মঙ্গলের বুক থেকে এই সব শব্দ শুনেছে নাসার রোভার ‘পারসিভের্যান্স’। ছবি- নাসার সৌজন্যে।
পৃথিবী থেকে ৩৯ কোটি কিলোমিটারেরও বেশি দূরে থাকা ‘লাল গ্রহ’ মঙ্গলে এখনও বাতাস বয়ে চলে। ওঠে ভয়ঙ্কর ধূলিঝড়ও। সেই ঝড়ে প্রায় ঢাকাই পড়ে যায় লাল গ্রহের আকাশ।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ঘনত্ব যতখানি, তার ১০০ ভাগের মাত্র এক ভাগ পুরু মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল। যার অর্থ, পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে ১০০ মিটারের দূরত্ব যতখানি মঙ্গলের পিঠ (‘সারফেস’)-এর উপর ঠিক ততখানি উচ্চতা পর্যন্তই এখনও টিকে রয়েছে লাল গ্রহের বায়ুমণ্ডল। ফলে, পৃথিবীতে বাতাস বইলে তার শব্দ যে মাত্রায় শোনা যায় মঙ্গলে বাতাস বওয়ার শব্দ তার চেয়ে বেশ ক্ষীণই বলা যায়।
তবে লাল গ্রহে খুবই ঘন ঘন ধুলোর ঝড় ওঠে। পৃথিবীর মরুভূমিগুলিতে ওঠা ঝড়ের চেয়ে যা অনেক বেশি ভয়ঙ্কর। সেই ধূলিঝড়ে মঙ্গলের বুকে অচল হয়ে গিয়েছে বিভিন্ন দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থাগুলির পাঠানো বহু ল্যান্ডার ও রোভার। বছর কয়েক আগেই নিথর, নিস্তব্ধ হয়ে গিয়েছে নাসার রোভার- ‘অপরচুনিটি’।
নাসার পাঠানো সর্বশেষ রোভার ‘পারসিভের্যান্স’-এ থাকা দু’টি খুব শক্তিশালী মাইক্রোফোনে ধরা পড়েছে মঙ্গলের বুকে বাতাস বওয়া আর ভয়ঙ্কর ধূলিঝড়ের শব্দ।
মঙ্গলে গত শতাব্দীর সাতের দশক থেকেই নাসা, ‘ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (এসা)’-সহ বিভিন্ন দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা বহু ল্যান্ডার ও রোভার পাঠিয়েছে। তাদের কোনওটাটিতেই মাইক্রোফোন ছিল না।
এ বার নাসার পাঠানো ৬ চাকার রোভার পারসিভের্যান্স-এ রয়েছে দু’টি মাইক্রোফোন। দু’টিই অত্যন্ত শক্তিশালী। একটি মাইক্রোফোন রয়েছে রোভারের মাস্তুলের একটি দিকে। অন্য মাইক্রোফোনটি রয়েছে রোভারের ‘চেসিস’-এ। একেবারে অন্দরে।
১) গত ফেব্রুয়ারিতে পারসিভের্যান্স মঙ্গলের বুকে নামার পর থেকে অক্টোবরের ১০ তারিখ পর্যন্ত এই দু’টি মাইক্রোফোনে ধরা পড়েছে মঙ্গলের বুকে বাতাস বয়ে চলা, ধূলিঝড়ের শব্দ।
২) ধরা পড়েছে লাল গ্রহের শক্ত পাথরে রোভারের চাকা গড়িয়ে এগিয়ে চলার শব্দ।
৩) ধরা পড়েছে রোভার থেকে মঙ্গলের নানা ধরনের পাথর ও শিলাখণ্ডের উপর লেজার রশ্মির আছড়ে পড়া শব্দ। যে শব্দের তারতম্য শুনে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন, কোন ধরনের শিলা কী কী পদার্থ দিয়ে তৈরি সেই মুলুকে। তা কতটা শক্তপোক্ত।
৪) সেই দু’টি মাইক্রোফোনে ধরা পড়েছে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলের বুকে নাসার রোভারের অবতরণের ১৮ ঘণ্টা পরেই লাল গ্রহের বাতাসের শব্দ। এমনকি ঠিক তার পরের দিন (২০ ফেব্রুয়ারি)-এও যে শব্দ শোনা গিয়েছিল লাল গ্রহের বুকে, সেটাও ধরা পড়ছে দু’টি মাইক্রোফোনে।
৫) এ ছাড়াও এই রোভারের সঙ্গে এ বার প্রথম যে হেলিকপ্টারটি (যার নাম- ‘ইনজেন্যুইটি’) পাঠানো হয়েছে লাল গ্রহে, তার মাথায় থাকা রোটারগুলির শব্দও ধরা পড়েছে। যা পৃথিবীর চেয়ে অনেক গুণ জোরে বন বন করে ঘোরে মঙ্গলের আকাশে ইনজেন্যুইটি-র ওড়ার সময়। পৃথিবীর তুলনায় বায়ুমণ্ডল খুব পাতলা বলেই মঙ্গলের আকাশে ওড়ার শক্তি জোগাড় করতে ইনজেন্যুইটি-র রোটারগুলিকে ঘুরতে হয় অনেক বেশি গতিতে।
ছবি ও ভিডিয়ো সৌজন্যে-নাসা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy