Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Rabindranath Tagore

কুইনাইন দিয়ে রান্না হল শুক্তো

রেঁধেছিলেন জানকীনাথ। মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের জামাই। ঠাকুর পরিবারের মেয়েকে বিয়ে মানেই সে ছেলে নিজের কুলে ত্যাজ্য। অগত্যা ঘরজামাই।

ছবি: অমিতাভ চন্দ্র।

ছবি: অমিতাভ চন্দ্র।

কিঙ্কি চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২১ ০৭:০৪
Share: Save:

জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির প্রিন্স দ্বারকানাথের দিদি রাসবিলাসীর সঙ্গে বিয়ে হয় দাদা রাধানাথ ঠাকুরের সহপাঠী, চন্দননগরের গণ্যমান্য পরিবারের সন্তান ভোলানাথ চট্টোপাধ্যায়ের। পিরালি ঠাকুর পরিবারে বিয়ে করার জন্যে তিনি পরিবার ও সমাজ ছাড়তে বাধ্য হন। শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন ঘরজামাই হয়ে। দুই ছেলে মদনমোহন ও চন্দ্রমোহন জন্মানোর প্রায় এক যুগ পরে ঘর ছেড়ে সন্ন্যাস নেন। পরে সন্তানরা বড় হলে এক বার কলকাতায় ফিরে এসে তিনি ছেলেদের উপদেশ দেন, পরের বাড়িতে জীবন না কাটিয়ে নিজের আলাদা বাড়ি তৈরি করতে। জামাই শ্বশুরবাড়িতে থাকলে সে কালেও তাঁর এবং মেয়ের সম্মান ক্ষুণ্ণ হত। ঠাকুর পরিবার আদতে ছিলেন বন্দ্যোপাধ্যায়। (মতান্তরে কুশারী, কিন্তু ‘বন্দ্যোপাধ্যায়’-টিই গবেষকদের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য।) তাঁদের পিরালি ব্রাহ্মণ হয়ে ব্রাহ্মণসমাজে পতিত হওয়ার ঘটনাটি চমকপ্রদ। দক্ষিণডিহির জমিদার রায়চৌধুরীরা ছিলেন চার ভাই— কামদেব, জয়দেব, শুকদেব ও রতিদেব— অঢেল ধনসম্পত্তির মালিক। তার উপর বড় দু’ভাই রাজদরবারের উচ্চপদস্থ কর্মচারী। ফলে তাঁরা হয়ে উঠলেন সমাজের মাথা ও ঈর্ষাপরায়ণ ব্রাহ্মণকুলের চক্ষুশূল। যবন মহম্মদ তাহির পির আলির কৌশলে কয়েকজন ব্রাহ্মণ তাঁর নিমন্ত্রণ গ্রহণ করে স্বধর্মচ্যুত হন। বড় দুই ভাই কামদেব ও জয়দেব হন যথাক্রমে কামাল খাঁ ও জামাল খাঁ। ছোট দু’ভাই শুকদেব ও রতিদেবের দোষ না থাকা সত্ত্বেও ব্রাহ্মণসমাজ তাদের ‘পিরালি’ ব্রাহ্মণ বলে পতিত ঘোষণা করে। এই শুকদেবের জামাই পুরুষোত্তম, মতান্তরে জগন্নাথ বন্দোপাধ্যায় (কিংবা কুশারী) পিরালি ব্রাহ্মণের মেয়েকে বিয়ের অপরাধে পরিবার ও সমাজচ্যুত হন আনুমানিক ১৪৩২ সালে, আর ইনিই হলেন ঠাকুর পরিবারের আদিপুরুষ। তাই যে ব্রাহ্মণসন্তান ঠাকুর পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করেন, তাঁরা আর নিজগৃহে ফিরতে পারেন না। তাই মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের জামাইরা ছিলেন ঘরজামাই। তাঁদের মধ্যে স্বর্ণকুমারীর স্বামী জানকীনাথ ঘোষাল আলাদা বাড়ি করে উঠে গেলেও পরিবার ও সম্পত্তি থেকে ত্যাজ্য হয়েছিলেন।
প্রিন্স দ্বারকানাথের আপন জ্ঞাতি, ঠাকুর পরিবারের পাথুরিয়াঘাটা শাখার হরকুমার ঠাকুরের পুত্র যতীন্দ্রমোহন ঠাকুরের মেয়েরাও শ্বশুরবাড়ি যাননি। তাঁদের পরিবারে ঘরজামাই হিসেবেই আসতেন ব্রাহ্মণসন্তানরা। পিরালি বংশে বিয়ে করে তাঁরাও স্বগৃহে ফিরতে পারেননি। যতীন্দ্রমোহনের কনিষ্ঠা কন্যা মনোরমার স্বামী পুণ্ডরীকাক্ষ মুখোপাধ্যায় ছিলেন মনোরমার আপন পিসির সতীনপুত্র। যতীন্দ্রমোহন বোনের মৃত্যুর পরে বোনের সতীনপুত্রের সঙ্গেই মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন। পিতার পরিবারের দায়িত্ব ছিল মনোরমার হাতে। তিনি অনেক নাটক ও কাব্যগ্রন্থ লিখেছিলেন। আশা করা যায় স্বামী নিয়ে তিনি সুখেই সংসার করেছিলেন। ঠাকুর পরিবারের অভিভাবকেরা ওত পেতে কুলীনঘরের রূপবান ও গুণবান ছেলেকে জামাই হিসেবে শিকার করতেন তাঁদের মেয়েদের জন্যে। আর এক বার ঠাকুর পরিবারের মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয়ে গেলে ছেলের পরিবার আর তাকে ঘরে তুলত না, ফলে অবধারিত ভাবে তাঁরা ঘরজামাই হয়ে থাকতেন। ‘ভারতের শিল্প ও আমার কথা’ বইয়ে অর্ধেন্দ্রপ্রকাশ গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘আমাদের বাড়ি ছিল গঙ্গার খুব কাছে। তখনকার কালে নিয়ম ছিল বাড়ির ছোট-বড় সকলে প্রতিদিন গঙ্গায় স্নান করবে।... নিয়মমত একদিন গঙ্গাস্নান করতে গিয়েই রূপবান তরুণ যজ্ঞেশপ্রকাশ আর বাড়ি ফিরলেন না। সারাদিন তাঁকে আর বাড়িতে দেখা গেল না। অবশেষে রাত একটু বেশি হতে ঠাকুরবাড়ি থেকে খবর এলো। গিরীন্দ্রনাথের (মহর্ষির আপন ভাই, অবনীন্দ্রনাথের পিতামহ) কন্যা কাদম্বিনীর সঙ্গে যজ্ঞেশপ্রকাশের শুভবিবাহ সম্পন্ন হয়েছে।’ অবনীন্দ্রনাথ তখন খুব ছোট। তাঁর ‘আপন কথা’ বইটি থেকে দুই পিসিমা, মহর্ষির দুই ভাইঝি কাদম্বিনী ও কুমুদিনীর কথা জানা যায়। আর একটি মজার জামাই জোগাড়ের ঘটনাও চিত্রা দেবের লেখা থেকে পাওয়া যায়। পাবনার বিখ্যাত চৌধুরী পরিবারের সন্তান আশুতোষ চৌধুরীর (প্রমথ চৌধুরীর দাদা) সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের বন্ধুত্ব হয় বিলেতে গিয়ে। তিনি ছিলেন রবীন্দ্রনাথের যথার্থ সুহৃদ। রবীন্দ্রনাথের ‘কড়ি ও কোমল’ যথোচিত পর্যায়ে সাজিয়ে তিনিই প্রকাশ করেন। বিলেত থেকে ফিরে রবীন্দ্রনাথের মাধ্যমে তিনি ঠাকুরবাড়ির সান্নিধ্যে আসেন। তাঁর সরলস্বভাব ও সাহিত্যানুরাগ ঠাকুরবাড়ির সকলেরই খুব ভাল লাগল। তাঁর আলাপ হল রবীন্দ্রনাথের দাদা হেমেন্দ্রনাথের প্রতিভাময়ী কন্যা প্রতিভার সঙ্গে। তিনি ছিলেন রূপে লক্ষ্মী ও গুণে সরস্বতী। তাঁর অভিনয়ে মুগ্ধ হয়েই রবীন্দ্রনাথ নাটকের নাম রেখেছিলেন ‘বাল্মীকিপ্রতিভা’। আশুতোষ ও প্রতিভার বিয়ের সানাই বাজতে দেরি হয়নি। এই বিয়েতে অত্যন্ত সুখী হয়েছিলেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ। তাঁর মতে এই জামাই হল এক অর্জন, অনেক সাধনায় প্রতিভা এমন পাত্র পেয়েছে। কিন্তু এর আগেরও একটি গল্প আছে। এক দিন কোনও একটি সভায় দাদা সত্যেন্দ্রনাথ ও বৌদি জ্ঞানদানন্দিনীর কন্যা ইন্দিরাকে নিয়ে যাচ্ছিলেন রবীন্দ্রনাথ, পরে সেই একই গাড়িতে উঠেছিলেন আশুতোষ। এই ঘটনা একেবারেই কাকতালীয় কিন্তু হেমেন্দ্রর স্ত্রী নীপময়ী ভয় পেয়েছিলেন, এই বুঝি জামাই হাতছাড়া হয়ে যায়! জ্ঞানদানন্দিনী যদি নিজের মেয়ে ইন্দিরার জন্য এই পাত্রকে ঠিক করে ফেলেন! পরে অবশ্য জ্ঞানদানন্দিনী তাকে আশ্বস্ত করেন। এই বিয়ে উপলক্ষে দু’টি পরিবারের যুবক-যুবতীরা অনেকেই মেলামেশা করেছিলেন। আশুতোষরা ছিলেন সাত ভাই। তাঁদের মধ্যে আশুতোষ ছাড়া আরও তিন ভাইয়ের সঙ্গে ঠাকুর পরিবারের তিন মেয়ের বিয়ে হয়। প্রতিভার সহোদরা প্রজ্ঞাসুন্দরীরও বিয়ে হয় অসমিয়া সাহিত্যের জনক লক্ষ্মীনাথ বেজবরুয়ার সঙ্গে। লক্ষ্মীনাথ তাঁর আত্মজীবনীতে জানিয়েছেন যে, ঠাকুরবাড়ির এই গুণবতী, শিক্ষিতা, সুশীলা মেয়েটির ছবি দেখেই তিনি তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হন এবং বিয়েতে সম্মত হন। যদিও তার নিজের বাড়ি থেকে এসেছিল প্রচণ্ড বাধা, কারণ তখনকার দিনে ঠাকুরবাড়িতে বিয়ে হওয়া মানেই ছেলেকে হারানো। কিন্তু ভবিতব্য আটকায়নি। শুভদৃষ্টির সময় লক্ষ্মীনাথ দেখেছিলেন, প্রজ্ঞা তাঁর দিকে তাকিয়ে হাসছে। জিজ্ঞেস করায় বলেছিল যে, সে যাকে স্বপ্নে দেখেছিল তার সঙ্গে লক্ষ্মীনাথের মুখের আশ্চর্য মিল দেখে সে হেসেছিল। প্রজ্ঞার বিভিন্ন ধরনের রান্নার পরীক্ষা-নিরীক্ষার খুব শখ ছিল। তাঁর লেখা নিরামিষ ও আমিষ রান্না-র বই দু’টি বিস্ময়ের আকর। ব্রাহ্মধর্মী ঠাকুরবাড়িতে কিছু কিছু হিন্দু লোকাচার মানা হত। তবু এত জন ঘরজামাই থাকা সত্ত্বেও কোথাও জামাইষষ্ঠীর বিশেষ রান্নাবান্নার কথা পাওয়া যায় না। গেঁয়ো যোগীর ভিক্ষা না পাওয়ার সূত্র অনুযায়ীই এমন হত কি না, তা অবশ্য জানা নেই।

আশুতোষের চৌধুরীর ভাই প্রমথ চৌধুরীর ‘আত্মকথা’ থেকে জানা যায়, তিনি তখন প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্র। এক দিন অ্যালবার্ট হলে রবীন্দ্রনাথ তাঁর ভাইঝিকে নিয়ে বক্তৃতা করতে এসেছেন। ভাইঝি অসাধারণ সুন্দরী! বক্তৃতার থেকে সেই সুন্দরী গুণবতীকে দেখার আকর্ষণই প্রধান। তিনিই ইন্দিরা। আত্মকথায় এই ঘটনাটির উল্লেখ ঠাকুরবাড়ির মেয়েদের সম্পর্কে সমসাময়িক কালের আগ্রহ এবং কৌতূহলের একটা ছবি ধরা পড়ে৷ পরে এই প্রমথর সঙ্গেই ইন্দিরার বিয়ে হয়। ইন্দিরা খুব ভাল ফরাসি জানতেন এবং প্রমথ চৌধুরী ছিলেন ফরাসি ভাষায় সুপণ্ডিত। বিয়ের আগে লেখা চিঠিপত্রে তাঁদের প্রিয় সম্ভাষণ ছিল ‘Mon Ami’। প্রমথর অসামান্য ব্যক্তিত্বের ছাপ ইন্দিরার ওপর পড়েছিল এবং তাঁদের বিবাহ সুখের হয়েছিল। ইন্দিরা তাঁর স্মৃতিকথা ‘জীবনকথায়’ তাঁর পিসিদের কথা বলেছেন, যাঁরা সবাই ঘরজামাইয়ের ঘরনি ছিলেন। স্বর্ণকুমারীর স্বামী জানকীনাথ অবশ্য বেশি দিন শ্বশুরবাড়িতে থাকেননি, তবে গিন্নিপনায় তিনিও পটু ছিলেন। বিলেতে থাকাকালীন তিনি তেতোর অভাবে কুইনাইন দিয়ে শুক্তুনি রেঁধেছিলেন! মজার কথা আরও আছে। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেজ মেয়ে শরৎকুমারীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল যদুনাথ মুখোপাধ্যায়ের। তাঁর বড় ভাই নীলকমল মুখোপাধ্যায়ের বিয়ে হয়েছিল মহর্ষির ভাই গিরীন্দ্রনাথের বাড়িতে। ফলে ছোট থেকেই যদুনাথের তাঁদের বাড়িতে যাতায়াত ও মেলামেশা ছিল। শরৎকুমারী ও যদুনাথ পরস্পরকে ছোট থেকে চিনতেন। তাই বিয়ের পরও যখন শরৎকুমারী স্বামীকে নাম ধরে ‘যদু, ও যদু...’ বলে ডাকছেন, তখন মহর্ষির স্ত্রী সারদা দেবী বিরক্ত হয়ে মেয়েকে ধমক দিয়ে বলেছিলেন, “‘যদু’, ‘যদু’ কী রে? যদু কি তোর ফুলবাগানের মালি?”

স্বর্ণকুমারী দেবীর মেয়ে হিরন্ময়ীর বিয়ে হয় রাজশাহী কলেজের অধ্যাপক ফণীভূষণ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তিনি ছিলেন নিপাট ভালমানুষ। জানকীনাথ ভীষণই ব্যস্ত আর ভাই জ্যোৎস্নানাথ বিলেতে, তাই কলেজ ছুটির সময় মা আর বোনকে নিয়ে হিরণ্ময়ী প্রতি বছরই উদ্যোগ করে বেড়াতে বেরিয়ে পড়তেন। সরলা লিখছেন, ‘ফণীদাদাকে টেনেহিঁচড়ে দিদিই নিয়ে যেতেন, যা কিছু বন্দোবস্ত করার দিদিই করতেন— স্টেশনে স্টেশনে নামা, ব্রেকভ্যান থেকে লাগেজ নামানো, সঙ্গী চাকরকে দিয়ে খাওয়া-দাওয়ার যোগাড় করা— এ সবেরই কর্তা দিদি। ফণীদাদা বড় স্টিমারে জোড়া ঢেউয়ে ঢেউয়ে ধাক্কা খাওয়া একখানা জলিবোটের মত বিরক্ত হয়ে গজর গজর করতে করতে চলতেন।’ স্বর্ণকুমারীর ছোট মেয়ে সরলা একটু বেশি বয়সে স্বামী হিসেবে পান পঞ্জাবের বিপ্লবী তেজস্বী রামভুজ দত্ত চৌধুরীকে। রামভুজের সঙ্গে বিয়ের পর সরলার কর্মজীবন শুরু হয় পঞ্জাবে। রাজনৈতিক জীবনে রামভুজ ছিলেন সরলার মতোই তেজস্বী ও চরমপন্থী।

এ বার আসি রবীন্দ্রনাথের তিন মেয়ের কথায়। মাধুরীলতা (বেলা) বিবাহ হয় শরৎকুমার চক্রবর্তীর সঙ্গে। বাড়ির অন্যদের অপছন্দ হলেও তিনি স্ত্রীকে লিখলেন, “এমন সম্পূর্ণ নির্ভরযোগ্য জামাই তুমি হাজার খুঁজলেও পেতে না।” সতেরো বছরের দাম্পত্যজীবনে সুখী হয়েছিলেন শরৎ ও মাধুরী। শরৎকুমার ব্যারিস্টার হয়ে দেশে ফিরে এলে কবির ইচ্ছানুযায়ী জোড়াসাঁকোর লালবাড়িতে বাস করে হাইকোর্টে প্রাকটিস শুরু করেন। কিন্তু কবি বিদেশে থাকাকালীন জোড়াসাঁকোর বাড়ি তদারকির ভার ছিল তাঁর ছোট জামাই, অতসীলতা বা মীরার স্বামী নগেন্দ্রনাথের হাতে। শোনা যায় ওই সময় নগেন্দ্র শরতের ওপর অনেক অবিচার করেন। সামান্য খবরের কাগজ কোন জামাইয়ের ঘরে যাবে তা নিয়েও মনান্তর হয়। এ ছাড়াও কবি মেজ জামাই সত্যেন্দ্রনাথ ও ছোট জামাই নগেন্দ্রনাথকে বিদেশে পাঠানোয় শরৎ ও বেলার অভিমান হয়। এ সব কারণে তারা জোড়াসাঁকোর বাড়ি ছেড়ে শ্রীরামপুরের ভাড়াবাড়িতে উঠে যান। তাই বেলা যখন মৃত্যুশয্যায়, তখন কবি প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশের সঙ্গে তাঁর গাড়ি করেই মেয়েকে দেখতে যেতেন দুপুরবেলায়, যখন শরৎ আদালতে থাকতেন। ও দিকে রেণুকার স্বামী সত্যেন্দ্রনাথ আমেরিকা থেকে অকৃতকার্য হয়ে ফেরেন। রবীন্দ্রনাথ চরম ভুল করেন প্রিয়দর্শন তেজস্বী যুবক নগেন্দ্রনাথের সঙ্গে মীরার বিয়ে দিয়ে। রথীন্দ্রকে লেখা মাধুরীলতার চিঠি থেকে জানা যায়, বিবাহের প্রতিটি অনুষ্ঠানেই সে অসভ্যতা করে। উদ্ধত ব্যবহার, বেহিসেবি স্বভাব ও ঋণগ্রস্ততা তাঁর দু’টি সন্তান জন্মানোর পরেও যায়নি। মীরার সঙ্গে নগেন্দ্রর বিচ্ছেদ অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে ও শেষ পর্যন্ত কবির এই মেয়ে-জামাইয়ের আইনানুগ বিচ্ছেদও ঘটে।

অন্য বিষয়গুলি:

Rabindranath Tagore son in law
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy