পুরীর মন্দিরের ভোগ ডালমা। ছবি: সংগৃহীত
মঙ্গলবার রথযাত্রা। বিশেষ এই দিনটি ঘিরে বিপুল জনসমাগম হয় শ্রীক্ষেত্র পুরীতে। যদিও পুরীর মন্দিরে প্রতি দিনই জগন্নাথদেবকে ছাপ্পান্ন ভোগ নিবেদন করা হয়। তবু রথযাত্রা উপলক্ষে বিশেষ আয়োজন থাকে এ সময়ে। জগন্নাথের ভোগে মূলত দুই ধরনের খাবার দেওয়া হয়। এক দিকে থাকে ভাত, ডাল, তরিতরকারি, খিচুড়ি জাতীয় রান্না করা খাবার। আর থাকে খাজা, গজা, খই, মুড়কি জাতীয় শুকনো খাবার।
এই ভোগ রান্নার প্রক্রিয়াও বেশ মজার। তা নিয়ে নানা রকম গল্পও প্রচলিত রয়েছে। মন্দির প্রদক্ষিণ করতে গেলে এই পাকশালা ঘুরিয়ে দেখানোও হয় পর্যটকদের। রান্নাঘরে একটি পাত্রের উপরে আর একটি পাত্র উপর উপর বসিয়ে এমন করে মোট ৭টি পাত্র আগুনে বসানো হয় রান্নার জন্য। এই পদ্ধতিতে যে পাত্রটি সবচেয়ে উপরে বসানো থাকে, তার রান্না হয় সবার আগে। তার নীচের হাড়ির রান্না হয় তার পরে। এ ভাবে সবচেয়ে দেরিতে হয় সবচেয়ে নীচের পাত্রের রান্না। পাত্রের মুখ বন্ধ করা থাকে। রান্না মাঝে নাড়াচাড়া করারও প্রয়োজন পড়ে না। অথচ প্রতিটি রান্না হয় অতুলনীয়। অনেকেই বিশ্বাস করেন, এই পুরো পদ্ধতিটি জগন্নাথদেবের আশীর্বাদ ছাড়া সম্ভব নয়।
ভোগে কোনও বিদেশি সব্জি বা মশলার ব্যবহার নিষিদ্ধ। সারা দিনে যে তিন বার ভোগ নিবেদন করা হয়, তার মধ্যে দুপুর ১২টা থেকে ১টার মধ্যে যে মধ্যাহ্ন ভোগটি দেওয়া হয়, তা সকলের কাছেই বিশেষ আকর্ষণীয়। এই ভোগে থাকে মোট ৪০টি পদ। তার মধ্যে একটি হল ‘ডালমা’। বিভিন্ন রকম সব্জি দিয়ে তৈরি ডালের একটি ওড়িয়া পদ হল এই ডালমা। কী ভাবে তৈরি করবেন সেই ডালমা? রইল তার রেসিপি।
উপকরণ
অরহড় ডাল: দেড় কাপ
ছোলার ডাল: দেড় কাপ
পটল: ২-৩টি
মিষ্টি কুমড়ো: ১ বাটি (ডুমো করে কাটা)
কাঁচা কলা: ১টি।
ঝিঙে: ১টি
মুলো: ২টি
মুখী কচু বা গাঠি কচু: ১ কাপ (দুই টুকরো করে কাটা)
আদা বাটা: ২-৩ চামচ
সৈন্ধব নুন: স্বাদ অনুযায়ী
হলুদ: সামান্য
গুড়: ৩ কাপ
ঘি: ৪-৫ টেবিল চামচ
হিং: ১ চামচ
শুকনো লঙ্কা: ৪-৫টি
তেজপাতা: ২টি
পাঁচফোড়ন: ১ চা চামচ
নারকোল কোরা: ২ টেবিল চামচ
প্রণালী
১) প্রথমে দু’রকম ডাল ভাল করে ধুয়ে এক ঘণ্টা জলে ভিজিয়ে রাখুন।
২) এর পর ডালমার মশলা বানিয়ে নিন।
৩) গোটা জিরে, গোটা ধনে, গোলমরিচ, মেথি দানা, লবঙ্গ, দারচিনি, বড় এলাচ, শুকনো লঙ্কা, মৌরি এবং তেজপাতা শুকনো খোলায় ভেজে নিন। মশলা সামান্য ঠান্ডা করে মিক্সিতে গুঁড়িয়ে রাখুন।
৪) পটলের খোসা চেঁছে দুই টুকরো করে কেটে নিন। একই ভাবে ঝিঙে চেঁছে নিন। টুকরো করে কেটে নিন।
৫) কুমড়ো, বেগুন, কাঁচাকলা, মুলো এবং কচু ডুমো করে কেটে নিন।
৬) এ বার একটি বড় পাত্রে ডাল, মুলো, কাঁচকলা নিয়ে সেদ্ধ চাপিয়ে দিন। ডাল অর্ধেক সেদ্ধ হয়ে এলে তাতে বাকি সব সব্জি এবং নুন দিয়ে সেদ্ধ করে নিন।
৭) অন্য একটি কড়াইয়ে ঘি দিয়ে শুকনো লঙ্কা, পাঁচফোঁড়ন, তেজপাতা ফোড়ন দিয়ে একটু নেড়ে তাতে হলুদ, আদা বাটা, হিং দিয়ে ফোড়ন বানিয়ে নিন।
৮) সেদ্ধ ডাল-সব্জির মধ্যে ওই মশলা দিয়ে ফুটিয়ে নিন।
৯) এতে দিয়ে দিন ভাজা মশলা। সব উপকরণ ভাল মতো মিশিয়ে নিয়ে সামান্য ফুটিয়ে নিন। গুড় এবং নারকেল কোরা দিয়ে ফের নাড়াচাড়া করে নিন। উপরে আরও খানিকটা ঘি ছড়িয়ে দিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy