Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
ধারাবাহিক উপন্যাস পর্ব ২১
Novel Series

হাওয়ার আড়ালে

যথাসময়ে আলপনা এল, কুটনো কুটে দিয়ে চলে গেল। চন্দন এক বার এসে বাজারের থলে নামিয়ে দিয়ে চলে গেল। কস্তুরী বসে বসে দেখছে সবটা।

ছবি: পিয়ালী বালা

ছবি: পিয়ালী বালা

অজিতেশ নাগ
শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৩ ১০:০৯
Share: Save:

পূর্বানুবৃত্তি: রাধিয়ার কথা শুনে বিরক্তির শেষ সীমায় পৌঁছে যায় কস্তুরী। রাধিয়াকে এক রকম তাড়িয়েই দেয় সে। তার মনে হয় আকিঞ্চনকে বদনাম করার কোনও চেষ্টা চলছে। অন্য দিকে জেলায় মাচা শো করতে গিয়ে স্টেজ থেকে পড়ে যায় মিশুক। তার পায়ে চোট লাগে। সে কথা ফোন করে কস্তুরীকে জানাতেই কস্তুরী উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে। সেই রাতেই কস্তুরী বুঝতে পারে, আকিঞ্চন কিন্তু অন্য দিনের মতো নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারছে না। পর দিন খুব ভোরে ডোরবেল বাজতেই অবাক হয় কস্তুরী। বারান্দা থেকে দেখতে পায় বাড়িতে পুলিশ এসেছে। ইনস্পেক্টর ঘোষাল জানালেন, রাধিয়া শ্রীবাস্তব জোড়াবাগান থানায় লিখিয়ে এসেছেন যে, আকিঞ্চন রায় তাকে মারধর করেছেন।

আকিঞ্চন কাঁধ ঝাঁকাল, “পেটি কেস। আমি অনেক হ্যান্ডেল করেছি। ঘোষাল জানে। তা হলে? থানায় যেতে হবে?”

“জাস্ট কিছু ফর্মালিটি। ব্যস। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে আপনি বাড়িতে।”

কস্তুরী কফির কাপগুলো তুলে নিয়ে কিচেনে ঢুকে গেল। যখন বেরিয়ে এল, তখন ড্রয়িংরুম ফাঁকা। শুধু ফ্যানটা ঘুরছে একা।

যথাসময়ে আলপনা এল, কুটনো কুটে দিয়ে চলে গেল। চন্দন এক বার এসে বাজারের থলে নামিয়ে দিয়ে চলে গেল। কস্তুরী বসে বসে দেখছে সবটা। মেহুলি বাইরে এল ন’টা নাগাদ একদম রেডি হয়ে। কিছু খাবে কি না প্রশ্ন করার আগেই সিঁড়ি দিয়ে তরতর করে নেমে চলে গেল। কস্তুরী স্নান করে পুজো সেরে নিল। আজ ঠিক করেই রেখেছিল অফিসে যাবে না। অদ্রিজা আর বিভাস দত্তকে হোয়াটসঅ্যাপ করে দিয়েছে। সব কিছুই চলছে নিয়মমাফিক, কিন্তু বড় অস্থির-অস্থির লাগছে কস্তুরীর। কী যেন একটা নেই, কী যেন একটা বাকি থেকে যাচ্ছে।

তার কি মনখারাপ? যদি হয় তবে কার জন্য? মেহুলির এই ভাবে সরে থাকার জন্য? আর কিছু না হোক, সকালে তো এক বার ‘গুড মর্নিং মাম্মা’ বলতে পারে, আগে যেমন বলত। মেয়েটা আজকাল বাইরে কোথায় যে থাকে কে জানে। বাড়িতে যত ক্ষণ থাকে দরজা এঁটে বন্ধ। শুধু ডিনারের সময় শ্রীমুখখানি দেখা যায়। তাও বিরক্তিতে ভরা। মাথা নিচু করে খেয়ে চলে যায়। আকিঞ্চন দু’-একটা প্রশ্ন ছুড়ে দেয়। কোনওটার উত্তর আসে, কোনওটার উত্তরে নিশ্চুপ। ‘আর ওকে নিয়ে কিছু ভাবব না’ ভেবেও নিজের মনকে প্রবোধ দিতে পারে না কস্তুরী। না কি সে আকিঞ্চনের জন্য উদ্বিগ্ন? আকিঞ্চনের সঙ্গে সত্যি শারীরিক সম্পর্ক আছে ওই মেয়েছেলেটার?

কস্তুরী মাথা ঝাড়া দিয়ে উঠে পড়ল। সকালের টিফিন সেরে এক কাপ ফাইন দার্জিলিং চায়ে চুমুক দিতেই সে বুঝতে পারল, চিন্তাটা আসলে তিতিকে নিয়ে হচ্ছে। পায়ের চোটটা কি সিরিয়াস কিছু? অত উঁচু থেকে পড়ে গেলে, যতই দাঁত দেখাক, চোট নিশ্চয়ই গুরুতর কিছু। সাতপাঁচ ভেবে ফোনটা করেই ফেলল মিশুককে। এক জন ধরলেন, যিনি মিশুক নন।

“হ্যালো।”

“মিশুক আছে?”

“আজ তো কলটাইম নেই। তবু…”

“আমি কস্তুরী। কস্তুরী রায়।”

“কস্তুরী? কাইন্ডলি লিঙ্কটা বলবেন? আসলে মিশুক ঘুমোচ্ছে। এখন ওকে ডাকা যাবে না। যদি কোনও দরকার থাকে...”

“ওকে। ওকে। জাগানোর দরকার নেই। ওর পায়ের ব্যথাটা কেমন?”

“আপনি জানলেন কী করে?”

এত কৈফিয়ত দিতে ভাল লাগছিল না কস্তুরীর। কস্তুরী বলল, “ও জেগে উঠলে বলে দেবেন বিবি ফোন করেছিল।”

“বিবি! আগে বলবেন তো। আপনার কথা বহু বার শুনেছি মিশুর মুখে। ও মা! দেখো কী কাণ্ড! কিছু মনে করবেন না ভাই। আপনার তিতি এখন সত্যি সত্যি ঘুমোচ্ছে। জেগে উঠলে...”

“ওর ব্যথাটা?”

“আছে। রাতে বলল সকালে উঠে ডাক্তার সোমকে দেখাবে। এখনও ঘুমোচ্ছে। অবশ্য রাতে চুন হলুদ গরম করে লাগিয়ে দিয়েছি। পেনকিলার স্প্রেও করা হয়েছে। দেখি যদি না উঠতে পারে তা হলে ওর বাবাকে বলে...”

“যদি কিছু মনে না করেন আপনাদের ঠিকানাটা বলবেন? আমি এক বার তিতিকে দেখতে চাই।”

“আসবেন? আসুন। ঠিকানাটা লিখে নিন।”

তার পর ভদ্রমহিলা কাকে যেন ডাকলেন। গলার আওয়াজে কস্তুরী বুঝল এটি একটি অল্পবয়স্ক মেয়ে। মনে হল তিতির ছোট বোন মিহিরা।

বড় জোর মিনিট কুড়ি। হাতে লেখা কাগজটা সম্বল করে বেরিয়ে পড়ল পাটুলির উদ্দেশে। ঠিক করল ফেরার সময় ল্যান্ডলাইনের জন্য অ্যাপ্লিকেশন ফর্মটা কালেক্ট করে নেবে।

তখন বেলা প্রায় এগারোটা। থানায় বসে আছে আকিঞ্চন। সকাল থেকে কিছুই পেটে পড়েনি। পেট চোঁ-চোঁ করছে। তিনি পায়চারি করছিলেন। ঘোষাল বসতে বলে সেই যে জিপ নিয়ে বেরোল আর ফেরার নাম নেই।

ঘোষাল ফিরল কাঁটায় কাঁটায় সাড়ে এগারোটায়। ভিতরে ঢুকেই মাথার টুপি খুলে বলল, “শালা, কী গরম! পুজো আসতে চলল, তবু গরমের কমতি নেই।”

আকিঞ্চন অস্থির গলায় বলল, “গরমের কথা পরে ভেবো ঘোষাল। আমার কেসটা...”

ঘোষাল বিমর্ষ ভাবে বলল, “আপনার আর বাড়ি ফেরা হল না মিস্টার রায়। সাধে কি বেরিয়েছিলাম? ভাবলাম আপনাকে ফের বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে বাড়ি গিয়ে লুঙ্গি খুলে ঘুমোব। ফের ফেঁসে গেলাম। কী কপাল করে পুলিশের চাকরি নিয়েছিলাম। লাইফ হেল। শালা! পুলিশের লোকদের বিয়ে করাই উচিত নয়। এ দিকে এই নিয়ে চার বার বৌ ফোন করেছে বাড়ি থেকে। আজই দিন বুঝে নারাঙ্গাবাদ থেকে শালাবাবু আসছেন। সস্ত্রীক। বাজারে না গেলেই নয়। আবার...”

“ভ্যানতারা মারছ কেন?”

“ভ্যানতারা নয় রায়বাবু। রাধিয়া শ্রীবাস্তব হ্যাজ় কমিটেড সুইসাইড।”

হৃৎপিণ্ড লাফিয়ে উঠল আকিঞ্চনের, “কী!”

“ঠিকই শুনেছেন। জোড়াবাগান থানা থেকে তলব আসতেই তো তখন গেছিলাম। গিয়ে যা দেখলাম, বুঝলাম আপনার শনির দশা শুরু হয়েছে। লালবাজার থেকে ইনস্ট্রাকশন এসেছে। আপনি নিজে অ্যাডভোকেট। কতটা জল গড়াবে আপনাকে বোঝাতে হবে না নিশ্চয়ই!”

আকিঞ্চন চুপ করে গেল। তাকে আর বোঝাতে হবে না। কাল আটটা নাগাদ তিনি সত্যি রাধিয়ার বাড়ি গিয়েছিলেন। রাধিয়া দুপুরেই ফোনে জানিয়েছিল সে জেনে গেছে আকিঞ্চন আর আদিনাথের মধ্যে আঁতাঁতটার ব্যাপারে। তাই এ বার সে চুপ করে না থেকে পুলিশের কাছে যাবে। এমনকি দরকারে আকিঞ্চনের বাড়িতেও যাবে। সবাই জানুক, সবাই চিনুক আকিঞ্চন রায়কে। সামনাসামনি দেখা হলে সেই একই কথা বলেছিল রাধিয়া। সে জানিয়েছিল সে ইতিমধ্যে যোধপুর পার্কে গিয়ে মিসেস রায়কে সব জানিয়ে এসেছে। এর পর থানায় যাবে। বোকাসোকা মেয়েছেলেটা এত দূর ভেবেছে ভাবতেই মটকা গরম হয়ে গিয়েছিল আকিঞ্চনের। তবে রাধিয়া নিশ্চয়ই তার বাড়ি আসেনি। একটা বোকাগোছের মেয়ের এতটা দুঃসাহস হবে না যে তার বাড়ি অবধি ধাওয়া করবে। ওটা নির্ঘাত ফাঁকা আওয়াজ। তেমন হলে কস্তুরী তাকে ছেড়ে কথা বলত না। কোন স্ত্রীই বা স্বামীর স্বরূপ জানলে চুপ করে থাকে?

তার পর দু’-একটা কথা কাটাকাটি হওয়ার পর আর মাথার ঠিক রাখতে পারেনি আকিঞ্চন। হাত চালিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু রাধিয়া নিজে যেচে থানায় যাবে এটা মাথায় আসেনি তার তখন। ভুল হয়েছিল। এখন আকিঞ্চনের হাত কামড়াতে ইচ্ছে হল। যে দু’জন মানুষকে সে রাধিয়ার বাড়ির সামনে পাহারায় রেখেছিল, তারা দেখেছে আকিঞ্চনকে ঢুকতে রাধিয়ার বাড়ি। এখন তারাই আই উইটনেস হয়ে দাঁড়িয়ে যাবে। শালা, একেই বলে বাঁশ কেন ঝাড়ে...

ঘোষাল নিজের বিপুল বপুখানা চেয়ারে এলিয়ে দিয়ে বললেন, “কোল্ড ড্রিংক্স চলবে?”

“পেটে কিছু পড়েনি তো ড্রিংক্স!”

ঘোষাল গম্ভীরমুখে এক জনকে ডেকে ডিম-টোস্ট আর চায়ের অর্ডার দিয়ে বললেন, “এ বার কী করবেন মিস্টার রায়?”

“একটা ফোন করব।”

“সে আপনি করুন, কিন্তু বাড়ি ফেরার কথা চিন্তা করবেন না। আর শুধু ফিজ়িক্যাল অ্যাসল্ট হলে সোমবার ঠিক বেল পেয়ে যেতেন, বাট ইউ নো, সুইসাইড কেস।”

আকিঞ্চন ঘোষালের টেবিলে রাখা ল্যান্ডলাইনে ধরল জনার্দনকে। তাকে প্রয়োজনীয় কিছু ইনস্ট্রাকশন দিয়ে ফোন ছেড়ে দিল। খানিক মাথা ঝুঁকিয়ে বসে ভাবল। তার পর বলল, “কোনও সুইসাইড নোট?”

“পাওয়া গেছে।”

“কী লেখা তাতে? কী লেখা?”

“অত ব্যস্ত হবেন না। সব জানা যাবে। ওটা জোড়াবাগান থানার জিম্মায় আছে।”

আকিঞ্চন বুঝল, ঘোষাল ভাঙতে চাইছে না। ঘোষাল একটা সিগারেট ধরিয়ে চিৎকার করলেন, তবে কার উদ্দেশে বোঝা গেল না, “চা আনতে কি দার্জিলিং চলে গেল না কি নিতাই? হারামজাদাকে লাথি মেরে নিয়ে আয় তো।”

এত চিন্তাতেও হাসি পেল আকিঞ্চনের। সবই পুলিশি স্ট্রাটেজি। ডিম-টোস্টের গল্পটা ফালতু। সে বলল, “চা-টা খেয়েই লক-আপে ঢুকছি। তোমার আপত্তি নেই তো ঘোষাল?”

ঘোষাল কোনও উত্তর না দিয়ে বেজার মুখে সিগারেট টানতে লাগল।

মিহিরা শুধু ঠিকানাই বলেনি, রোড ডিরেকশনও দিয়ে দিয়েছিল। ফলে অ্যাপ-ক্যাব নিয়ে পাটুলি ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সামনে নেমে বাড়ি খুঁজে পেতে কস্তুরীকে বেগ পেতে হল না। তবে বাড়িতে ঢুকে অবাক হওয়ার একটা সুযোগ হল কস্তুরীর। তার ধারণা ছিল অভিনেত্রীর বাড়ি মানেই আলিশান কিছু একটা হবে। দেওয়ালে দেওয়ালে প্রমাণ সাইজ়ের সব ফোটোগ্রাফ টাঙানো থাকবে। ঘরে ঘরে এসি। একটা ফিনফিনে নাইটড্রেস পরে তিতি এসে বলবে, “তুমি এসেছ বিবি?”

তার পরই পোর্সেলিনের কাপে ফাইন দার্জিলিং টি। সঙ্গে কুকি। মানে সিরিয়াল-টিরিয়ালে যেমন দেখায় আর কী!

কোথায় কী! কস্তুরী বাড়ির নম্বর মিলিয়ে যে ঠিকানায় এসে দাঁড়াল, প্রথমেই মনে হল, এই বাড়িতে থাকে তিতি! এ তো ছোটখাটো একতলা বাড়ি। সামনে চিলতে বারান্দা। তাতে আটপৌরে বাড়িঘরের মতো শায়া, পায়জামা ঝোলানো! বাইরের গেটের উপরে নেমপ্লেটটা পড়ে আরও সন্দিহান হল। কালোর উপরে সাদা রঙে লেখা, ‘অম্লান রায় চৌধুরী’। অথচ নামের নীচে লেখা ঠিকানা আর কস্তুরীর হাতে ধরে রাখা কাগজটার বয়ানের মধ্যে বিন্দুমাত্র ফারাক নেই! কী হল?

দু’বার ইতস্তত করে কস্তুরী বেল বাজানোয় যে ভদ্রমহিলা বেরিয়ে এলেন আঁচল সামলাতে সামলাতে, তাকে দেখেই চমকে গেল ও। এ তো হুবহু তিতির মুখ বসানো। কস্তুরী মিষ্টি হেসে বলল, “আমি কস্তুরী। কস্তুরী রায়।”

ভদ্রমহিলা দ্রুত ভিতরে চলে গেলেন এবং চার সেকেন্ডের মধ্যে বাইরে এসে তালা খুলতে খুলতে বললেন, “আসুন, আসুন।”

ভিতরে ঢুকে আরও চমক! কোথায় দেওয়ালে দেওয়ালে প্রমাণ সাইজ়ের ফোটোগ্রাফ আর কোথায় এসি! চারটে দেওয়ালে নানা পেন্সিলের কারিকুরি। কস্তুরীর চোখ অনুসরণ করে ভদ্রমহিলা বললেন, “এ সব ঝিনুকের কাজ। পাশের বাড়িতে একটা কুট্টি মেয়ে আছে। ভারী মিষ্টি। ওর যত আঁকিবুকি সব আমাদের ঘরে এসে। এ দিকে বাড়িওয়ালা দেখলে রাগ করবে। আপনি বসুন না। আমি ডালটা নামিয়ে দিয়ে আসছি।”

তিতি ভাড়াবাড়িতে থাকে! এত দিন সে কী কী সব ভেবে এসেছে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের ব্যাপারে। অথচ তিতির ঝাঁ-চকচকে পোশাক-আশাক দেখলে এ রকম মনে হওয়ার উপায়ই নেই। সত্যি, ট্রুথ ইজ স্ট্রেঞ্জার দ্যান ফিকশন। কস্তুরী তাকিয়ে দেখল ঘরটি খুবই ছোট। এই সাইজ়ের একটা স্টোর-রুম আছে কস্তুরীদের। ঘরের চার দিকে ডাঁই করা মালপত্রে ঘরটা আরও ছোট দেখাচ্ছে। সে ঘাড় ঘুড়িয়ে দেখল একটা দেওয়ালের একটা মাত্র ফোটো তিতির। তবে এটা ‘রাঙামাটির মেয়ে’ নয়। তার আগের কোনও সিরিয়ালের। তখন তিতির চুলটা স্ট্রেট ছিল। এখন কার্লিং করে নিয়েছে। কিন্তু তিতি কোথায়?

ভাবতে ভাবতেই ভদ্রমহিলা ঘরে ঢুকলেন হাতে দু’কাপ চা নিয়ে। সঙ্গে চারটে বিস্কুট। কাপ প্লেট নামিয়ে বললেন, “আমি এই সময়ে আর এক বার চা খাই। ভালই হল। চা খেতে খেতে গল্প করি?”

“তিতি? মানে মিশুক কি বাড়িতে আছে?”

“আছে তো। ওই পা নিয়ে আর যাবে কোথায়? সকালে এক বার উঠেছিল। ডাক্তারবাবু এসেছিলেন। ফের শুল। এইমাত্র আবার উঠেছে। বাথরুমে গেছে। ছোটটা কোচিংয়ে গেছে। আর উনি বাইরে। আর আমার মা তো বিছানা ছেড়ে উঠতে পারেন না।”

“ওহ! মানে মিশুকের ঠাকুমা?”

ভদ্রমহিলা অম্লান হাসলেন, “নাঃ, আমার মা। আমার স্বামীর বাবা-মা কেউ নেই। আমার শুধু মা আছে। দেশের বাড়িতে ভাইয়েরা থাকে। মাকে আমার কাছে এনে রেখেছি। বছর তিনেক আগে গ্রামের বাড়িতে কুয়োতলায় পা পিছলে কোমর ভাঙল, আর উঠতে পারেন না সেই থেকে। শুয়ে শুয়ে বেডসোর হয়ে গেছে। আমাকেই দেখেশুনে রাখতে হয় আর কী।”

ক্রমশ

অন্য বিষয়গুলি:

Novel Series rabibasariyo
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy