বোয়িং-এর মহাকাশযান ‘স্টারলাইনার’। ছবি- নাসার সৌজন্যে।
এ বার পৃথিবীর মায়া কাটাতে চলেছে বোয়িং।
পৃথিবীর আকাশে এত দিন ভরশূন্য অবস্থায় ছোটার সুযোগ পায়নি বোয়িং বিমান। সব সময়েই তাঁকে বাঁধা পড়ে থাকতে হয়েছে পৃথিবীর জোরালো মাধ্যাকর্ষণ বলের ‘মায়া’য়। নীলাভ গ্রহের কেন্দ্রমুখী টানে।
এ বার কিন্তু পৃথিবীর সেই মায়া কাটাতে চলেছে বোয়িং। ছুটতে চলেছে মহাকাশে। একেবারে ভরশূন্য অবস্থায়। বিমান থেকে মহাকাশযানে বদলে গিয়ে।
নাসার জেট প্রোপালসন ল্যাবরেটরি (জেপিএল)-এর একটি সূত্র সোমবার ‘আনন্দবাজার অনলাইন’-কে এই খবর দিয়েছে। জানিয়েছে, বোয়িং কোম্পানির বানানো মহাকাশযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্টারলাইনার’। সেই স্টারলাইনার-এ চাপিয়েই এ বার বিভিন্ন দফায় নাসা মহাকাশচারী পাঠাবে ভূপৃষ্ঠের প্রায় ৪০০ কিলোমিটার উপরের কক্ষপথে প্রদক্ষিণরত আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে।
১৯১৬ সালে দুই আসনের ‘সি প্লেন’ চালিয়ে তাঁর সংস্থার গোড়াপত্তন করলেও ১৯২৭-এ আমেরিকার সিয়াট্ল থেকে ব্রিটিশ কলম্বিয়ার ভিক্টোরিয়ায় আন্তর্জাতিক স্তরে প্রথম এয়ারমেল বিমান ওড়ায় (এয়ারমেলার) আমেরিকার শিল্পোদ্যোগী ও ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক উইলিয়াম বোয়িং-এর হাতে গড়া সংস্থা বোয়িং। তার ৯৫ বছর পর এ বার মহাকাশেও পাড়ি দিতে চলেছে বোয়িং-এর যান। মহাকাশে যার যাওয়া-আসা শুরু হতে চলেছে আগামী বছরের প্রথমার্ধ থেকেই।
নাসা সূত্রের খবর, বোয়িং এত দিন মূলত যাত্রী ও মালবাহী বিমান তৈরি করা ও সেগুলি চালালেও গত শতাব্দীর শেষের দিক থেকেই সংস্থা জড়িয়ে পড়ে আমেরিকার প্রতিরক্ষা বিভাগের সঙ্গে। তৈরি করতে শুরু করে আমেরিকার নৌ ও বিমানবাহিনীর জন্য বিমান। এমনকি যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্রও। পরে নয়ের দশকের শেষের দিক থেকে বোয়িং বানাতে শুরু করে রকেট, রকেট ও মহাকাশযানের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশও।
নয়ের দশকের একেবারে শেষভাগে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন চালু হওয়ার পর থেকেই সেখানে বিভিন্ন গবেষণা ও স্টেশনের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নাসা তার মহাকাশচারীদের পাঠাত নিজেদের বানানো মহাকাশযানে। কিন্তু ২০১১ সাল থেকে সেই প্রকল্প বন্ধ করে দেয় নাসা। তার পর গত ১০ বছর ধরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে নিজেদের মহাকাশচারী পাঠানোর জন্য নাসা মুখাপেক্ষী হয়ে থেকেছে, এখনও থাকে রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা ‘রসকসমস’-এর বানানো মহাকাশযানের। তবে ২০১৪ সালেই নাসা সিদ্ধান্ত নেয় এই পরনির্ভরতার পথ থেকে তারা বেরিয়ে আসবে। তখনই ঠিক হয়, এ বার আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে নিজেদের মহাকাশচারী ও রসদ পাঠানোর জন্য বোয়িং-এর বানানো মহাকাশযান ব্যবহার করবে নাসা।
গত অগস্টেই পরীক্ষামূলক ভাবে বোয়িং-এর স্টারলাইনার মহাকাশযানটিকে মহাকাশ স্টেশনে পাঠাতে চেয়েছিল নাসা। কিন্তু তার মূল সেফ্টি ভালভে কিছু গলদ দেখা দেওয়ায় তা স্থগিত রাখা হয়। কিন্তু বোয়িং তার মহাকাশযানে সেই গলদ সারিয়ে ফেলেছে বলে নাসা সূত্রের খবর।
নাসা জানাচ্ছে, আগামী বছরের গোড়ার দিকেই বোয়িং-এর স্টারলাইনার মহাকাশযান প্রথম যেতে পারে মহাকাশ স্টেশনে। যদিও তাতে কোনও মহাকাশচারী থাকবেন না। সেই পরীক্ষা সফল হলে আগামী বছরের মাঝামাঝি থেকেই স্টারলাইনারই হয়ে উঠতে চলেছে মহাকাশ স্টেশনে নাসার মহাকাশচারী পাঠানোর প্রধান যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy