Advertisement
E-Paper

‘কে দেখাশোনা করবে, খাওয়াবে, পড়াবে’? নাতিকে ২০০ টাকায় ‘বিক্রি’ করলেন হতদরিদ্র ঠাকুরমা

ঘটনাটি ওড়িশার বাদলিয়া গ্রামের। পুলিশ সূত্রে খবর, বৃদ্ধার নিজেরই মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। বহু বছর আগে স্বামী মারা গিয়েছেন। পুত্র নিখোঁজ। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে পুত্রবধূর মৃত্যু হয়েছে।

নাতির ভবিষ্যতের কথা ভেবেই দম্পতির হাতে তুলে দিচ্ছিলেন, দাবি বৃদ্ধার। ছবি: সংগৃহীত।

নাতির ভবিষ্যতের কথা ভেবেই দম্পতির হাতে তুলে দিচ্ছিলেন, দাবি বৃদ্ধার। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৫ ১৩:০১
Share
Save

কে ওকে দেখাশোনা করবে, কেই বা খাওয়াবে, পড়াবে? কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে এই উত্তরই দিয়েছিলেন বৃদ্ধা। নাতির ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই তাকে ২০০ টাকায় ‘বিক্রি’ করেছেন। ঘটনাটি ওড়িশার বাদলিয়া গ্রামের।

মাঁদ সোরেন। বছর পঁয়ষট্টির এই বৃদ্ধার বিরুদ্ধে সাত বছরের নাতিকে বিক্রির অভিযোগ ওঠার ঘটনা ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে ওড়িশায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০০ টাকার বিনিময়ে এক অজ্ঞাতপরিচয় দম্পতির হাতে নাতিকে তুলে দেন মাঁদ। তাঁর বিশ্বাস ছিল, ওই দম্পতির কাছে থাকলে নাতি খেয়েপরে থাকতে পারবে। ওর একটা ভবিষ্যৎ তৈরি হবে। কিন্তু নাতিকে ‘বিক্রি’ করার খবর পৌঁছে গিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসনের কাছে। সেখান থেকে খবর যায় শিশুকল্যাণ দফতর এবং পুলিশের কাছে।

খবর পেয়েই বাদলিয়া গ্রামে পৌঁছয় পুলিশ এবং শিশুকল্যাণ দফতরের আধিকারিকরা। শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। শিশুকল্যাণ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি বৃদ্ধা তাঁর নাতিকে বিক্রি করেননি। আর্থিক অনটনের কারণে নাতির ভবিষ্যতের কথা ভেবে দম্পতির হাতে তুলে দিয়েছেন। বৃদ্ধা জানিয়েছেন, তাঁর নিজের অন্নসংস্থানের নিশ্চয়তা নেই, নাতি যাতে ভাল ভাবে খেয়েপরে থাকতে পারে, তার জন্যই দম্পতির হাতে তুলে দিয়েছেন। শিশুটিকে উদ্ধার করে বারিপদা শিশুসুরক্ষা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।”

পুলিশ সূত্রে খবর, বৃদ্ধার নিজেরই মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। কোনও নিজস্ব জমিও নেই। বহু বছর আগে স্বামী মারা গিয়েছেন। একমাত্র পুত্র নিখোঁজ। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে পুত্রবধূর মৃত্যু হয়েছে। সহায় বলতে একমাত্র নাতিই রয়েছে তাঁর। নিজের বয়স হয়েছে। ছোট্ট নাতির দেখাশোনা করার মতো শারীরিক সামর্থ্য তো নেই, নেই আর্থিক জোরও। তাই নাতিকে নিয়ে সব সময়ই চিন্তায় থাকতেন মাঁদ। কোনও রকম সরকারি সাহায্য পাননি বলেও দাবি বৃদ্ধার। কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেননি। নাতির কথা ভেবে পাশের গ্রামে বোনের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন বৃদ্ধা। সেখানে থেকে নাতির জন্য ভিক্ষা করতে বেরোতেন। কিন্তু শরীর ক্রমে খারাপ হয়ে পড়ছিল। ভিক্ষা করার মতো শারীরিক সামর্থ্যও হারিয়ে ফেলছিলেন। তাই বৃদ্ধার দাবি, নাতির ভবিষ্যতের কথা ভেবেই এক দম্পতির হাতে তুলে দিয়েছিলেন তিনি। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই জেলা প্রশাসন থেকে বৃদ্ধার অবস্থার খোঁজখবর নেওয়া হয়। তাঁকে বাড়ি বানিয়ে দেওয়া এবং পেনশন দেওয়ারও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।

Odisha Grandson

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}