Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

মহানগরে চলতি মাসেই খুলছে পরিবেশ আদালত

অবশেষে চালু হতে চলেছে জাতীয় পরিবেশ আদালতের কলকাতা বেঞ্চ। আগামী ২৪ মে এই বেঞ্চের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। ২৬ মে থেকে নিউটাউনের ফিনান্স সেন্টারে এই বেঞ্চের কাজকর্ম শুরু হতে পারে। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির যাবতীয় পরিবেশ সংক্রান্ত মামলার বিচার করবে কলকাতার বেঞ্চে। সিকিম এবং আন্দামানের মামলাগুলিও এই বেঞ্চেই আসবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৪ ০১:৫৭
Share: Save:

অবশেষে চালু হতে চলেছে জাতীয় পরিবেশ আদালতের কলকাতা বেঞ্চ। আগামী ২৪ মে এই বেঞ্চের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। ২৬ মে থেকে নিউটাউনের ফিনান্স সেন্টারে এই বেঞ্চের কাজকর্ম শুরু হতে পারে। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির যাবতীয় পরিবেশ সংক্রান্ত মামলার বিচার করবে কলকাতার বেঞ্চে। সিকিম এবং আন্দামানের মামলাগুলিও এই বেঞ্চেই আসবে।

দেশের বিভিন্ন পরিবেশ সংক্রান্ত মামলার প্রেক্ষিতে ২০১০ সালে সংসদে জাতীয় পরিবেশ আদালত আইন পাশ হয়। সেই আইনের ভিত্তিতেই ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে বিচারপতি লোকেশ্বর সিংহ পন্তাকে চেয়ারম্যান করে জাতীয় পরিবেশ আদালত গঠিত হয়। ঠিক হয়েছিল, দিল্লিতে মূল আদালতের পাশাপাশি কলকাতা শহর-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই আদালতের একটি করে বেঞ্চ তৈরি করা হবে। পরিকল্পনামাফিক ইতিমধ্যে চেন্নাই, পুণে ও ভোপালে বেঞ্চ চালু হয়ে গেলেও নানা সমস্যার জন্য পরিবেশ আদালতের কলকাতার বেঞ্চ এত দিন চালু করা যায়নি।

পরিবেশ আদালত সূত্রের খবর, কলকাতার ঠিক কোথায় আদালত হবে এবং বিচারপতিদের বাসস্থান কোথায় হবে, তা নিয়েই সমস্যা ছিল। প্রাথমিক ভাবে জাদুঘর চত্বরের ভিতরে একটি জায়গা দেখা হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু জায়গাটি ছোট হওয়ায় সেখানে আদালত খোলা নিয়ে আপত্তি তুলেছিল কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক। আদালতের জায়গা পাওয়া নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগও উঠেছিল সে সময়। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও দায়ের হয়। গত বছর জুলাই মাসের মাঝামাঝি কলকাতা থেকে এই বেঞ্চ গুয়াহাটি কিংবা রাঁচিতে সরিয়ে নেওয়া যায় কি না, সে ব্যাপারেও কেন্দ্র ভাবনাচিন্তা শুরু করেছিল।

শেষ পর্যন্ত ফিনান্স সেন্টারে জায়গা পাওয়ার পর সোমবার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জাতীয় পরিবেশ আদালত আশিস সেনাপতিকে এই বেঞ্চের রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ করেছে। পরিবেশ সংক্রান্ত মামলাগুলির আর্জি তাঁর কাছেই এখন থেকে জমা পড়বে বলে জানানো হয়েছে। তবে এই বেঞ্চে কোন কোন বিচারপতি বসবেন, তা নিশ্চিত করে কিছু জানানো হয়নি। পরিবেশ আদালতের একটি সূত্রে অবশ্য বলা হচ্ছে, বিচারপতি পি জ্যোতিমণি এবং আদালতের বিশেষজ্ঞ সদস্য তথা পরিবেশবিদ পি সি মিশ্র এই বেঞ্চে বসতে পারেন।

পরিবেশ আদালতের কলকাতা বেঞ্চ খোলার ঘোষণা হওয়ায় খুশি রাজ্যের তামাম পরিবেশকর্মী। এত দিন এই ধরনের মামলা কলকাতা হাইকোর্টে অথবা সরাসরি দিল্লিতে পরিবেশ আদালতের মুখ্য বেঞ্চে করতে হত। শহরের পরিবেশকর্মীরা বলছেন, কলকাতা বেঞ্চ তৈরি হওয়ার ফলে এ বার থেকে হাইকোর্ট বা অন্যান্য আদালতে পরিবেশ সংক্রান্ত মামলা করার কোনও প্রয়োজন পড়বে না। সরাসরি এই আদালতেই পরিবেশ সংক্রান্ত মামলা করা যাবে। এর রায়ে সন্তুষ্ট না হলে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা যেতে পারে। এই মুহূর্তে হাইকোর্টে পরিবেশ সংক্রান্ত

যে মামলাগুলি বিচারাধীন রয়েছে, সেগুলিও পরিবেশ আদালতের কলকাতা বেঞ্চে চলে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন মহানগরের পরিবেশকর্মীরা।

পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলছেন, হাইকোর্টে অনেক মামলা জমে থাকে। ফলে পরিবেশ মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে অনেক সময় লাগে। “পরিবেশ আদালতে এই সংক্রান্ত মামলাগুলির দ্রুত নিষ্পত্তি হতে পারে।”বলছেন সুভাষবাবু। পরিবেশ আদালতের নতুন বেঞ্চকে স্বাগত জানাচ্ছেন রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্তারাও। তাদের এক শীর্ষকর্তার মতে, এই আদালতের ফলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন।

অন্য বিষয়গুলি:

environment court kolkata bench new town
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE