কোভিড পরীক্ষার নয়া পদ্ধতির উদ্ভাবন। -ফাইল ছবি।
র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা (‘র্যাট’)-র চেয়েও তাড়াতাড়ি ফলাফল জানা যাবে। আর সেই ফলাফল আরটিপিসিআর পদ্ধতির মতোই নিখুঁত হবে।
কোভিড পরীক্ষার এমনই একটি নয়া পদ্ধতি উদ্ভাবন করলেন আমেরিকার জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। এই পদ্ধতিতে কোভিড পরীক্ষা চালানো হবে অত্যন্ত সংবেদনশীল (‘হাইলি সেনসিটিভ’) একটি সেন্সর দিয়ে।
গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা পত্রিকা ‘ন্যানো লেটার্স’-এ। সোমবার।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এই পদ্ধতি আগামী দিনে কোভিড পরীক্ষার জন্য জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারে। কারণ, এই পদ্ধতিতে র্যাট পরীক্ষার চেয়ে অনেক তাড়াতাড়ি ফলাফল জানা যাবে এবং ফলাফলের দিক থেকেও অনেক বেশি নিখুঁত হবে। আবার আরটিপিসিআর পরীক্ষা যেমন দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী ও যথাযথ পরিকাঠামোর অভাবে যত্রতত্র করানো সম্ভব হয় না, এই অভিনব পরীক্ষা পদ্ধতিতে সেই সমস্যাও থাকবে না। পরীক্ষার জন্য নমুনাকে বিভিন্ন তাপমাত্রা ও নানা ধরনের দ্রবণে রাখারও প্রয়োজন হবে না। অথচ ফলাফল আরটিপিসিআর পরীক্ষা পদ্ধতির মতোই নিখুঁত হবে। এই পদ্ধতির সুবিধা অনেক বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে অনেক কম সময়ে পৌঁছে দেওয়া যাবে।
গবেষণাপত্রের দুই সিনিয়র অথরের অন্যতম— জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ঈশান বর্মন বলেছেন, ‘‘অত্যন্ত সহজ এই পদ্ধতি। সেন্সরের উপর শুধু লালারস ফেললেই হবে। সেই লালারস পরীক্ষা করেই নিখুঁত ভাবে বলে দেওয়া যাবে কোভিড পজিটিভ, নাকি নেগেটিভ। পরীক্ষার জন্য আলাদা ভাবে কোনও রাসায়নিক ব্যবহার করতে হবে না। অ্যান্টিবডিগুলিকে সক্রিয়, শক্তিশালী করে তোলারও প্রয়োজন হবে না। এই সেন্সরকে ‘ওয়্যারেব্ল ডিভাইস’-এর মতোই ব্যবহার করা যাবে।’’
গবেষকদের দাবি, বাজারে চালু হলে এই পদ্ধতি র্যাট এবং আরটিপিসিআর, কোভিড পরীক্ষার এই দু’টি পদ্ধতিরই সীমাবদ্ধতা ও সমস্যাগুলি দূর করতে পারবে।
গবেষণাপত্রটি জানিয়েছে, শুধুমাত্র লালারস পরীক্ষা করে (এমনকি, উপসর্গহীন বা মৃদু কোভিডের ক্ষেত্রেও) এই সেন্সরের মাধ্যমে পরীক্ষা-পদ্ধতির সাফল্যের হার ৯২ শতাংশ। যা একমাত্র আরটিপিসিআর পদ্ধতির সঙ্গে তুলনীয় হতে পারে। একই সঙ্গে এই সেন্সর ‘ইনফ্লুয়েঞ্জা এ’ (এইচওয়ানএনওয়ান) ভাইরাস ও জিকা ভাইরাসকেও শনাক্ত করতে পারবে শুধুমাত্র লালারস পরীক্ষা করেই।
বিশেষ ধরনের ‘সারফেস-এনহ্যান্সড রমন স্পেকট্রোস্কোপি’ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মেশিন লার্নিং পদ্ধতি ব্যবহার করে এই সেন্সর বানানো হয়েছে। একসঙ্গে বহু মানুষের লালারস পরীক্ষার জন্য ডিসপোজেব্ল চিপও ব্যবহার করা যেতে পারে এই সেন্সর বসিয়ে। খুব শক্ত বা ভাঁজ করা যায় এমন তলেও (‘সারফেস’) এই সেন্সরের মাধ্যমে লালারস পরীক্ষা করা সম্ভব। এই পদ্ধতিতে রমন স্পেকট্রোস্কোপি যন্ত্র থেকে ফেলা লেজার রশ্মি দিয়ে দেখা হবে অণুগুলির কম্পন। সেই কম্পনের তারতম্য খতিয়ে দেখেই বলা যাবে, লালারসে কোন ধরনের ভাইরাস রয়েছে। তা কোভিডের, নাকি ফ্লু অথবা জিকা ভাইরাস। আর সেই ভাইরাস লালারসে খুব সামান্য পরিমাণে থাকলেও (যাকে বলা হয়, ‘ভাইরাস লোড’) মেশিন লার্নিং পদ্ধতির মাধ্যমে তা ধরা পড়বে এই সেন্সরে।
বিমান বন্দর, রেল স্টেশন বা খেলার স্টেডিয়ামের মতো জনাকীর্ণ এলাকাতেও খুব স্বচ্ছন্দে এই সেন্সর ব্যবহার করে কোভিড, ফ্লু বা জিকা ভাইরাসে কেউ আক্রান্ত হয়েছেন কি না তা খুব তাড়াতাড়ি বলা সম্ভব হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy