Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
Short story

গুরুমন্ত্র

গুরুপ্রণাম আর চণ্ডীস্তোত্রের সঙ্গে মুখের হাসি মিশিয়ে মনসা পুজোয় অমায়িক ভাবে মাইক সামলে দিল প্রহ্লাদ।

ছবি: প্রসেনজিৎ নাথ

ছবি: প্রসেনজিৎ নাথ

প্রিয়রঞ্জন পাল
শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২০ ০০:০১
Share: Save:

শেষ যৌবনে পৌঁছে বুকের উপর ঝুলতে থাকা নোংরা-আধছেঁড়া পৈতেটাকে আঁকড়ে ধরল প্রহ্লাদ। বাবা নিশিকান্ত চক্রবর্তী মৃত্যুর আগে পর্যন্ত অক্লান্ত পুরুতগিরি করে গেছেন। সরকারি দপ্তরে দপ্তরির চাকরির সুবাদে আমৃত্যু পেনশন পেয়েছেন বটে, কিন্তু উপোস করে পুজোআচ্চায় কোনও ক্লান্তি ছিল না। স্বভাব-আমুদে মানুষটিকে এ নিয়ে প্রশ্ন করলে মুচকি হেসে চোখ টিপে বলতেন, “এ টু পাইস এক্সট্রা ইনকাম, নজর দিয়ো না ভাইসব, এটা আমাদের পৈতেধারীদের অ্যাডভান্টেজ।”

সেই নিশিকান্তর ছেলে হয়েও প্রহ্লাদ বাপের করে যাওয়া পার্টটাইম ব্যবসায় নামেনি। কম বয়সে পৈতে হওয়া সত্ত্বেও পুরুতগিরি এড়িয়ে গেছে একটিই মাত্র কারণে, তা হল সংস্কৃত।

ব্রাহ্মণসন্তান হয়েও এই ভাষা নিয়ে বড্ড ভুগেছে সে। সংস্কৃত উচ্চারণ আর ব্যাকরণ কোনও ভাবেই আয়ত্তে আসেনি তার। ফলে ইশকুলে সংস্কৃত ক্লাসে ঢুকলে তার মনে হত, বাঘের গুহায় ঢুকেছে। বাঘ ছিলেন স্বয়ং পণ্ডিতমশাই। তার হাত থেকে বাঁচতে বাপের বিড়বিড় করে মন্ত্র বলার মতো সংস্কৃত শ্লোক বলতেই ধমকে উঠতেন পণ্ডিতমশাই, “ওরে মূর্খ! সংস্কৃত দেবভাষা, অমন চোরের মতো বিড়বিড় করে বলতে হয়? স্পষ্ট উচ্চারণে বল।” এর পর টুকটুকে ফর্সা, টিকোলো নাকের পণ্ডিতমশাই নিখুঁত উচ্চারণে উদাত্ত কণ্ঠে বলে উঠতেন, “কিং কুলেন বিশালেন বিদ্যাহীনস্য দেহিনঃ।/ অকুলীনোঽপি শাস্ত্রজ্ঞো দৈবতৈরপি পূজ্যতে॥” শ্লোকের ছন্দে শুধু ক্লাসরুম নয়, গোটা স্কুল যেন আন্দোলিত হত। আরও কুঁকড়ে যেত প্রহ্লাদ যখন শ্লোকের বঙ্গানুবাদে পণ্ডিতমশাই হেসে হেসে বলতেন, “কুলীন বংশে জন্মে মূর্খ হয়ে কিছু লাভ নেই, বরং অকুলীন বংশে জন্মেও শাস্ত্রজ্ঞ হলে দেবতারাও সমাদর করে।”

কিছুতেই সংস্কৃত আয়ত্তে আসত না। অন্যান্য বিষয়ও যে ওর খুব আয়ত্তে ছিল এমন নয়। তবে এইট পাশ করার পর সংস্কৃত বাদ চলে যেতে হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছিল ও। ভাল নম্বর না পেলেও মাধ্যমিক পাশ আটকায়নি। পরে বিচক্ষণ পিসেমশাইয়ের পরামর্শে জেনারেল লাইনে লেখাপড়া করার বদলে আইটিআই পড়েছে। সেখানে কিন্তু মন্দ করেনি। ফলে পাশ করে বেকারও থাকতে হয়নি। জেলায় নতুন তৈরি হওয়া সুতোকলে মাথার ঘাম খুব একটা পায়ে না ফেলেই ফিটারের চাকরি পেয়ে গেছিল।

তার পর সব চলেছিল সংসারের স্বাভাবিক হিসেবেই। সুন্দরী না হোক, সুশ্রী পাত্রী দেখে নিশিকান্ত ছেলের বিয়ে দিতে দেরি করেননি। বছর ঘুরতে না-ঘুরতেই নাতির মুখ দেখে হঠাৎই বুকের বাঁ দিকে ব্যথার ছোট্ট ঢেউয়ে ভেসে চলে গেলেন পরপারে। তার পরও গড়িয়ে চলছিল প্রহ্লাদের জীবনচক্র। বৌ লজ্জার ঘোমটা ছেড়ে পাড়াবিখ্যাত মুখরা হল, নিয়মিত ব্যবধানে আরও দুই সন্তান এল, চুল কিছু কমল, বাকিতে পাক ধরল, ছেলেমেয়েরা হামাগুড়ি ছেড়ে দৌড়ে স্কুলে গেল এবং টপটপ করে সিঁড়ি টপকে ক্রমে উঠে পড়ল উঁচু ক্লাসে। বড় ছেলে এক দিন বড্ড বড় হয়ে বিড়ি টেনে গলগলিয়ে ধোঁয়াও ছাড়ল।

ছেলের বিড়ির ধোঁয়ায় নয়, প্রহ্লাদ চোখে অন্ধকার দেখল সুতোর কারখানায় হঠাৎ তালা পড়ায়। মাঝবয়সে পৌঁছে এমন অগাধ জলে পড়ে গেলে লোকে খড়কুটোকেও আঁকড়ে ধরে, সেখানে প্রহ্লাদ গলার পৈতে আঁকড়ে ধরবে এতে আর আশ্চর্য কী? তবু সংস্কৃত নিয়ে নিজের আজীবন ভীতির কথা বৌকে ও একান্তে জানিয়েছিল। মুখ ঝামটে বৌ বলেছিল, “ভারী এসেছেন উনি পণ্ডিতমশাই, করবেন তো পুরোহিতগিরি, তার আবার কত বাহানা! কেন, শ্বশুরের মতো বিড়বিড় করে মন্ত্র বলা যাবে না?”

ঠিকই তো! বাবার বিড়বিড়ানি শুনে ওটা সংস্কৃত না উর্দু তা কেউ বুঝতে পেরেছে! ভাবল প্রহ্লাদ।

“শোনো, তুমি যেমন সংস্কৃত জানো না, তোমার যজমানরাও তেমনই জানে না। ও কি খুব সোজা ভাষা না কি! ও ভাষা যদি সোজাই হত, আমি সাত কেলাসে ফেল মেরেছিলাম কেন?” আবার ঝাঁঝিয়ে ওঠে প্রহ্লাদের বৌ। এ কথাটিও মনে ধরল প্রহ্লাদের। বৌ বলে চলল, “শোনো, যে জিনিস মানুষ যত কম বোঝে তার দাম তত বেশি। এই যে মসজিদে আজান হয়, আরবি না কী যেন ভাষায়, এখানকার ক’জন বোঝে? আমাদের সংস্কৃতও হল তেমনই, লোকে বুঝবে কম কিন্তু ভক্তি করবে বেশি।” না থেমে প্রহ্লাদের বৌ বলে চলে, “এত লোক যে দেখতে পাও, কেউ সংস্কৃত বলে? অথচ দেখো, লেখাপড়া জানুক আর না জানুক, ফটর ফটর ইংরেজি বলা চাই!”

ঠিকই! বৌয়ের এ কথাটিও অকাট্য মনে হল প্রহ্লাদের।

সবশেষে বৌ মারল একটি মোক্ষম পাঞ্চ, “বলি তোমার যজমানেরা কি বামুনপাড়ার মুখার্জি, ব্যানার্জি? না ঘোষ, বোস, মিত্তির? সব তো ওই পুবপাড়ার হাড়ি, বাগদি, নট্ট... ওদের মধ্যে কে কবে সংস্কৃতের স জানে?”

ব্যস! সব দ্বিধা-দ্বন্দ্ব একেবারে কেটে গেল প্রহ্লাদের। গাণ্ডিবকে হাতিয়ার করে কৃষ্ণের কথায় কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে নেমেছিল অর্জুন, পরানগঞ্জের প্রহ্লাদ বৌয়ের কথায় পৈতে অবলম্বন করে নেমে পড়ল জীবনের রণাঙ্গনে।

যজমানি-ব্যবসা প্রহ্লাদের থেমে যাওয়া সংসারচক্রটিকে যেটুকুই হোক ঠেলা-গোঁজা দিল। ফলে মন্দের মধ্যেও যেটুকু ভাল, তেমনই চলতে লাগল জীবন। কিন্তু বাদ সাধল অতি উৎসাহী হাবলু।

হাবলু পুবপাড়ার বারোয়ারি মনসা পুজো কমিটির সেক্রেটারি। বেশ দাদা গোছের লোক। ওর খেয়াল চেপেছিল ঠাকুরমশাইয়ের মন্ত্র দূরদূরান্তে ছড়িয়ে দেবে। গত বৎসর পেছনপাড়ার নদোর পুজোতে মাইক দিয়ে বিপিনপুরুত মন্ত্র পড়েছিল। পুরোহিতের সেই মন্ত্র নিয়ে পাড়া জুড়ে আলোচনা। এ বার ওদের সঙ্গে পাল্লা দিতে হবে তো! বাড়ি বয়ে এসে হাবলু বলেছিল, “ঠাকুরমশাই, মাইকের সামনে বিড়বিড় করে মন্ত্র বোলো না, বিপিনবামুনের মতো গলা ছেড়ে মন্ত্র বোলো। সামনে জোরদার মাইক দিচ্ছি, তুমিও তেড়েফুঁড়ে মন্ত্র বলে পেছনপাড়াকে দেখিয়ে দাও।”

ম্যানেজ দিতে চেষ্টা করেছিল প্রহ্লাদ, “আহা হাবলু মন্ত্র কি আর লোককে শোনানোর জিনিস! এ হল অন্তরের ভক্তি।”

এ কথার জবাবে বিরক্ত হাবলুর মুখ থেকে কথার বদলে ভকভক করে দিশি স্পিরিটের গন্ধ বেরিয়ে আসায় আর কথা বাড়ায়নি প্রহ্লাদ। হাবলুর স্পিরিটের সামনে এক রকম পিছু হটেই ঘাড় কাত করে সম্মতি জানিয়েছিল।

মাইকের সামনে দাঁড়াতে হবে ভেবে প্রহ্লাদ যখন ভাবনার চোরাবালিতে হাবুডুবু, তখনই কুরুক্ষেত্রের শ্রীকৃষ্ণ হয়ে আবির্ভূত হল ওর বৌ, ঝাঁঝালো গলায় বলল, “বলি ছোটবেলা থেকে রেডিয়োতে কি মহালয়া শোনা হয়নি? ক’দিন তো সময় আছে, ছেলের মোবাইল থেকে শুনে শুনে ঝালিয়ে নিয়ে চালিয়ে দিয়ো। কে ধরতে যাবে কিসের মন্ত্র?”

গুরুপ্রণাম আর চণ্ডীস্তোত্রের সঙ্গে মুখের হাসি মিশিয়ে মনসা পুজোয় অমায়িক ভাবে মাইক সামলে দিল প্রহ্লাদ। মাইক ঠাকুরমশাইয়ের মন্ত্রে মুখরিত হওয়ায় হাবলু যারপরনাই খুশি। খুশির চোটে নাকি নেশার ঝোঁকে ঠিক বোঝা গেল না, বাড়তি শ’খানেক টাকা দক্ষিণা পেল প্রহ্লাদ।

তবে কে যেন বলেছিল এত ভাল, ভাল নয়! তা সে কথা যে এত তাড়াতাড়ি এমন অক্ষরে অক্ষরে ফলে যাবে, ভাবেনি প্রহ্লাদ। আকণ্ঠ দিশি গিলে কেষ্টার ভরা চায়ের দোকানে হাবলু হামলে পড়েছিল প্রহ্লাদের উপরে, “কী ঠাকুরমশাই! কী সব আলফাল মন্ত্র পড়েছ সে দিন, অ্যাঁ!”

সব সময় চেঁচিয়ে কথা বলা হাবলুর এক দোষ। আচমকা হামলার মুখে পড়ে হকচকিয়ে গিয়েও সামলে নিতে চেষ্টা করে প্রহ্লাদ, “কী যা তা বলছ হাবলু! আমি নিশিকান্ত চক্কোত্তির ছেলে, কমলাকান্ত চক্কোত্তির নাতি, আমি সামান্য মনসাপুজোয় ভুল মন্ত্র বলব? এও কী সম্ভব!” বলতে বলতে হাবলুর ঘাড়ে হাত রেখে ওকে আড়ালে নিয়ে যেতে চেষ্টা করে প্রহ্লাদ। মনে মনে ভাবছে এ সব ফালতু ঝঞ্ঝাটের ভয়েই মাইকে মন্ত্র বলতে চায়নি ও।

“লোকের কথায় কান দিতে আছে, কত লোক কত কী বলবে! ও ব্যাটা বিপিন কতটুকু সংস্কৃত জানে? সংস্কৃতে ফেল করেই না স্কুল থেকে পালিয়েছিল ও।” বলে প্রহ্লাদ।

“তুমি বিপিনঠাকুরকে এর মধ্যে টানলে কেন? আমি কি বলেছি বিপিনঠাকুর এ সব বলেছে?” চেঁচিয়ে ওঠে হাবলু।

“বিপিন বলেনি! ওঃ। তা হলে কোন ব্যাটা বলে আমি ভুল বলেছি?” গলায় জোর আসে প্রহ্লাদের।

হাবলু গোঁজ মুখে বলে, “কানাই রবিদাসের ছেলে বলেছে।”

“কে, কানাই রবিদাসের ছেলে?” প্রায় গর্জে ওঠে প্রহ্লাদ, “বটে! কী দিনকালটাই পড়েছে রে হাবলা! শালা মুচির ব্যাটা ধরবে কি না ব্রাহ্মণের মন্ত্রে ভুল!” গলার জোর আরও বাড়িয়ে প্রহ্লাদ বলে, “বলি, মুচির ব্যাটা সংস্কৃতের কতটুকু জানে? ওর চোদ্দো পুরুষ জুতো সেলাই করে কূল পায়নি, আর ও কি না দু’পাতা পড়ে সংস্কৃত শিখে ফেলেছে,অ্যাঁ!”

“দু’পাতা নয় ঠাকুরমশাই, কী সব পি এচডি-ফি এচডি করেছে শুনলাম। ও বেনারস থেকে পড়ে এল না!” গার্জেনসুলভ ভঙ্গিতে বলে হাবলু। বেশ বোঝা যায়, ছেলেটিকে নিয়ে মাতাল হাবলুরও বেশ গর্ব আছে।

প্রহ্লাদেরও মনে পড়েছে, কানাইয়ের ব্যাটা ওরই বড় ছেলের বয়সি। অনেক দূর পড়াশোনা করে এখন নাকি ও কলেজে চাকরি পাবে। নিজের ছেলের সঙ্গে তুলনা করে একটা লম্বা দীর্ঘশ্বাস পড়ে প্রহ্লাদের। ওর বড় ছেলে এখন বিড়ি থেকে প্রমোশন নিয়েছে গাঁজায়। নিরুপায় প্রহ্লাদ মনে মনে ভাবে, ‘সে যুগে সংস্কৃত পড়ার জন্য মুচির ব্যাটা জুতোপেটা খেত, আর যুগে ও ধরে বামুনের ভুল! সবই পাল্টে যাওয়া সময়ের মহিমা!’

“সত্যি ঠাকুরমশাই! মানসম্মান ডুবিয়ে ছাড়লেন, পেছনপাড়ার নদোর সামনে মুখ দেখানোর আর জো থাকল না!” বিরক্তিতে ভরে যায় হাবলুর মুখ।

“আরে এই ঠাকুরমশাই নতুন পুরুত কি না, ভুলচুক হতেই পারে।” চায়ের দোকান থেকে গা-জ্বালানো টিপ্পনি কাটল কেষ্টা।

গা-পিত্তি জ্বলে গেল প্রহ্লাদের, সে ঝোঁকের মাথায় চিৎকার করে বলল, “ওই মুচির ব্যাটা যদি আমার ভুল প্রমাণ করতে পারে, আমি আর এ পাড়ায় পুজোই করব না, কিন্তু প্রমাণ করতে না পারলে ওই মুচির ব্যাটাকে মন্দিরেই খড়মপেটা করব।”

আর দাঁড়াল না প্রহ্লাদ, হনহন করে বাড়ির পথ ধরল। পেছন থেকে শুনতে পেল চায়ের দোকানের আড্ডায় হাসির শব্দ। হাসির শব্দ ছাপিয়ে শোনা গেল কেষ্টার গলা, হয়তো টিটকিরি দিচ্ছে।

গতকালের ভাল যে এত তাড়াতাড়ি খারাপে বদলে যাবে, ভাবতে পারেনি প্রহ্লাদ। একরাশ দুশ্চিন্তা নিয়ে বাড়ি ঢুকেই পড়ল বৌয়ের সামনে। সব শুনে বেশ কিছু ক্ষণ নিচু গলায় শলাপরামর্শ চলল দু’জনের। এক বার শোনা গেল প্রহ্লাদের গলা, “আমি আগেই জানতাম সংস্কৃত নিয়ে আমার কপালে এমন বিপদ লেখা আছে।”

বৌ ধমকে উঠে বলল, “যদি নিজের আর আমাদের ভাল চাও তো, এত ক্ষণ যা বললাম মুখ বুজে সেটা করো।”

গভীর রাতে কানাই রবিদাসের বাড়ির দরজায় টোকা পড়ল, কারণবারির ঘুম কানাইয়ের, সহজে ভাঙার কথা নয়, ভাঙেওনি। দরজা খুলেছে ওর ছেলে অভয়। ঝিরঝির বৃষ্টি চলছে, ছাতা মাথায় লোকটিকে প্রথমে চিনতে পারেনি ও। পরিচয় জানতে চেয়েই বুঝতে পেরেছে কে এসেছে! এত রাতে প্রহ্লাদ ঠাকুরমশাই! ভেতরে ঢুকতে বলবে কি না, বুঝতে পারে না অভয়। ওকে এক রকম ঠেলেই ভেতরে ঢুকে পড়ে প্রহ্লাদ। সব ঘর অন্ধকার, একটিতেই আলো জ্বলছে, সেটাই অভয়ের ঘর। রাত জেগে লেখাপড়া করা অভয়ের অভ্যেস। ওর ঘরেই ঢুকে পড়ে প্রহ্লাদ, পেছন পেছন আসে অভয়। ঘরময় ছড়ানো বইপত্র। সে সব সরিয়ে হাত দিয়ে বিছানা ঝেড়ে প্রহ্লাদের বসার ব্যবস্থা করে। কিন্তু প্রহ্লাদ বসে না, হঠাৎ অভয়ের হাত জড়িয়ে ধরে বলে, “বাবা, তুমি সংস্কৃতে এত পণ্ডিত আর এই কাকাকে একটু সংস্কৃত শেখাবে না? সংস্কৃতে ভুল হলে পুজোআচ্চা করব কী করে বলো তো! জানোই তো কারখানা বন্ধ! রোজগার বলতে তো...”

বলতে বলতে চোখ থেকে জল গড়িয়ে আসে প্রহ্লাদের।

অন্য বিষয়গুলি:

Gurumantra Short story
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy