চম্পারন নয়, নববর্ষে বানিয়ে ফেলুন বিহারের মৈথিলী মাংস। —নিজস্ব চিত্র।
নিরামিষ মাংস? তা-ও আবার হয় নাকি? এ যেন সোনার পাথরবাটি। কিন্তু যদি ফিরে দেখেন, দেখবেন শাক্ত মন্দিরে বলির পাঁঠার মাংস পেঁয়াজ -রসুন বর্জিত এক অনন্য উপায়ে রান্না করেই মায়ের পায়ে নিবেদিত হয়। লোকমুখে তার নামই হয়েছে নিরামিষ মাংস। এত দিন এর কথাই জানতাম। কিন্তু পরে রেণুকাদেবীর লেখায় জানতে পারি, এরই এক প্রকারভেদের কথা, যা আমাদের পড়শি রাজ্য বিহারের ঐতিহ্য। বড় মায়াময় তার নাম। জনকের হলকর্ষণের সময়ে যে কন্যার আবির্ভাব, যিনি পরবর্তী কালে হয়ে ওঠেন আমাদের মহাকাব্যের মহানায়িকা, তাঁর নামেই এ মাংসের পদের নাম বড় আদরের সঙ্গে রাখা হয়েছে মৈথিলী মাংস। ইদানীং বহুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে বিহারের চম্পারন মাংস। মাটির হাঁড়িতে মাংসের সঙ্গে সব উপকরণ একসঙ্গে মাখিয়ে নিয়ে দমেই হয় সেই রান্না। কিন্তু সে রাজ্যেরই মৈথিলী মাংসের স্বাদ আরও অপূর্ব। সামান্য উপকরণ দিয়েই বানিয়ে ফেলা যায় মাংসের এই পদটি। নববর্ষের ভোজে ভিন্ন স্বাদের মাংসের কোনও পদ রাঁধতে হলে এই পদটিকে কিন্তু রাখতেই পারেন পছন্দের তালিকায়।
উপকরণ:
৫০০ গ্রাম পাঁঠার মাংস
৩ টেবিল চামচ টক দই
১ চা চামচ লঙ্কার গুঁড়ো
১ চা চামচ ধনে গুঁড়ো
১ চা চামচ জিরে গুঁড়ো
২ চা চামচ দারচিনি গুঁড়ো
দেড় চা চামচ আদা বাটা
আধ চা চামচ হিং
স্বাদ অনুযায়ী নুন
২ টেবিল চামচ ঘি
১ চা চামচ চিনি
৪-৫টি ছোট এলাচ
৪-৫টি লবঙ্গ
প্রণালী:
প্রথম ধাপ: এ রান্নার জন্য প্রথমে একটি বড় পাত্রে মাংস নিয়ে নিন। তাতে একে একে ঢেলে দিন টক দই, লঙ্কার গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, জিরে গুঁড়ো, দারুচিনি গুঁড়ো, আদাবাটা আর হিং। সব উপকরণ মাংসের সঙ্গে খুব ভাল করে মেখে নিয়ে রেখে দিন ঘণ্টাখানেকের জন্য।
দ্বিতীয় ধাপ: এ বার কড়াই আঁচে বসান। তাতে কোনও ফোড়ন বা তেল না দিয়েই ঢেলে দিন আগে থেকে মেখে রাখা মাংস। এর পর ঢেলে দিন দুই থেকে আড়াই কাপ জল। খানিক ক্ষণ পর স্বাদ অনুযায়ী নুন দিয়ে ভাল করে নাড়াচাড়া করে নিয়ে আঁচ কমিয়ে ঢাকা দিয়ে দিন কড়াইটি।
তৃতীয় ধাপ: মাঝেমধ্যে ঢাকা খুলে রান্নাটি নাড়িয়ে দিয়ে আবারও ঢাকা দিয়ে দিন। এ সময়ে যদি জল বেশি শুকিয়ে যায়, তবে অল্প করে গরম জল মিশিয়ে দিতে পারেন। যদি সময়ের অভাব থাকে, তা হলে প্রেশার কুকারের ব্যবহার করতেই পারেন।
চতুর্থ ধাপ: যখন দেখবেন মাংস সুসেদ্ধ হতে আর মিনিট পাঁচেক বাকি, তখন কড়াইটি আঁচ থেকে নামিয়ে আর একটি কড়াই আঁচে বসান। তাতে ঘি গরম করে দিয়ে দিন চিনি। চিনিতে রং ধরলে ছোট এলাচ, লবঙ্গ, দারচিনি গুঁড়ো আর সামান্য হিং মিশিয়ে দিন। মশলা থেকে সুগন্ধ বার হলে তাতে দিয়ে দিন আগে থেকে রান্না করে রাখা মাংস। এ বার আঁচ বাড়িয়ে দিন।
পঞ্চম ধাপ: মাংস ভাল ভাবে সেদ্ধ হয়ে এলে এবং ঝোলের উপরে তেল ভেসে উঠলেই বুঝবেন তৈরি হয়ে গিয়েছে অপূর্ব স্বাদের মৈথিলী মাংস। ভাত কিংবা পোলাওয়ের সঙ্গে এই পদটি পরিবেশন করলে জমে যাবে নববর্ষের ভূরিভোজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy