ব্যাঙের ছাতার মতো বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ খুলে চাহিদার তুলনায় যোগান বহু গুণ বাড়ালে পরিণাম কী হয়, এত দিন তা টের পাচ্ছিলেন ইঞ্জিনিয়াররা। আর এখন সেই একই সমস্যায় ভুগছেন ডাক্তারবাবুরা। সরকার মেডিকাল কলেজ খোলার পদ্ধতি ও শর্ত শিথিল করার পর যেখানে সেখানে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে অজস্র মেডিকাল কলেজ। প্রতি বছর হাজারে লাখে এমবিবিএস পাশ করা ডাক্তার বেরচ্ছে, কিন্তু বেশির ভাগের কপালেই চাকরি জুটছে না। সেই যে পুরনো রসিকতা ছিল, এমবিবিএস-এর ফুল ফর্ম হল ‘মা-বাবার বেকার সন্তান’, তা যেন এখন সত্যি হল। প্রাইভেট প্র্যাকটিসের বাজারেও চরম কম্পিটিশন। পাড়ায় পাড়ায় পান-বিড়ির দোকানের থেকেও সংখ্যা বেশি ডাক্তারদের চেম্বারের। রোগী টানার বিভিন্ন রকম অফার। কোনও চেম্বারের বাইরে লেখা— ‘এক বার চিকিৎসা করালে পরের ছয় মাস বিনামূল্যে চিকিৎসা করা হয়।’ কোথাও: ‘এক জনের ফি দিন, আর পরিবারের তিন জনের চিকিৎসা করান বিনামূল্যে।’ রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় বিজ্ঞাপন— ‘দিনরাত্রি যে কোনও সময় কল দিলে বাড়ি গিয়ে সুলভে রোগী দেখা হয়।’ অনেকে আবার টেবিল-চেয়ার নিয়ে গলায় স্টেথো ঝুলিয়ে রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড বা ফুটপাতে বসে রোগী দেখছেন বিশ-ত্রিশ টাকায়। অনেক ডাক্তারবাবু সাইকেলে চেপে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে হাঁক ছাড়ছেন, ‘চিকিৎসা করাবেন গো, চিকিৎসা! ফি মাত্র বিশ টাকা।’ ফেরিওয়ালা যেমন হাঁক দেয়, ঠিক তেমনি। অনেকেই বেরিয়ে এসে ছোটখাটো রোগের প্রেসক্রিপশন করিয়ে নিচ্ছেন। ডাক্তারবাবুদের সর্বনাশ হলেও সাধারণ মানুষের পৌষ মাস। ডাক্তার দেখানোর জন্য সারা দিন দাঁড়িয়ে থাকা ও মাত্রাতিরিক্ত ফি থেকে মুক্তি। হাতুড়ে ডাক্তাররা ডাক্তারি ছেড়ে সত্যিকারের হাতুড়ি ধরেছে। তারা নতুন ডাক্তারদের বসার জন্য শক্তপোক্ত চেয়ার-টেবিল বানাচ্ছে।
সুজন কুমার দাস, সুতির মাঠ, বহরমপুর
লিখে পাঠাতে চান ভবিষ্যতের রিপোর্ট? ঠিকানা:
টাইম মেশিন, রবিবাসরীয়, আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা ৭০০ ০০১।
অথবা pdf করে পাঠান এই মেল-ঠিকানায়: robi@abp.in
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy