সমান পটু। একই ভাবে কার্যকরী হচ্ছে।
ঘটনাচক্রে করোনায় লাগাম টানতে অ্যান্টিবডি চিকিৎসার সঙ্গে গণহারে অ্যান্টিজেন পরিক্ষার কথা বহু দিন থেকেই বলে আসছে বিশ্বের অনেক দেশ। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসার পর সে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে একটি চিঠি লিখে কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে, ‘কোভিড সংক্রমণে লাগাম পরাতে অবিলম্বে বাসস্ট্যান্ড, স্টেশনের মতো জায়গায় অ্যান্টিজেন পরীক্ষার উপর জোর দেওয়া উচিত রাজ্যের’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy