চন্দ্রযান-৩-এর রোভার প্রজ্ঞান। ছবি: ইসরো।
চাঁদে দেখতে দেখতে প্রায় এক সপ্তাহ কাটিয়ে ফেলল চন্দ্রযান-৩। ইসরোর রোভার প্রজ্ঞান ছ’দিন কাটিয়ে ফেলেছে পৃথিবীর উপগ্রহের মাটিতে। ছ’টি চাকায় ভর করে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে চলেছে রোভারটি। চলছে তার অনুসন্ধানও। চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে যে অংশে ল্যান্ডার বিক্রম অবতরণ করেছে, আগে অন্য কোনও দেশ সেখানে মহাকাশযান পাঠাতে পারেনি। ফলে ওই এলাকাটি পৃথিবীর বিজ্ঞানীদের কাছে অজানা। প্রজ্ঞান যে তথ্য পাঠাচ্ছে, তা চাঁদ নিয়ে গবেষণার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
ইসরোর তরফে প্রজ্ঞানের গতিবিধি এবং কাজকর্ম সম্পর্কে প্রায় প্রতি দিনই কিছু না কিছু তথ্য জানানো হচ্ছে। টুইটে নানা কথা ভাগ করে নিচ্ছে ইসরো। তাদের টুইটের ভিত্তিতে জানা যাচ্ছে, চাঁদে কী কী করছে বিক্রম আর প্রজ্ঞান।
গত ২৩ অগস্ট, বুধবার ঠিক সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে চাঁদের মাটিতে পা রেখেছিল তৃতীয় চন্দ্রযানের ল্যান্ডার বিক্রম। পাখির পালকের মতো অবতরণ (সফ্ট ল্যান্ডিং) করেছে ল্যান্ডারটি, যা এর আগে কেউ কখনও করতে পারেনি। অবতরণের কয়েক ঘণ্টা পরে বিক্রমের পেট থেকে দরজা খুলে বেরিয়ে এসেছে প্রজ্ঞান। এটি ছ’চাকার একটি ছোট রোভার, যার গতিবেগ সেকেন্ডে এক সেন্টিমিটার মাত্র। চাঁদের এবড়োখেবড়ো মাটিতে এই গতিতেই বাজিমাত করছে ইসরো।
২৪ অগস্ট, বৃহস্পতিবার সকালে রোভারের অবতরণের কথা টুইটে জানায় ইসরো। রোভারটির চাকায় এক দিকে অশোকস্তম্ভ এবং অন্য দিকে ইসরোর লোগো খোদাই করা রয়েছে। সেটি চললেই এই চিহ্নগুলি আঁকা হয়ে যাচ্ছে চাঁদের মাটিতে। ল্যান্ডার মডিউলের পেলোডগুলিও বৃহস্পতিবার থেকেই কাজ করছে। ইলসা, চ্যাস্টে, রম্ভা এবং অ্যারের কৌশলে প্রতিনিয়ত চাঁদের পরিবেশ সম্পর্কে জানতে পারছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।
শুক্রবার, ২৫ অগস্ট রোভার প্রজ্ঞানের গতিবিধির একটি ভিডিয়ো টুইট করে ইসরো। দেখা যায় ল্যান্ডার থেকে বেরিয়ে ধীর গতিতে কী ভাবে এগিয়ে চলেছে রোভারটি। তার চাকার দাগ পড়ছে চাঁদের মাটিতে। ওই দিনই সন্ধ্যায় আরও একটি টুইটে ইসরো জানায়, চাঁদে আট মিটার পথ অতিক্রম করেছে প্রজ্ঞান। তার পেলোডগুলি সব ঠিকঠাক কাজ করছে বলেও জানানো হয়। বেঙ্গালুরুর অফিস থেকেই প্রজ্ঞানের গতিবিধি আংশিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
শনিবার ইসরো টুইট করে জানায়, চন্দ্রযান-৩ অভিযানের মূল যে তিনটি লক্ষ্য ছিল, তার মধ্যে দু’টি পূরণ করা হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ, চাঁদের মাটিতে সফল ভাবে ল্যান্ডারের অবতরণ এবং রোভারকে ওই জমিতে চলাফেরা করানো— এই দুই-ই করে দেখিয়েছে ইসরো। অভিযানের তৃতীয় উদ্দেশ্য ছিল, চাঁদের মাটিতে অনুসন্ধান। সেই কাজ চলছে বলে জানায় ইসরো।
এর মাঝেই চাঁদে যেখানে চন্দ্রযান-৩ অবতরণ করে, সেই জায়গার নামকরণ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি জানান, অবতরণস্থলের নাম হবে ‘শিবশক্তি পয়েন্ট’। এ ছাড়া, যেখানে চার বছর আগে চন্দ্রযান-২ ভেঙে পড়েছিল, তার নাম হবে ‘তেরঙা পয়েন্ট’। ২৩ অগস্ট দিনটিকে জাতীয় মহাকাশ দিবস হিসাবেও ঘোষণা করেন মোদী।
২৭ অগস্ট ইসরো জানায়, চাঁদের মাটির উষ্ণতা পরিমাপ করে সেই তথ্য পৃথিবীকে জানিয়েছে প্রজ্ঞান। সেখানে দেখা গিয়েছে, চাঁদের মাটির গভীরে উষ্ণতা অপেক্ষাকৃত বেশি। সোমবার ইসরো প্রজ্ঞানকে নিয়ে নতুন তথ্য দেয়। চাঁদের মাটিতে চার মিটার চওড়া একটি গর্তের মুখোমুখি হয়েছিল রোভারটি। ইসরোর বিজ্ঞানীরা তাকে ফিরিয়ে আনেন। পরিকল্পনামাফিকই সব চলছে বলে জানান তাঁরা।
স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের ডিরেক্টর নীলেশ এম দেশাই জানিয়েছেন, প্রজ্ঞানের হাতে আর বেশি সময় নেই। চাঁদে রাত নামতে আর মাত্র আট দিন বাকি। এই সময়ের মধ্যে দক্ষিণ মেরু থেকে যত বেশি সম্ভব তথ্য এবং নমুনা সংগ্রহের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy